• ‘ধর্মের নামে এই হিংসা মেনে নেওয়া যায় না’, কলকাতায় সংসার করাচির জাওয়ারিয়ার
    বর্তমান | ২৫ এপ্রিল ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: বছর খানেক আগে ধুমধাম করে পার্ক সার্কাসের শামীর খানের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল পাকিস্তানের করাচির জাওয়ারিয়া খানমের। সে ঘটনায় তখন শহরজুড়ে হইহই হয়েছিল। বিয়ের বছর ঘুরতে পহেলগাঁওতে ঘটে গেল মর্মান্তিক জঙ্গি হানা। তারপর ভারত সরকার জানাল, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পাক নাগরিকদের দেশ ছাড়তে হবে। তবে সে নির্দেশ নিয়ে চিন্তিত নয় পার্ক সার্কাসের পরিবার। তবে তাঁরা চিন্তিত দু’দেশের পরিস্থিতি নিয়ে। শামীরের বাবা কামাল খান বলেন, ‘সন্ত্রাসবাদীদের ধর্ম হয় না। মানুষ মারা গিয়েছেন। যারা মারল, আমি জানি না এর ফলে তাদের কী লাভ হল।’

    পাকিস্তানের নাগরিকদের দেশ ছাড়ার নির্দেশ আসার পর কি চিন্তায় তাঁরা? শামীরের বাবা বলেন, ‘ওঁদের বিয়ের প্রায় দেড় বছর হয়েছে। এর মধ্যে আমার পুত্রবধূ ওই দেশে যায়নি। এখনও যাওয়ার কোনও পরিকল্পনা নেই।’ পার্ক সার্কাসের ওই পরিবারের সাফ বক্তব্য, ‘মানুষ মারা গিয়েছে। এখানে ধর্ম খোঁজার কোনও প্রয়োজন নেই।’ কামাল সাহেব বলেন, ‘সাধারণ পর্যটক ঘুরতে গিয়েছিল। ওঁরা হিন্দু, মুসলিম, খ্রিস্টান তা দেখার দরকারই নেই। মানুষ মারা গিয়েছে। পাকিস্তানি মারা গিয়েছে না ভারতীয়, তা দেখার দরকার নেই। এটাই আমার ছেলে-পুত্রবধূর কথা।’ তিনি জঙ্গিদের প্রসঙ্গে বলেন, ‘ওরা এসব করে কী পাবে সেটা বুঝতে পারছি না। আমার মনে হয়, তরুণদের ব্রেন ওয়াশ করে ওরা পাঠিয়ে দেয়। এভাবেই চলতে থাকে। আমিও ভাবি, আমার দুই ছেলে আছে। ওঁদেরকেও কেউ যদি এসব বলা শুরু করে দেয়!’পাকিস্তানে আত্মীয়দের সঙ্গে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ রয়েছে এই পরিবারের। ‘ছেলের বিয়ের আগেও আমাদের অনেক আত্মীয় ওখানে ছিল। এখনও আছে। আমার পুত্রবধূ প্রায়শই ফোন করে ওঁর মায়ের সঙ্গে কথা বলে। ভারত পাকিস্তান নিয়ে আমাদের পরিবারে কথা হয় না ঠিকই কিন্তু আমরা খেলা হলে একসঙ্গে দেখি। রসিকতা করি। কিন্তু কখনওই খারাপ কথাবার্তা বলি না’-বক্তব্য কামালের। বছর দেড়েক আগে এই বিয়ে নিয়ে শহরবাসীর উত্সাহ কম ছিল না। পাকিস্তানের কন্যা কলকাতার বউ হবে বলে এই পরিবার ছিল চর্চায়। ওয়াঘা বর্ডার পার করে জাওয়ারিয়া এসেছিলেন এই দেশে। সেই সীমান্ত আজ বন্ধ হলেও, কলকাতায় বেঁচে রয়েছে জাওয়ারিয়া-শামীরের ভালোবাসায়।
  • Link to this news (বর্তমান)