• ধনী করদাতাদের বকেয়া ৩৫০০ কোটি!
    বর্তমান | ২৫ এপ্রিল ২০২৫
  • অর্ক দে, কলকাতা: কলকাতা পুরসভার বকেয়া সম্পত্তি করের পরিমাণ কত? শুনলে চোখ কপালে ওঠে। পুরসভা সূত্রে খবর, বছরের পর বছর ধরে শহরের ধনী নাগরিকরা যে পরিমাণ কর ফাঁকি দিয়েছেন তার পরিমাণ সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকারও বেশি। 

    পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ৫০ লক্ষ থেকে এক কোটি টাকার মধ্যে কর বকেয়া পড়ে রয়েছে, এমন  সম্পত্তি করদাতার (অ্যাসেসি) সংখ্যা ৭৯৬। মূল করের টাকার পরিমাণ (প্রিন্সিপাল অ্যামাউন্ট) ২৪৪ কোটি টাকা। তার সঙ্গে সুদ এবং পেনাল্টি মিলিয়ে তা হয়েছে ৫৫৮ কোটি। পাশাপাশি এক কোটি টাকারও বেশি বকেয়া করদাতার সংখ্যা ৭২৮। সবমিলিয়ে প্রিন্সিপাল অ্যামাউন্ট এক হাজার ১৭৮ কোটি টাকা। আসল, সুদ এবং পেনাল্টি মিলিয়ে যার পরিমাণ দাঁড়াচ্ছে দু’হাজার ৯৪৬ কোটি। অর্থাৎ এক হাজার ৫২৪ করদাতার কাছ থেকে পুরসভার বকেয়া তিন হাজার ৫০৪ কোটি টাকা। পুরকর্তাদের বক্তব্য, সম্ভবত এই টাকার অধিকাংশ উদ্ধার সহজ নয়। কারণ বছরের পর বছর ধরে সেগুলি নানা জটিলতায় আটকে বাকি পড়ে রয়েছে। তবুও প্রত্যেকটি এরিয়া ইউনিটকে বলা হয়েছে টিম তৈরি করে কর আদায়ের কাজে ঝাঁপাতে। 

    পুরসভার এক শীর্ষ কর্তা বলেন, ‘গত বছর এরকম কর খেলাপিদের চাপ দিয়ে ভালো পরিমাণ টাকা উদ্ধার হয়েছিল।’ তাঁর ব্যাখ্যা, নিম্নবিত্তরা নিয়মিত কর দেন। কিন্তু ধনীরা বছরের পর বছর ধরে কর ফাঁকি দেন। পাশাপাশি নানারকম আইনি জটিলতা তৈরি হয়। এই অংশকে চিহ্নিত করে অভিযানে জোর দিতে বলেছে পুরসভা। সে কাজে প্রথমে নোটিস দিয়ে বোঝানো হবে। তারপর প্রয়োজনে কড়া প্রশাসনিক বা আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে। ক্রমাগত চাপ থাকলে বকেয়া টাকা কোষাগারে আসবে। ১০০ শতাংশ সফল হওয়ার টার্গেট নিলে অন্তত আদায়ের লক্ষ্যের কাছাকাছি পৌঁছনো সম্ভব। তা হলে বড় অ্যাচিভমেন্ট হবে।

    প্রসঙ্গত কলকাতা পুরসভার খাতায় নথিভুক্ত সম্পত্তি করদাতার সংখ্যা সাড়ে নয় লক্ষেরও বেশি। ২০২৪-’২৫ অর্থবর্ষে সম্পত্তি কর বাবদ এক হাজার ২৫৮ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে। কিন্তু নাগরিক পরিষেবা থেকে শুরু করে শহরের উন্নয়নের কাজ চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আরও রাজস্ব আদায়ের প্রয়োজন। সম্প্রতি আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকে কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম বার্ষিক সম্পত্তি কর আদায়ের পরিমাণ ধীরে ধীরে দু’হাজার কোটি টাকায় নিয়ে যাওয়ার টার্গেট নিতে বলেছেন। কিন্তু সহজে সে কাজ সম্ভব হবে না। তার জন্য বকেয়া পড়ে থাকা বিপুল পরিমাণ কর কোষাগারে তুলতে হবে। এই বিপুল পরিমাণ বকেয়া টাকা আদায়ে তোড়জোড় চলছে। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন অঞ্চলের (এরিয়া ইউনিট) জন্য তৈরি হয়েছে টিম। আধিকারিকরা জানান, প্রতিবছরই বকেয়া কর আদায়ের কাজ চলে। এবার সে কাজ আরও গতি পেয়েছে।
  • Link to this news (বর্তমান)