কাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ? উদ্দেশ্য কী? গোয়েন্দাদের নজরে কলকাতার ৩০ পাক নাগরিক
প্রতিদিন | ২৫ এপ্রিল ২০২৫
অর্ণব আইচ: কলকাতায় সার্ক ভিসাধারী পাকিস্তানি কতজন, তা নিয়ে এখনও গোয়েন্দারা ধন্দে। কিন্তু ‘এলটি’ ভিসা নিয়ে কলকাতায় অর্ণব আইচ রয়েছেন ৩০ জন পাকিস্তানি। কাশ্মীরে পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার পর এবার কলকাতার এই পাকিস্তানিদের কার্যকলাপের উপর বিশেষ নজরদারি শুরু করেছেন গোয়েন্দারা।
সার্ক ভিসা বা ‘এসভিইএস’ নিয়ে যে পাকিস্তানিরা দেশে রয়েছেন, বুধবারই ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তাঁদের ভারত ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে বিদেশ মন্ত্রক। গোয়েন্দা সূত্রের খবর, সার্ক ভিসা রয়েছে, এমন পাকিস্তানির সন্ধান চলছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কলকাতায় এরকম কোনও পাকিস্তানি রয়েছেন কি না, তা নিয়ে ধন্দে গোয়েন্দারা। কিন্তু ‘লং টার্ম ভিসা’ নিয়ে যে কলকাতায় পাকিস্তানের বাসিন্দারা রয়েছেন, সেই ব্যাপারে নিশ্চিত গোয়েন্দারা। গোয়েন্দাদের সূত্র জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত ‘লং টার্ম ভিসা’ বা ‘এলটিভি’ নিয়ে ৩০ জন পাকিস্তানি রয়েছেন কলকাতায়। তাঁদের মধ্যে একটি বড় অংশই গৃহবধূ। এই পাক-বধূদের মধ্যে কয়েকজন অনেক বছর ধরেই রয়েছেন কলকাতায়। নিয়ম অনুযায়ী, পাকিস্তানের অনেকে কলকাতার বাসিন্দা বিয়ে করে নিয়ে এলে বিবেচনার পর প্রথমে তাঁকে পাঁচ বছরের জন্য ‘এলটিভি’ দেওয়া হয়। এর পর থেকে এক বা দু’বছরের ভিসা দেওয়া হয়। সেই ভিসা ফের পুনর্নবীকরণ করাতে হয়। তার জন্য যেমন সময় অনুযায়ী গোয়েন্দা দপ্তরে গিয়ে ওই পাক নাগরিকদের জানাতে হয়, বা রিপোর্ট করতে হয়, তেমনই গোয়েন্দাদেরও ওই পাক নাগরিকদের ব্যাপারে খোঁজখবর নিতে হয়। সেই বুঝেই তাঁদের ভিসার পুনর্নবীকরণ করার সুপারিশ দেয় কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা দপ্তর।
গোয়েন্দাদের সূত্র জানিয়েছে, পহেলগাঁওয়ের ঘটনার পর থেকে ওই পাক নাগরিকদের কার্যকলাপের উপর অতিরিক্ত নজরদারি করা শুরু হয়েছে। বিশেষ করে খতিয়ে দেখা হচ্ছে, তাঁরা কাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। ওই পাক নাগরিকদের মধ্যে বেশিরভাগই গৃহবধূ। সেই সূত্র ধরে তাঁদের মধ্যে অনেকেই পাকিস্তানের সঙ্গে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ রাখেন। বাপের বাড়ির লোকেদের সঙ্গে তাঁদের যে কথা হয়, সেই ব্যাপারে গোয়েন্দারা নিশ্চিত। কিন্তু এ ছাড়াও ওই পাক বধূদের সূত্র ধরে কলকাতার অন্য কোনও ব্যক্তি পাকিস্তানের অন্য নাগরিকদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন কি না, অথবা রাখলেও তা নেহাতই আত্মীয়তার খাতিরে, না কি এর পিছনে অন্য কোনও উদ্দেশ্য রয়েছে, সেই ব্যাপারে নতুনভাবে গোয়েন্দারা খোঁজখবর নিতে শুরু করেছেন। তাঁরা পাকিস্তানে যাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন, তাঁদের পরিচয়ও থাকছে গোয়েন্দাদের নজরে। জানা গিয়েছে, পহেলগাঁওয়ের ঘটনার পর কোনওদিন থেকেই গোয়েন্দারা কোনও ঝুঁকি নিতে চাইছেন না। প্রয়োজন হলে ওই পাক বধূ ও তাঁদের পরিজনদের সঙ্গে কথাও বলা হবে বলে জানিয়েছেন গোয়েন্দারা।