পহেলগাঁওয়ের কথা ভাবলেই আঁতকে উঠছেন বাড়ির পথেও পিছু ছাড়েনি আতঙ্ক
বর্তমান | ২৫ এপ্রিল ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি ও সংবাদদাতা: জঙ্গি হামলার ঠিক আগেই কেউ সেখান থেকে বেরিয়ে এসেছেন। কারও আবার নানা কারণে পহেলগাঁও পৌঁছতে দেরি হওয়ায় হামলার মুখে পড়তে হয়নি। উপত্যকা থেকে ফিরে এখন ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানাচ্ছেন বহু পর্যটক। তবে সঙ্গ ছাড়েনি আতঙ্ক।
যেমন বারুইপুরের কুন্তল মজুমদার। বুধবার স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে কাশ্মীর থেকে বাড়ি ফিরেছেন। চোখে মুখে আতঙ্কের ছাপ স্পষ্ট। জঙ্গি হামলার কিছুক্ষণ আগে পর্যন্ত সপরিবারে পহেলগাঁওয়ের বৈসরণে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন। শ্রীনগর ফিরে এসে হামলার কথা জানতে পারেন। তিনি বলেন, আর কিছুক্ষণ থাকলে হয়তো প্রাণ নিয়ে ফিরতে পারতাম না। একটি ট্যুর অপারেটরের সঙ্গে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিং, বারুইপুর, ডায়মন্ডহারবার থেকে ৪২ জন পর্যটক কাশ্মীর বেড়াতে গিয়েছিলেন। মঙ্গলবার দুপুরে তাঁদের পহেলগাঁও যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু রাস্তায় দেরি হওয়ায় সেখানে যাওয়া হয়নি। পর্যটকদের কথায়, প্রথমে খারাপ লাগলেও পরে বুঝলাম, ওটাই আমাদের এক প্রকার বাঁচিয়ে দিয়েছে। সাগরের একদল পর্যটকও পহেলগাঁও যাচ্ছিল। হোটেলে খেতে গিয়ে দেরি হয় তাদের। ঠিক তখনই খবর আসে পহেলগাঁওতে গুলি চলেছে। খাওয়া দাওয়া ছেড়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন সবাই। দ্বিতীয় কিছু না ভেবে গাড়ি নিয়ে সোজা শ্রীনগরের হোটেলে ফিরে আসেন। দলের সদস্য হিমাদ্রী মান্না বলেন, খুব আতঙ্কে সময় কাটছে। শুক্রবার রাতে প্লেনের টিকিট কাটা রয়েছে। বাড়ি ফেরার অপেক্ষায় আছি সবাই।
১৮ তারিখ বনগাঁ থেকে কাশ্মীর ঘুরতে গিয়েছিলেন ৪১ জনের একটি দল। ২৬ তারিখ পহেলগাঁও যাওয়ার কথা ছিল। হামলার পর দলের অনেকেই বাড়ি ফিরে এসেছেন। বাকিরা পথ বদলে সিমলা রওনা হয়েছেন।
১১ এপ্রিল অশোকনগর থেকে চারটি পরিবারের ১২ জন কাশ্মীরে রওনা দেন। বৈসরণ ভ্যালি দেখে পহেলগাঁও হয়ে ২০ এপ্রিল রাতে জম্মু থেকে দিল্লি আসার কথা ছিল তাঁদের। হরপা বাণের কারণে তাঁদের পুরো প্ল্যান বাতিল হয়। তার উপর জঙ্গি হামলা আতঙ্ক ধরায় তাঁদের। প্ল্যানের কাঁটছাট করে শ্রীনগরের একটি হোটেলে ওঠেন তাঁরা। পহেলগাঁও থেকে শ্রীনগরে এখন বন্ধের চেহারা। আর অশোকনগরের ১২ জন পর্যটকও হোটেলবন্দি।
এদিকে, জঙ্গি হামলার প্রতিবাদে নিজের অমরনাথ যাত্রা বাতিল করলেন বনগাঁর যুবক শিবনাথ দাস। এর আগে ১৪ বার অমরনাথ যাত্রা করেছেন তিনি। গত বছরও গিয়েছিলেন শিব দর্শনে। ৯ জুলাই অমরনাথ যাওয়ার কথা ছিল বনগাঁ পুরসভার চড়কতলার বাসিন্দা শিবনাথের। সব কিছু প্রস্তুতি চূড়ান্ত হলেও অমরনাথ যাত্রা বাতিল করেছেন তাঁর সহযাত্রীরাও। শিবনাথ বলেন, ‘রক্ত মাখা পথ দিয়ে ভগবানের কাছে পৌঁছনো যায় না।’