• কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে শহরের তিন জায়গায় তিনটি খুনের ঘটনা, চাঞ্চল্য
    বর্তমান | ২৫ এপ্রিল ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: গত ২৪ ঘণ্টায় শহরের তিন প্রান্তে খুন হলেন তিনজন। তাঁদের মধ্যে একজন আবার মহিলা। জোড়াসাঁকো ও ভাঙড়ে খুনের ঘটনা ঘটেছে বুধবার গভীর রাতে। তৃতীয় ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার দুপুরে কসবায়। সবকটি ঘটনাতেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে অভিযুক্তদের।

    পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিংয়ের বাসিন্দা রীনা মণ্ডল (৩৫) স্বামী ও সন্তান নিয়ে কসবার রথতলা এলাকায় ভাড়া থাকতেন। রীনাদেবী কসবা এলাকায় পরিচারিকার কাজ করতেন। স্বামী জনার্দন রিকশ চালায়। স্থানীয় লোকজন পুলিসকে জানিয়েছেন, প্রায়ই অশান্তি হতো তাঁদের মধ্যে। স্বামীর সন্দেহ, স্ত্রীর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িত। মাঝে রীনাদেবী সন্তানকে নিয়ে বাপের বাড়িতে চলে গিয়েছিলেন। আর পাঁচটা দিনের বুধবার রীনা কসবার আর এন চ্যাটার্জি রোডে একটি আবাসনে যান পরিচারিকার কাজ করতে। তার আগে সকালেই একপ্রস্থ কথা কাটাকাটি হয় দম্পতির। ওই আবাসনে সাইকেল রাখত জনার্দন। দুপুরে সাইকেল নিতে আসে সে। সেই সময় রীনা ওই আবাসন থেকে বেরতে গেলে ফের ঝামেলা শুরু করে স্বামী। তর্কাতর্কি চলাকালীন আচমকা জনার্দন হাতে থাকা স্ক্রু ড্রাইভার দিয়ে স্ত্রীর গলা ও শরীরে ক্রমাগত আঘাত করে। চিৎকার শুনে স্থানীয়রা ছুটে এসে জনার্দনকে ধরে ফেলেন। রীনাকে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। কসবা থানায় খবর গেলে পুলিস আসে। হাসপাতালে মৃত্যু হয় রীনার। অভিযুক্ত জনার্দনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু করেছে পুলিস। উদ্ধার হয়েছে খুনে ব্যবহৃত অস্ত্রটি। জোড়াসাঁকো এলাকায় বুধবার রাত ২টো নাগাদ খুন হন ফয়সাল ফাহিম (১৯)। অভিযোগ, তাঁর গলায় মদের বোতল ভেঙে ঢুকিয়ে খুন করা হয়। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, ফাহিম ওইদিন রাত ৮টা নাগাদ বাড়ি থেকে বেরিয়ে বালক দত্ত লেনে যান। সেখানে গভীর রাত পর্যন্ত নেশা করেন। পাশেই মদ্যপান করছিল প্রতিবেশী মহম্মদ নাভেদ ও ছোট্টু। ফাহিমের বাবা জানিয়েছেন, তারা ছেলের কাছে মদ চায়। প্রথমে দিলেও পরে ফাহিম তাদের আর মদ দেয়নি। এ নিয়ে ছেলের সঙ্গে নাভেদ ও ছোট্টুর ঝামেলা হয়। ফাহিমকে তারা বেড়ধক মারধর করে। এরপর মদের বোতল ভেঙে ছেলের গলায় ঢুকিয়ে দেয় নাভেদ। ফাহিমের সঙ্গীরাই তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যান। গলা থেকে রক্তক্ষরণের কারণেই তাঁর মৃত্যু হয়। ফাহিমের পরিবার থানায় অভিযোগ জানালে খুনের কেস রুজু করে গ্রেপ্তার করা হয় নাভেদকে। ছোট্টু পলাতক। খুনে ব্যবহৃত বোতলটি উদ্ধার হয়েছে। ভাঙড়ে বাবাকে খুন করল ছেলে। আঠাশ বছরের আব্দুল রশিদ কোনও কাজ করত না। এই নিয়ে তার বাবা তাকে বেশ কয়েকবার বকাবকি করেছিলেন। বুধবার রাতেও ছেলেকে কাজের খোঁজ করতে বলেন বাবা। এ নিয়ে বাবাকে পাল্টা কথা শোনায় ছেলে আব্দুল। সেই সময় হঠাৎ কোদালের বাট দিয়ে বাবা আবেদ আলি মল্লিকের মাথায় আঘাত করে সে। রক্তাক্ত অবস্থায় ঘরেই লুটিয়ে পড়েন আবেদ আলি (৮০)। পরিবারের লোকজন তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করলে ভোরে সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর। ছেলেকে গ্রেপ্তার করেছে ভাঙড় থানা।

    অন্যদিকে, জোড়াসাঁকো এলাকায় ২০ এপ্রিল একজনকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। তাঁর মাথায় আঘাতের চিহ্ন ছিল। মৃতের নাম মহম্মদ  নাসিম (৩০)। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে বলা হয়েছে, তাঁকে খুন করা হয়েছে। এই ঘটনায় অভিযুক্ত শাহনাওয়াজ ইসলামকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিস।
  • Link to this news (বর্তমান)