নন্দন দত্ত, বীরভূম: দিন আনা দিন খাওয়ার সংসার। পেটের তাগিদে সেজন্য পরিযায়ী শ্রমিকের কাজ করেন সঞ্জয় বাদ্যকর। বীরভূমের মল্লারপুরের বাহিনা মোড়ের বাসিন্দা সেই সঞ্জয়ের দিন ও রাতের ঘুম এখন উড়ে গিয়েছে। কীভাবে টাকা রোজগার করে সংসারে স্বাচ্ছন্দ আনবেন বলে আগে ঘুম হত না। এখন টাকা কোথায় রাখবেন? সেই নিয়েই প্রবল দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। লটারির টিকিট কেটে প্রথম পুরস্কার হিসেবে এক কোটি টাকা পেয়েছেন। আর তারপরেই দুশ্চিন্তা মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েছে। লটারির টিকিট নিয়ে সটান পৌঁছে গিয়েছেন থানায়।
সঞ্জয়ের বাড়ির আর্থিক অবস্থা তেমন ভালো নয়। একপ্রকার বাধ্য হয়েই পরিযায়ী শ্রমিক হয়েছেন তিনি। কর্মসূত্রে এখন তিনি থাকেন চেন্নাইতে। গত ৪০ দিন আগে কাজের জন্য চেন্নাই গিয়েছিলেন তিনি। সেখানেই রাজমিস্ত্রির কাজ করে ছুটি নিয়ে বীরভূমের মল্লারপুরের বাড়িতে ফিরছিলেন তিনি। গতকাল বৃহস্পতিবার দূরপাল্লার ট্রেন থেকে বোলপুর স্টেশনে নেমেছিলেন। এরপর লোকাল ট্রেন ধরার জন্য অপেক্ষা করছিলেন। আর তখনই ৩০ টাকা খরচ করে লটারির টিকিট কিনেছিলেন। এরপর ট্রেন এলে সেটি চেপে তিনি মল্লারপুরে চলে যান। বাড়ি ফিরে ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন পরিবারের সঙ্গে।
পরে লটারি খেলার ফলাফলের তালিকা দেখতেই তাঁর চক্ষুচড়কগাছ হয়। কারণ, প্রথম পুরস্কারের এক কোটি টাকা তাঁর কেনা লটারির টিকিটেই উঠেছে। প্রথমে বিশ্বাস করতে পারছিলেন না তিনি। পরে ভয়ও গেঁথে যায়ন মনের মধ্যে। লটারির টিকিট চুরি, ছিনতাই হওয়ার আশঙ্কাও থাকছে। তারপরই এদিন তিনি সটান পৌঁছে যায় মল্লারপুর থানায়। থানাতেই ওই টিকিট আপাতত গচ্ছিত রাখা হয়েছে বলে খবর।
কিন্তু লটারির পুরস্কারের টাকা দিয়ে কী করবেন তিনি? সব পরিকল্পনা এখনও তিনি করতে পারেননি। পুরস্কারের টাকা হাতে এলে বাড়িঘর ঠিক করবেন। পাশাপাশি কিছু জমিজমাও কিনবেন বলে ঠিক করেছেন। লটারির টাকা তাঁর কপাল খুলে দিয়েছে। সেই কথা মনে করেছেন তিনি। আর তিনি পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে কাজ করবেন না। তেমনই আপাতত মনস্থ করেছেন তিনি।