ইন্টার্নদের রেজিস্ট্রেশন না দেওয়ার সুপারিশ কাউন্সিল সদস্যের
আনন্দবাজার | ২৫ এপ্রিল ২০২৫
আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ঘটনার প্রতিবাদে আন্দোলন সংগঠিত করেছিলেন জুনিয়র চিকিৎসকেরা। তাঁদের মধ্যে যাঁরা ইন্টার্ন, তাঁদের রেজিস্ট্রেশন প্রদানে কড়া মনোভাব নেওয়ার জন্য রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের এক সদস্য সুপারিশ করেছেন বলে অভিযোগ। আন্দোলন ও কর্মবিরতিতে থাকা জুনিয়র চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে কোনও প্রতিহিংসামূলক পদক্ষেপ করা যাবে না, নির্দেশ ছিল সুপ্রিম কোর্টের। তার পরেও কী ভাবে কাউন্সিলের এক সদস্য এমন সুপারিশ করেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
‘ডব্লিউবিএমসি’ (ওয়েস্ট বেঙ্গল মেডিক্যাল কাউন্সিল) নামে একটি ওয়টস্যাপ গ্রুপের স্ক্রিনশট প্রকাশ্যে এসেছে। তাতেই বিতর্ক তৈরি হয়েছে। আর জি কর আন্দোলনের মুখ তথা জুনিয়র ডক্টর্স ফ্রন্টের তরফে অনিকেত মাহাতো বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ থাকার পরেও কাউন্সিলের যদি এমন প্রতিহিংসার ভাবনা থাকে, সেটি ভুল।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘জুনিয়রদের বার্তা দিতে যদি এমন পদক্ষেপ করা হয়, তা হলে যে জুনিয়র চিকিৎসক, পিজিটিরা আন্দোলন করেছিলেন, তাঁরা আবার রাস্তায় নেমে আরও বৃহত্তর আন্দোলনের পথে যাবেন।’’
অভিযোগ, দিন কয়েক আগে কাউন্সিলের সদস্য তাপস চক্রবর্তী ‘ডব্লিউবিএমসি’ গ্রুপে সভাপতি, সহ-সভাপতি এবং অন্যান্য সদস্যদের উদ্দেশ্যে একটি মেসেজ লিখে তাঁদের মতামত জানতে চেয়েছেন। তাপস দাবি করেছেন, গত বছরের ২ মে থেকে চলতি বছরের ১ মে পর্যন্ত সময়কালে যে সমস্ত এমবিবিএস উত্তীর্ণেরা ইন্টার্নশিপ সম্পূর্ণ করছেন, তাঁদের কাউন্সিলের তরফে রেজিস্ট্রেশন দেওয়া ঠিক হবে না। কারণ তাঁরা কেউই প্রশিক্ষণ ঠিক মতো সম্পন্ন করেননি। এমবিবিএসের চূড়ান্ত বর্ষে উত্তীর্ণ হওয়ার পরে এক বছরের ইন্টার্নশিপ করতে হয়। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, ওই এক বছরে রাজ্যে ইন্টার্নের সংখ্যা প্রায় ২৯০০। অভিযোগ, তাপস আরও দাবি করেছেন, কেউ স্বেচ্ছায়, কেউ অনিচ্ছায় আর জি কর আন্দোলনে যুক্ত হয়ে গত অগস্ট এবং সেপ্টেম্বরে কর্মবিরতি পালন করেছেন। এবং ইউনিট ইনচার্জ বা বিভাগীয় প্রধানের থেকে ইন্টার্নশিপ সম্পূর্ণ করার নকল শংসাপত্র জমা করেছেন।
কাউন্সিলের ওই সদস্য আরও দাবি করেছেন, তিনি আইনজীবীর সঙ্গে আলোচনা করেছেন। চিকিৎসা পেশায় যুক্ত নয়, এমন কোনও ব্যক্তিকে দিয়ে সুপ্রিম কোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করানো যেতে পারে। পাশাপাশি, একই রকম ব্যবস্থা সম্প্রতি পাশ করা স্নাতকোত্তর স্তরের চিকিৎসক-পড়ুয়াদের ক্ষেত্রেও করা উচিত বলে দাবি তোলা হয়েছে।
কেন তিনি এমন মত প্রকাশ করলেন? তাপস বলেন, ‘‘কাউন্সিল সম্পর্কে কিছু জানতে হলে সভাপতির সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।’’ যদিও এ বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না বলে দাবি করে রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের সভাপতি, বিধায়ক চিকিৎসক সুদীপ্ত রায়
বলেন, ‘‘খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’ স্বাস্থ্য দফতরের গ্রিভান্স অ্যান্ড রিড্রেসাল কমিটির চেয়ারম্যান চিকিৎসক সৌরভ দত্ত বলেন, ‘‘ওয়টস্যাপের বিষয়টি জানা নেই। তবে বলতে পারি, রাজ্য সরকার সিনিয়র, জুনিয়র চিকিৎসকদের স্বার্থরক্ষা করতে বদ্ধপরিকর। তাই কারও সঙ্গে কোনও অন্যায় হবে না।’’