এই সময়: স্কুলে তথাকথিত ‘যোগ্য’ শিক্ষাকর্মীদের অনশন ও অবস্থান বৃহস্পতিবার তৃতীয় দিনে পড়ল। সল্টলেকে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের নিবেদিতা ভবনের দোতলায় বর্তমানে পাঁচজন গ্রুপ সি এবং ডি কর্মী অনির্দিষ্টকালের অনশন করছেন। বৃহস্পতিবার তাঁদের শারীরিক অবস্থার কিছুটা অবনতি হয়েছে।
ইতিমধ্যে তিনজন অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। আবার বাইরে কয়েকশো চাকরিহারা কর্মী অবস্থান চালিয়ে যাচ্ছেন। এই পরিস্থিতিতে পর্ষদের মাধ্যমিক পরীক্ষার রেজ়াল্ট প্রকাশের কাজও ব্যাহত হচ্ছে বলে দাবি পর্ষদ সূত্রের। যদিও পর্ষদ সচিব সুব্রত ঘোষ বৃহস্পতিবারই বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছেন, ২ মে মাধ্যমিকের ফল প্রকাশিত হবে।
সুব্রত বলেন, ‘এ দিন সকালে অফিসে ঢোকা ও বেরনোর সময়ে আন্দোলনরত শিক্ষাকর্মীদের প্রবল বাধার মুখে পড়েছিলাম। পুলিশ কোনও মতে আমাদের বাইরে বার করেছে। এখন মাধ্যমিকের ফল প্রকাশের দিনও ঘোষণা করা হয়েছে। রোজই অফিসে ৫০–৬০ জন কর্মী ও আধিকারিকের অফিস আসাটা ভীষণ জরুরি। কিন্তু আজও যে ভাবে আন্দোলনরত শিক্ষাকর্মীদের বাধার মুখে আমাদের পড়তে হয়েছে, তাতে শুক্রবার ক’জন অফিসে আসবেন, জানি না।’
চাকরিহারা ‘যোগ্য’ শিক্ষাকর্মীদের তরফে সুজয় সর্দারের অভিযোগ, ‘পর্ষদ আমাদের সঙ্গে দ্বিচারিতা করছে। চাকরিহারা যোগ্য শিক্ষকদের স্কুলে ফেরাতে যতটা উদ্যোগ পর্ষদ সুপ্রিম কোর্টে দেখিয়েছিল, আমাদের ক্ষেত্রে তার ছিটেফোঁটাও ছিল না। আমাদের তিনজন সহকর্মী ইতিমধ্যে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে। আমাদের রক্তেও সুগারের মাত্রা কমছে। তারপরেও পর্ষদ ও স্কুলশিক্ষা দপ্তরের আধিকারিকরা সমস্যা সমাধানে কোনও উদ্যোগ নেননি। তা হলে বিকাশ ভবন ও পর্ষদ বলে দিক, স্কুলে শিক্ষাকর্মীদের প্রয়োজনই নেই!’
যদিও পর্ষদ আধিকারিকদের যুক্তি, সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না মডিফিকেশন অ্যাপ্লিকেশনের শুনানির সময়ে বলে দিয়েছেন, শিক্ষাকর্মীদের তালিকায় দুর্নীতির হার অনেক বেশি। তাই তাঁদের বিষয়ে কোনও আবেদন শুনবেন না। পর্ষদের অফিসের বাইরে অবস্থানরত বিক্রম পোল্লে জানান, ২০১৬ সালে এসএসসি–র গ্রুপ সি এবং ডি পরীক্ষায় বসেছিলেন ১৯ লাখ চাকরিপ্রার্থী।
তার মধ্যে যোগ্যতার সঙ্গে সফল হয়েছিলেন ৩,৪০০ জন। এরপরেও রাজ্য সরকার, এসএসসি এবং পর্ষদ শিক্ষাকর্মীদের বিষয়ে উদাসীন। তাঁর বক্তব্য, ‘ওরা দুর্নীতি করল আর আমরা যোগ্য হওয়া সত্ত্বেও পরিবার–পরিজন নিয়ে এই চড়া রোদে রাস্তায় বসে আছি। আমরা এপ্রিল মাসের বেতনও পাব না।’