অর্ণব দাস, বারাসত: পহেলগাঁওয়ের বৈসারন উপত্যকায় জঙ্গি হামলার বিরোধিতা করে সমাজমাধ্যমে প্রতিবাদমূলক পোস্ট করেছিলেন অশোকনগরের এক তরুণী। তা ‘ধর্মীয় বিদ্বেষমূলক’ বলে দেগে ধর্ষণের হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠল। বৃহস্পতিবার রাতে এই অভিযোগের কথা ফেসবুক লাইভে বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। সেই ভিডিও ভাইরাল হতেই জোর শোরগোল পড়ে গিয়েছে। অশোকনগর থানায় এনিয়ে তরুণী অভিযোগ দায়ের করেছেন। রাতে তদন্তকারী অফিসাররা দফায় দফায় তাঁর বাড়িতে যান। পুলিশের দাবি, তরুণীর ফেসবুক পোস্টটি সাম্প্রদায়িক ছিল। সেই পোস্টের বিরুদ্ধেও অভিযোগ হয়েছে। তবে ধর্ষণের হুমকি নিয়ে যে অভিযোগ দায়ের হয়েছে, তাও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। পরে অবশ্য পুলিশের অনুরোধে পোস্টটি ডিলিট করেন ই তরুণী।
গত ২২ এপ্রিল, ভূস্বর্গের পহেলগাঁওয়ের জঙ্গিদের গুলিতে ঝাঁজরা হয়ে গিয়েছে ২৬ পর্যটক। ঘটনায় স্বভাবতই ক্ষুব্ধ গোটা দেশ। কেন্দ্রের তরফেও এনিয়ে শুরু হয়েছে কূটনৈতিক এবং রাজনৈতিক অভিযান। রাজপথ থেকে সোশাল মিডিয়া, সর্বত্রই উঠেছে প্রতিবাদের ঝড়। অশোকনগরের বাসিন্দা এক তরুণীও বাছাই করে গণহত্যার এই ঘটনার প্রতিবাদে ফেসবুকে কিছু মন্তব্য করেছিল। তাঁর মন্তব্যকে বেশিরভাগ সমর্থন করলেও দু’জন বিরূপ মন্তব্য করেছিলেন। এনিয়ে রীতিমতো বিতর্কের ঝড় ওঠে তরুণীর ফেসবুক প্রোফাইলে। তাতেই ঘটে বিপত্তি।
তরুণীর অভিযোগ, এরপর বৃহস্পতিবার রাতে দুটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে তাঁকে মেসেঞ্জারে গালিগালাজ-সহ বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করার হুমকি দেওয়া হয়। এমনকী এই মন্তব্যও করা হয়, ”সব কিছুতে হিন্দু-মুসলমান জড়িয়ে দেওয়া ছাড়া আর কোনও কাজ নেই…”। তারপরই আতঙ্কে কান্নায় ভেঙে পড়েন তরুণী। কাঁদতে কাঁদতে তরুণী গোটা বিষয়টি জানিয়ে ফেসবুক লাইভ করেন। তা ভাইরাল হতেই এনিয়ে শুক্রবার স্থানীয় বিজেপি নেতা, কর্মীরা তরুণীর বাড়িতে যান। তখন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী তরুণীর সঙ্গে ফোনে কথা বলে আশ্বস্ত করেন।
তরুণীর বক্তব্য, ”যেভাবে বেছে বেছে হিন্দু পর্যটকদের নৃশংসভাবে খুন করেছে, তাতে আমার খুব খারাপ লেগেছে। সেই কারণেই আমি নিজের ফেসবুক থেকে কিছু মন্তব্য করেছি। বহু মানুষ আমার পোস্টের সমর্থন করেছেন। কিন্তু দুটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে পোস্টের বিরোধিতা করে আমাকে খারাপ কথা বলা হয়েছে। সম্ভবত ওগুলো ফেক অ্যাকাউন্ট।” তা সত্ত্বেও ধর্ষণের হুমকির মতো গুরুতর বিষয় নিয়ে আতঙ্ক কাটছে না তাঁর।