• বাতিল ভুস্বর্গ ট্যুর, পর্যটকদের ভিড় দার্জিলিং-সিকিম-ডুয়ার্সে
    এই সময় | ২৫ এপ্রিল ২০২৫
  • সব্যসাচী ঘোষ, মালবাজার

    পহেলগাম কাণ্ডের পরে কাশ্মীর ভ্রমণ বাতিল করে অন্য জায়গায় বেড়াতে যাওয়ার সন্ধান ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। জঙ্গি হানার পরে হু–হু করে নামতে শুরু করেছে কাশ্মীরের পর্যটন ব্যবসার গ্রাফ। সেই সঙ্গে হিড়িক পড়েছে বিকল্প ভ্রমণের সন্ধানের।

    আর সেখানেই গরমের ছুটিতে সম্ভাব্য পর্যটন কেন্দ্রের তালিকায় উঠে আসছে, সিকিম, দার্জিলিং, কালিস্পং এবং ডুয়ার্সের বনাঞ্চল–সহ অন্য হিলস্টেশন। চলতি বছর থেকে উত্তরবঙ্গ ও সিকিমের পর্যটন যেখানে ক্রমাগত খারাপ পারফর্ম করছিল। সেখানে আচমকা কাশ্মীরের এমন ঘটনায় ফের উত্তরবঙ্গমুখী হচ্ছেন পর্যটকরা।

    ফলে উত্তরবঙ্গের পর্যটনে বাড়তি চাপ পড়েছে। পর্যটন শিল্পে ‘স্পট এনকোয়ারি’র গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। শেষ ২৪ ঘণ্টায় যার ‘রিচ’ তুমুল ভাবে বেড়েছে। এনজেপি স্টেশন থেকে সিকিমের পেলিং, সিল্ক রুটের আরিটার হয়ে জুলুক–কুপুপ দিয়ে বাবা মন্দির ঘুরে গ্যাংটক হয়ে ফিরে আসার সফরসূচি যেমন অনেকেই বানাতে চাইছেন। তেমনই লোলেগাঁও, লাভা, কাফেরগাঁওয়ের সঙ্গে গরুমারা জাতীয় উদ্যানের জঙ্গল সাফারিকে বেছে নিচ্ছেন অনেকে।

    পাহাড় ও ডুয়ার্স ভ্রমণে যেখানে সাধারণত তিন–চারদিনের ট্যুর প্ল্যান রাখেন পর্যটকরা, সেখানেয কাশ্মীর পরিকল্পনা বাতিল হওয়ায় ৬ থেকে ১০ দিনের বড় ভ্রমণ পরিকল্পনা নিয়ে পর্যটকরা আসতে চাইছেন বলে জানাচ্ছেন উত্তরবঙ্গের পর্যটন ব্যবসায়ীরা।

    কলকাতার এক ট্যুর অপারেটর সংস্থার কর্ণধার শুভজিৎ দিকপতির কথায়, ‘আমাদের একের পর এক কাশ্মীর ভ্রমণ বাতিল হচ্ছে। বদলে পর্যটকরা সিকিম, দার্জিলিং, কালিম্পং ভ্রমণের পরিকল্পনা চাইছেন।’ যেহেতু আগাম টাকা দেওয়া রয়েছে, তাই একেবারে ভ্রমণ বাতিল করার চিন্তাও করতে পারছেন পর্যটকরা। পয়লা মে থেকে রাজ্যজুড়ে সরকারি স্কুলগুলোয় গরমের ছুটি পড়ে যাচ্ছে।

    স্বভাবতই বড়সড় ঘোরার প্ল্যান সেরে ফেলেছিলেন অনেকেই। সেখানে কাশ্মীরের পরিস্থিতিতে তাঁরা উত্তরের পাহাড়কেই বেছে নিচ্ছেন। অ্যাসোসিয়েশন ফর কনজ়ারভেশন অ্যান্ড টুরিজ়মের ক্রস বর্ডার কর্মকর্তা তন্নিষ্ঠা চক্রবর্তী বলেন, ‘কাশ্মীরের ঘটনা অত্যন্ত নিন্দনীয়। তাই কাশ্মীর পরিকল্পনা বাতিল যাঁরা উত্তরবঙ্গের দিকে আসতে চাইছেন তাঁদের যতটা সম্ভব সাহায্য করার চেষ্টা করব।’

    অন্য দিকে, উত্তরবঙ্গে আসার ট্রেনের টিকিট যে ইতিমধ্যেই শেষ হয়ে গিয়েছে, তাই সড়কপথ ছাড়া গতি নেই, সে কথা আগেভাগে জানিয়ে রাখছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা। যদিও কাশ্মীর ভ্রমণে মাথাপিছু ৩০–৩৫ হাজার টাকার বদলে জনপ্রতি ১৫ থেকে ১৮ হাজার টাকাতেই উত্তরের হটস্পটগুলো ভালোভাবে ভ্রমণের সুযোগ পাবেন পর্যটকরা, সেটাও জানিয়ে দিচ্ছেন তাঁরা।

    সিকিমের বেশ কিছু জায়গায় এখনও বরফ রয়েছে। এ ছাড়াও রাজ্যের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ সান্দাকফুকেও সেই লিস্টে যোগ করা যেতে পারে। সেই সঙ্গে মিরিক পশুপতি হয়ে নেপালের দিকে ঘুরে এলে বিদেশ যাত্রারও সাধ পাওয়া যাবে, এ ভাবেই পরিকল্পনা ও বিজ্ঞাপন সাজাচ্ছেন উত্তরবঙ্গের পর্যটন ব্যবসায়ীরা।

  • Link to this news (এই সময়)