• বেতনের তালিকায় গরমিল, নীরব এসএসসি দপ্তর
    এই সময় | ২৫ এপ্রিল ২০২৫
  • এই সময়: আইনজীবীদের অনুমতি পাওয়া যায়নি বলে ‘যোগ্য–অযোগ্য’র তালিকা প্রকাশ করেনি স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)। তবে কারা বেতন পাবেন, সে তালিকা পাঠানো হয়েছে স্কুলে স্কুলে। ২০১৬–র বিজ্ঞাপনের ভিত্তিতে স্কুলশিক্ষা কমিশনারেট হয়ে ২৪টি শিক্ষা জেলার স্কুলে বিদ্যালয় পরিদর্শকরা (ডিআই–মাধ্যমিক) ১৫ হাজার ৪০৩ জন ‘যোগ্য’ টিচারের লিস্ট পাঠিয়েছেন। দেখা যাচ্ছে, বেশ কিছু গরমিল আছে তালিকায়। কয়েকশো শিক্ষক–শিক্ষিকার নাম যায়নি কোনও স্কুলেই।

    পশ্চিম বর্ধমানের ডিআই অফিস থেকে রানিগঞ্জের বাসন্তী দেবী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে যে তালিকা পৌঁছেছে, তাতে এমন দুই শিক্ষিকার নাম আছে, যাঁরা কোনওদিনই ওই স্কুলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। এঁরা হলেন প্রীতি কুমারী ও মৌমিতা কুমারী।

    প্রধান শিক্ষিকা শ্রুতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘২০১৬ থেকে ওঁদের নামে কোনও নিয়োগপত্র স্কুলে আসেনি।’ সুপ্রিম কোর্টের রায়ে বিদ্যালয়ের ১২ জন শিক্ষিকার চাকরি যায়। স্কুলে পাঠানো তালিকায় ওই ১২ জনের পাশাপাশিই রয়েছে প্রীতি ও মৌমিতার নাম। ডিআই সৌমেন লাহা বলেন, ‘শিক্ষা দপ্তর থেকে যে তালিকা এসেছে, স্কুলগুলিকে তা–ই পাঠিয়ে ভেরিফিকেশন রিপোর্ট দিতে বলি। সব রিপোর্ট পেলে সমস্যার কারণ বলতে পারব।’ আজ, শুক্রবার রিপোর্ট পাওয়ার কথা তাঁদের।

    পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশপুর লক্ষ্মীনারায়ণ উচ্চ বিদ্যালয়েও এমন ঘটনা ঘটেছে। স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শেখ জামির আলি বলেন, ‘আমাদের স্কুলের তিনজন টিচার ও একজন শিক্ষাকর্মী চাকরি হারান। বৃহস্পতিবার ওই তিনজন স্কুলে আসেন। কিন্তু জীবন বিজ্ঞানের শিক্ষক হিসেবে সুপ্রিয়কুমার গিরি নামে একজন রয়েছেন তালিকায়। উনি আমাদের স্কুলের নন। স্কুলের তিন টিচারের নথি ডিআই অফিসে জমা দেবো।’

    এমনিতেই চাকরি পাওয়ার আড়াই–তিন বছর পরে ভালো সংখ্যক শিক্ষক–শিক্ষিকাই ‘উৎসশ্রী’ পোর্টালের মাধ্যমে অন্যত্র বদলি হন। তাঁদের অনেকেরই নাম চলে গিয়েছে সেই স্কুলে, যেখান থেকে তাঁরা বদলি হয়েছিলেন। তাঁরাও পড়েছেন বিপাকে। আন্দোলনরত ‘যোগ্য’ শিক্ষক–শিক্ষিকা অধিকার মঞ্চের কনভেনর চিন্ময় মণ্ডলের নাম কোনও স্কুলেই নেই। তিনি আপস বদলিতে কলকাতা থেকে ব্যারাকপুর শিক্ষা জেলার স্কুলে গিয়েছিলেন।

    চিন্ময় বলেন, ‘কোনও স্কুলেই নাম নেই, এমন ২৫০–৩০০ জন যোগ্য টিচারের তালিকা তৈরি করে এসএসসি–র চেয়ারম্যানকে পাঠিয়েছি। তিনি বিষয়টি দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।’ আবার, প্রথমে একটি স্কুলে নবম–দশমের জন্য নির্বাচিত এক শিক্ষক পরে অন্যত্র একাদশ–দ্বাদশের স্কেলে অন্য স্কুলে মনোনীত হয়েছিলেন। তাঁর নাম পাঠানো হয়েছে দুই বিদ্যালয়েই।

    গরমিলের বিষয়ে জানতে এসএসসি–র চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদারকে ফোন করলেও কথা বলা যায়নি। প্রতিক্রিয়া মেলেনি স্কুলশিক্ষা কমিশনার অরূপ সেনগুপ্তরও।

  • Link to this news (এই সময়)