পাকিস্তানে বন্দি বিএসএফ জওয়ান, রিষড়ার বাড়িতে তৃণমূল নেতৃত্ব, স্ত্রীর সঙ্গে ফোনে কথা সুকান্তের
প্রতিদিন | ২৫ এপ্রিল ২০২৫
সুমন করাতি, হুগলি: পাকিস্তান সেনার হাতে বন্দি রয়েছেন ভারতের বিএসএফ জওয়ান পূর্নমকুমার সাউ। হুগলির রিষড়ার বাড়িতে ক্রমেই বাড়ছে দুশ্চিন্তা। ছেলের পাকিস্তানে আটকে থাকার দুঃসংবাদ বাড়িতে পৌঁছনোর পর থেকে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন মা ও স্ত্রী। দুশ্চিন্তায় শোকে পাথর জওয়ানের বাবাও। ভারতীয় জওয়ানের আটক হওয়ার ঘটনার খবরে রাজনৈতিক শোরগোলও ছড়িয়েছে। হুগলির তৃণমূল নেতৃত্ব আজ শুক্রবার রিষড়ার বাড়িতে গিয়েছেন। ওই পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাসও দেওয়া হয়েছে। জওয়ানের স্ত্রীর সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।
পাঞ্জাবের ফিরোজপুর সেক্টরে পোস্টিংয়ে রয়েছেন হুগলির রিষড়ার বাসিন্দা বিএসএফ পূর্নমকুমার সাউ। বুধবার বিকেলে ‘ভুল করে’ তিনি সীমান্ত পেরিয়ে পাকিস্তানে ঢুকে পড়েছিলেন। তারপরই তাঁকে আটক করে পাকিস্তানি সেনা। কাশ্মীরের পহেলগাঁওতে জঙ্গি হামলায় ২৬ জন পর্যটক মারা গিয়েছেন। সেই ঘটনায় উত্তাল গোটা দেশ। পালটা প্রত্যাঘাতের বার্তা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তার মধ্যেই ভারতীয় জওয়ানের পাকিস্তানে আটকে পড়ার খবর সামনে আসে। সেই জওয়ানকে নিয়েও উদ্বেগ ছড়িয়েছে। পূর্নমকুমার সাউয়ের পাকিস্তানে আটকে পড়ার খবর আসতেই কান্নায় ভেঙে পড়েছেন তাঁর স্ত্রী রজনী সাউ ও মা দেবন্তি দেবী।
এদিনও বাড়িতে কেঁদে চলেছেন মা ও স্ত্রী। আজ শুক্রবার সকালে হুগলি জেলার তৃণমূল নেতৃত্ব ওই বাড়িতে গিয়েছিলেন। জেলা সভাপতি অরিন্দম গুই, রিষড়া পুরসভার চেয়ারম্যান বিজয়সাগর মিশ্র, হুগলি জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি শুভদীপ মুখোপাধ্যায়রা ওই পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন। রাজ্য সরকার ওই পরিবারের সঙ্গে সবসময় আছে। যে কোনও প্রয়োজনে রাজ্য সরকারকে পাওয়া যাবে। সেই বার্তা দেওয়া হয়েছে। তৃণমূল নেতৃত্ব ওই জওয়ানের বাবার সঙ্গে কথা বলেছেন। জওয়ানের স্ত্রীকে ফোন করেছিলেন সুকান্ত মজুমদার। সবরকমভাবে ওই পরিবারের সদস্যদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। কেন্দ্রীয় সরকার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখছে। সেই কথাও বলা হয়েছে। এদিন কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি শুভঙ্কর সরকারও ওই জওয়ানের বাড়িতে যান। রাহুল গান্ধীর সঙ্গেও ফোনে এই বিষয়ে তাঁর কথা হয়েছে বলেও তিনি জানান।
এদিকে আতঙ্ক, উদ্বেগ কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না ওই পরিবারের। বাবাও ভেঙে পড়েছেন এই পরিস্থিতিতে। অনিচ্ছাসত্ত্বেও কোনওরকমে খাওয়াদাওয়া হয়েছে। প্রতিবেশীরা গতকাল সন্ধের পর থেকে ওই বাড়িতে ভিড় করেছেন। এদিনও প্রতিবেশীরা সেখানে গিয়েছেন। উদ্বেগ তাঁদের মধ্যেও রয়েছে। অবিলম্বে ভারত সরকার অক্ষত অবস্থায় তাঁকে ফিরিয়ে নিয়ে আসুক। সেই কথা বলছে পরিবার। স্ত্রী রজনী সাউ বলছেন, ” স্বামী ১৭ বছর ধরে বিএসএফের চাকরি করছেন। আমি চাই তিনি তাড়াতাড়ি ঘরে ফিরে আসুক।”