এই সময়, রাজনগর: মিড ডে মিলের মেনু তো নয়, যেন বিয়েবাড়ির ভোজ! রোজের খিচুড়ি–ডিম–সয়াবিনের তরকারির বাইরে পড়ুয়াদের পাতে পড়ল পোস্তবড়া, আলুভাজা, সয়াবিনের কাটলেট, দই, চাটনি, মিষ্টি, পাঁপড়, আইসক্রিম, ঠান্ডা পানীয়! স্কুলে স্কুলে কবজি ডুবিয়ে খেল পড়ুয়ারা।
বীরভূমের রাজনগর চক্রের ২১টি স্কুলে মিড ডে মিলের মেনু নিয়ে প্রতিযোগিতার আয়োজন হয়েছিল। ২৪ রকমের পদের আয়োজন করে জয়ী হলো রাজনগরের খাসবাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়।
অ্যাডিশনাল নিউট্রিশন ফান্ডের টাকা ফি বছর দেওয়া হয় স্কুলগুলিকে। এ বার সেই টাকা দেওয়ার আগেই রাজনগর ব্লকের বিডিও ও ব্লক অফিসের মিড ডে মিল সেকশনের আধিকারিকরা একসঙ্গে আলোচনা করে মিড ডে মিল প্রতিযোগিতার প্রস্তাব দেন।
যে সমস্ত স্কুলে ১০০–র বেশি ছাত্রছাত্রী আছে, তারা এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেবে বলে নোটিসে জানানো হয়। সেই মতো শুরু হয় মিড ডে মিলের স্পেশাল মেনু তৈরির প্রতিযোগিতা। রাজনগর চক্রের ২১টি প্রাথমিক স্কুল অংশ নেয় অভিনব এই প্রতিযোগিতায়। ফান্ডের টাকা ছাড়াও শিক্ষক–শিক্ষিকারা নিজেরাও টাকা দিয়েছেন এলাহি আয়োজন করতে। স্কুলে স্কুলে ঘুরে সব ব্যবস্থা খুঁটিয়ে দেখেছেন সরকারি আধিকারিকরা।
খাসবাজার প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক কুদরত আলি খান বলেন, ‘বিডিও স্যরের কাছ থেকে এই প্রতিযোগিতার প্রস্তাব পেয়েছিলাম। তারপর পরিকল্পনা মতো পুষ্টির কথা মাথায় রেখে এবং সেই সঙ্গে স্বাদের কথা ভেবেও এই পদগুলির আয়োজন করি আমরা। দুপুরের খাবারের পাতে ছাত্রছাত্রীরা এই পদগুলি পেয়ে খুশি। আর তাদের খাওয়াতে পেরে আমরাও খুশি। আগামিদিনে প্রতি মাসে অন্তত একদিন এরকম ভিন্ন ধরনের পদের আয়োজন করার পরিকল্পনা আমরা গ্রহণ করব। আশা করি, অভিভাবকদের তরফেও আমরা সাহায্য পাব।’
খুদে পড়ুয়ারা পাতে এত রকমের খাবার পেয়ে ঠিক করতে পারছিল না আগে কোনটা খাবে। কেউ কাটলেট কামড় দেওয়ার পরেই মুখে মিষ্টি পুরে দিল, তো কেউ আবার আলুভাজা আর আইসক্রিম একসঙ্গে খেল। পড়ুয়া স্বপন দাস, মালতী মণ্ডলরা বলে, ‘স্কুলে এসে যেন বিয়েবাড়ির ভোজ খেলাম। খুবই আনন্দ হচ্ছে।’
রাজনগরের ব্লক আধিকারিক শুভাশিস চক্রবর্তী বলেন, ‘ছাত্রছাত্রীদের পুষ্টি বিকাশের লক্ষ্যেই এরকম প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছিল। চাইব, ভবিষ্যতে অন্য স্কুলগুলিও এগিয়ে আসুক।’