এসএসসি-র দফতরের সামনে রাস্তার দু’দিকে গার্ডরেল। যার দু’দিক থেকেই স্লোগান উঠেছে, ‘আমরা কারা? যোগ্য যারা।’
বৃহস্পতিবার দিনভর এ ভাবেই আন্দোলনের পারদ চড়ল সেখানে। গার্ডরেলের এক দিকে বসে এসএসসি-র তালিকা অনুযায়ী যোগ্য শিক্ষকেরা। অন্য দিকে, তালিকায় নাম না-থাকা শিক্ষকেরা। দু’পক্ষের স্লোগান ও পাল্টা স্লোগানে কখনও উত্তেজনা তৈরি হল, কখনও বেধে গেল বচসা। সেখানে এ দিনও প্রচুর পুলিশ ছিল।
এ দিন বেলা ১১টা নাগাদ যোগ্যদের তালিকায় যাঁদের নাম নেই, তাঁরা এসএসসি-র দফতরের সামনে রাস্তায় বসে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। তাঁদের প্রশ্ন, কিসের ভিত্তিতে তালিকায় তাঁদের নাম নেই? এই শিক্ষকদের মধ্যে অনেককেই প্রথম থেকে তৃতীয় কাউন্সেলিংয়ের মধ্যে নিয়োগ করেছিল এসএসসি। বিপ্লব বিবর নামে এক শিক্ষক বললেন, ‘‘নাইসার প্রাক্তন কর্মী পঙ্কজ বনসলের কাছ থেকে সিবিআই যে হার্ড ডিস্ক উদ্ধার করেছে, সেটি নিয়ে প্রশ্ন আছে। সিবিআই ওই হার্ড ডিস্কের ফরেন্সিক পরীক্ষা করাতে সেটি হায়দরাবাদে পাঠিয়েছিল। কিন্তু পরীক্ষার চূড়ান্ত রিপোর্ট আসেনি।’’ রীতেশ ঘোষ নামে এক শিক্ষক বলেন, ‘‘আমাদের ওএমআর ‘মিসম্যাচ’ বলা হচ্ছে। কিন্তু এসএসসি-র কাছে কোনও ওএমআর নেই। আমাদের যদি অযোগ্যই বলা হয়, তা হলে অযোগ্য সার্টিফিকেট দিক এসএসসি। সেটি নিয়ে এসএসসি-র কাছে জানতে চাইব, আমাদের কিসের ভিত্তিতে অযোগ্য বলা হচ্ছে?’’ কয়েক জন শিক্ষকের বক্তব্য, অযোগ্য বলায় তাঁদের সামাজিক অসম্মান হচ্ছে।
এসএসসি-র তালিকা অনুযায়ী যোগ্য শিক্ষকেরাও এ দিন আন্দোলনস্থলে জড়ো হয়েছিলেন। ওই শিক্ষকেরা জানান, সেখানে তাঁরাও ধর্নায় বসে থাকবেন। প্রথমে কারা কোথায় বসবেন, তা নিয়ে উত্তেজনা তৈরি হয়। শেষে গার্ডরেলের দু’পাশে দুই দল বসে। এর পরে দিন যত গড়িয়েছে, দু’পক্ষের স্লোগানও তত বেড়েছে। এক পক্ষ যখন স্লোগান দিচ্ছে, অন্য পক্ষ তখন মাইকে গান বাজাতে শুরু করে। যোগ্যদের তালিকায় না-থাকা এক শিক্ষক বলেন, ‘‘ওঁরা যখন তিন দিন ধরে এসএসসি অফিসের সামনে ধর্না দিলেন, তখন আমরা আসিনি। আজ আমরা এখানে ধর্নায় বসেছি, আর ওঁরা নানা ভাবে বাধা দিচ্ছেন।’’
যোগ্য শিক্ষকেরা অনেকেই আজ স্কুলে যান। ছুটির পরে আবার ফিরে আসেন ধর্না মঞ্চে। তাঁদের এক জন বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের রিভিউ পিটিশনে ন্যায় বিচার পাওয়ার আগে পর্যন্ত ধর্না চলবে।’’ ‘যোগ্য শিক্ষক-শিক্ষিকা ঐক্য মঞ্চ’-এর কয়েক জন শিক্ষক জানান, তাঁরা সুপ্রিম কোর্টে জিততে চান।
এ দিকে, তালিকায় না থাকা শিক্ষকদের সংগঠন ‘ইউনাইটেড টিচিং অ্যান্ড নন-টিচিং ফোরাম’-এর শিক্ষকেরা জানান, যত দিন না এসএসসি তাঁদের যোগ্য তালিকায় ঢোকাবে, তত দিন তাঁরা এখানেই থাকবেন। দু’পক্ষই জানিয়েছে, আগামী দিনগুলিতে ওই রাস্তাই
তাদের ঠিকানা।