• আঁটপুরে সিদ্ধেশ্বরী দেবীর পুজো ঘিরে শেষ পর্যায়ের প্রস্তুতি, ব্যস্ত গ্রামবাসীরা
    বর্তমান | ২৫ এপ্রিল ২০২৫
  • সংবাদদাতা, তারকেশ্বর: আগামী ২৯ এপ্রিল মঙ্গলবার জাঙ্গিপাড়ার আঁটপুরে মা সিদ্ধেশ্বরী কালীর পুজো। পরের দিন বুধবার অক্ষয় তৃতীয়ার পুণ্যদিনে বাৎসরিক পুজো ও সংস্কারের পর মন্দির সংলগ্ন প্রাচীন শিব মন্দিরের দ্বারোদ্ঘাটন হবে। স্থানীয় বাসিন্দাদের বিশ্বাস, দেবী সকলের মনস্কামনা পূর্ণ করেন। পুজো উপলক্ষ্যে এই দিনে বহু মানুষের সমাগম হয় এখানে। এখন চলছে উৎসবের শেষ পর্যায়ের প্রস্তুতি।

    শ্রীরামকৃষ্ণদেব, মা সারদা, স্বামী বিবেকানন্দ, প্রেমানন্দ মহারাজের স্মৃতিধন্য গ্ৰাম আঁটপুর। প্রায় ৩০০ বছরের প্রাচীন এই সিদ্ধেশ্বরী মন্দির। স্থানীয় বাসিন্দারা এই দেবীকে সিদ্ধেশ্বরী অথবা শ্বেতকালী বলেও ডাকেন। কারণ এই কালী মূর্তির গায়ের রং সাদা।

    কথিত আছে, আঁটপুরের সিদ্ধেশ্বরী মা ও পার্শ্ববর্তী গ্রাম রাজবলহাটের রাজবল্লভী দেবী দুই বোন। বড় বোন রাজবল্লভী ও ছোট বোন সিদ্ধেশ্বরী। দুই দেবীরই গায়ের রং সাদা। সিদ্ধেশ্বর অর্থাৎ মহাদেব থেকে সিদ্ধেশ্বরী দেবীর নাম এসেছে। গড় ভবানীপুরের রাজা সদানন্দ প্রতিষ্ঠা করেন রাজবলহাটের রাজবল্লভী দেবীকে। গড় ভবানীপুরের রানি তারা দেবীকে মা সিদ্ধেশ্বরী স্বপ্নাদেশ দেন, আঁটপুরে তাঁকে প্রতিষ্ঠা করতে হবে। স্বপ্নের মাধ্যমেই তিনি জানিয়েছিলেন তাঁর রূপের কথা। পূর্ণিমার চাঁদের মতো যেন তাঁর রূপ হয়। রানির কথা অনুযায়ী মাতৃমন্দির প্রতিষ্ঠা হয়‌। তৈরি হয় টেরাকোটার মন্দির। ওই মন্দির সংলগ্ন বিশাল জমি দেবীর নামে দান করেন রানি। এখানেই রয়েছে দু’টি দিঘি। আগে এই মূর্তি ছিল অষ্টধাতুর।

    ১৪০০ বঙ্গাব্দে এই প্রাচীন মন্দিরটি ভগ্নপ্রায় অবস্থায় চলে যায়। চুরি যায় অষ্টধাতুর মূর্তি। গ্রামবাসীরাই মন্দিরটি পুনর্নির্মাণ করেন।১৪২০ সালের ৮ জ্যৈষ্ঠ দেবীর নতুন পাথরের মূর্তি স্থাপন করা হয়। চতুর্ভুজা শ্বেতকালী। ডান হাতে অভয়, বাঁ হাতে খড়্গ ও অন্য হাতে কাটা মুণ্ড। রাজবল্লভী মায়ের মতোই আমিশ ভোগ দেওয়া হয়। মাছ সহ হরেক সব্জি একসঙ্গে করে তৈরি হয় ভোগ। স্থানীয় ভাষায় এই ভোগকে বলা হয় ঘাঁটা। রাজবল্লভী দেবীকেও একই রকম ভোগ দেওয়া হয়।

    গ্রামবাসীরা মন্দিরের দু’পাশে দু’টি শিবমন্দির নির্মাণ করেছিলেন। বর্তমানে সেই দু’টি মন্দির পুনর্নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে। আগামী ১৬ বৈশাখ মন্দির দু’টি পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হবে। নাটমন্দিরের পাশেই আছে ঝাঁপান উৎসবের মঞ্চ। এখানে চৈত্র মাসে শিবভক্তরা উৎসব পালন করেন। এই উপলক্ষ্যে এখানে বিরাট মেলা বসে।   নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)