কাশ্মীরের পহেলগাম হয়ে জম্মু থেকে দিল্লি আসার কথা ছিল অশোকনগরের ১২ জন পর্যটকের। কিন্তু হড়পা বান ও বৈসরন ভ্যালিতে জঙ্গি হানার পর সে সব পরিকল্পনা বাতিল করে হোটেলবন্দি হয়ে থাকতে হয়েছে তাঁদের। এর পরই চরম সমস্যার সম্মুখীন হন ওই পর্যটকরা। তাঁরা কোনও রকমে প্রাণ বাঁচিয়ে বাড়ি ফেরার জন্য গাড়ি থেকে প্লেন সব জায়গারই টিকিট খুঁজতে শুরু করেন। কিন্তু সবেতেই ভাড়া বেশি হওয়ায় তাঁদের বাজেটে ঘাটতি পড়ে। শেষ পর্যন্ত আর কোনও উপায় না পেয়ে অতিরিক্ত টাকা ধার করে তাঁরা কোনও রকমে প্লেনের টিকিট কেটে বাড়ি ফেরেন। ঘুরতে গিয়ে যে এমন পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হবে তা এখনও কল্পনা করতে পারছেন না গুপী মজুমদাররা।
কথা ছিল পহেলগাম হয়ে জম্মু থেকে দিল্লি হয়ে কলকাতায় ফিরবেন। কিন্তু হড়পা বানের কারণে মাঝপথে তাঁদের শ্রীনগরে ফিরতে হয়। এর পর সেখানে একদিন থেকে বাড়ির উদ্দেশে রওনা হবেন বলে তাঁরা ঠিক করেছিলেন। কিন্তু এর মাঝেই বৈসরন ভ্যালিতে জঙ্গি হামলার পর আতঙ্কে চারদিন হোটেলে তাঁরা গৃহবন্দি হয়ে থাকেন। ভূস্বর্গের সৌন্দর্যের টানে গিয়ে হড়পা বান আর জঙ্গি হামলার মধ্যে পড়ে চরম সমস্যার সম্মুখীন হন ১২ জন পর্যটক। তাঁদের দলে ছিলেন পাঁচজন পুরুষ এবং সাতজন মহিলা। জঙ্গি হামলার ঠিক একদিন আগেই তাঁরা বৈসরন ভ্যালিতে গিয়েছিলেন।
তবে সে সময়ে হোটেলে আটকে পড়ায় বাজেটে ঘাটতি দেখা দেয় তাঁদের। কোনও উপায় না পেয়ে খরচ বাঁচানোর জন্য বাধ্য হয়ে তাঁরা দোকান থেকে আলু, ডিম কিনে হোটেলে রান্না করে খান। পর্যটকদের এমন দুরবস্থা দেখে হোটেল কর্তৃপক্ষ তাঁদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন। এর পরই ভূস্বর্গ থেকে প্রাণ বাঁচিয়ে ফেরার জন্য নিরুপায় হয়ে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে প্লেনের টিকিট কাটেন তাঁরা। অশোকনগরের সেই বাসিন্দারা জানিয়েছেন, ১২ জনের জন্য তাঁরা ২ লাখ ১৮ হাজার টাকা খরচ করে প্লেনের টিকিট কেটে শ্রীনগর থেকে কলকাতায় পৌঁছেছেন।
ঘুরতে গিয়ে এমন পরিস্থিতির মুখে পড়তে হবে তা কখনও কল্পনাতেও ভাবেননি গুপী মজুমদার, পল্লবী দাস ও শম্পা মজুমদাররা। অতিরিক্ত টাকা শোধ করতে বছর কেটে যাবে বলে তাঁরা জানিয়েছেন। তবে ভালোভাবে বাড়িতে ফিরে এলেও এখনও আতঙ্কে রয়েছেন অশোকনগরের বাসিন্দারা।