এই সময়, মালদা: বৃহন্নলা সেজে বাড়ি বাড়ি গিয়ে বাচ্চার খোঁজ নিচ্ছিলেন এক ব্যক্তি। নিঃসন্তান দম্পতির বাড়িতে গিয়ে মন্ত্রপূত ওষুধ ও তাবিজ মোটা টাকায় বিক্রি করছিলেন ওই নকল বৃহন্নলা বলে অভিযোগ। কিন্তু কথায় বলে, চোরের দশদিন, তো গৃহস্থের একদিন। অবশেষে সেই নকল বৃহন্নলার ছলনা ধরে ফেললেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
ঘটনাচক্রে ওই এলাকায় উপস্থিত ছিলেন আসল বৃহন্নলাদের একটি দল। ক্ষিপ্ত বৃহন্নলারা গ্রামবাসীদের সঙ্গে মিলে চড়-থাপ্পড় মারেন ওই ব্যক্তিকে। খবর পেয়ে ওখানে পৌঁছয় ইংরেজবাজার থানার পুলিশ। অভিযুক্তকে আটক করে নিয়ে যায় পুলিশ। বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে ইংরেজবাজার থানার কোতোয়ালি গ্রাম পঞ্চায়েতের তারাকালি মোড় এলাকায়।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বেশ কিছুদিন ধরেই বৃহন্নলা সেজে এক ব্যক্তি নিঃসন্তান দম্পতিদের সন্তান পাইয়ে দেওয়ার নামে মন্ত্রপুত ওষুধ এবং তাবিজ মোটা টাকার বিনিময় বিক্রি করছিলেন। এ দিন বিকাশ দাস নামে একজনের বাড়িতে নকল ওই বৃহন্নলা ঢুকে পড়েন। পরিবারের সদসদের ভুলিয়ে ১০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন। বিষয়টি বুঝতে পেরে বিকাশের স্ত্রী প্রিয়া চিৎকার করে পাড়া-প্রতিবেশীদের জড়ো করেন।
কিন্তু ততক্ষণে সেখান থেকে চম্পট দেন ওই ব্যক্তি। এরপর তিনি বুড়া ঘোষ নামে আরেক জনের বাড়িতে ঢোকেন। সেই বাড়িতে নিঃসন্তান দম্পতিকে সন্তান পাইয়ে দিতে ১৭ হাজার টাকার বিনিময়ে মন্ত্রপুত তাবিজ গছিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এরই মধ্যে গ্রামবাসীরা খোঁজ করতে করতে ঘোষ পরিবারের বাড়িতে এই নকল বৃহন্নলাকে হাতেনাতে ধরে ফেলেন।
এরপরই গণপ্রহার চলে। তারাকালি মোড় এলাকার বাসিন্দা উৎপল দাস, মাধব মণ্ডল বলেন, ‘কয়েক দিন ধরেই নকল বৃহন্নলার উৎপাত শুরু হয়েছে। বেশ কিছু বাড়িতে নিঃসন্তান দম্পতির সঙ্গে প্রতারণা করে মন্ত্রপুত ওষুধের টোপে মোটা টাকা আদায় করা হচ্ছিল। বিষয়টি নিয়ে এলাকার মানুষদের মধ্যে চর্চা চলছিল। এ দিন অভিযুক্তকে ধরে ফেলা হয়।’
প্রকৃত বৃহন্নলা মিনা কুমারী বলেন, ‘লোকটা আমাদের ইউনিটের নয়। মানুষকে এভাবে ভাঁওতাবাজি দেওয়াটা কোনও ভাবে উচিত নয়। এতে আমাদের কাজে প্রভাব পড়বে। গ্রামবাসীরা খুব ভালো কাজ করেছেন। নকল বৃহন্নলাকে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন।’
ইংরেজবাজার থানার পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে একজনকে আটক করা হয়েছে। বৃহন্নলা সাজে ওই ব্যক্তি প্রতারণা করছিল বলে অভিযোগ। এই ঘটনার পিছনে বড় কোনও চক্র রয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।