নিজস্ব প্রতিনিধি, মালদহ: তৃণমূল নেতা বাবলা সরকার খুনের চার মাস পর গ্রেপ্তার হল অন্যতম চক্রী কৃষ্ণ রজক ওরফে রোহন। বিহার পুলিসের সহযোগিতায় বৃহস্পতিবার রোহনকে গ্রেপ্তার করেছে মালদহ পুলিস। গোপন সূত্রে তার গতিবিধির খবর মিলতেই কিছুদিন তক্কেতক্কে থাকার পর বিহারের কাটিহার জেলার আজমনগর থেকে কৃষ্ণকে ধরা হয়েছে বলে খবর পুলিস সূত্রে। শুক্রবার দুপুরে ধৃতকে আদালতে পেশ করে হেফাজতে নেওয়ার আবেদন করে পুলিস। বিচারক সাতদিনের পুলিস হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন সরকারি আইনজীবী দেবজ্যোতি পাল।
মালদহের পুলিস সুপার প্রদীপ কুমার যাদব বলেন,বাবলা সরকার হত্যার ঘটনায় কৃষ্ণ রজক ওরফে রোহনকে কাটিহার থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এনিয়ে খুনের মামলায় মোট ন’জনকে গ্রেপ্তার করা হল।
ইংলিশবাজারের নিমাসরাইতে গত ২ জানুয়ারি নিজের কারখানার কাছেই দুষ্কৃতীদের গুলিতে খুন হন বাবলা। প্রকাশ্য দিবালোকে জনপ্রিয় ও দাপুটে তৃণমূল কংগ্রেস নেতাকে খুনের ঘটনায় রাজ্যজুড়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছিল। তদন্তকারীদের রিপোর্ট অনুযায়ী, খুনের অন্যতম চক্রী ছিল এই কৃষ্ণ। ঘটনার দিনই বিহারে পালানোর চেষ্টা করার সময় কয়েকজন দুষ্কৃতীকে ধরে ফেলে পুলিস। তদন্ত যত এগিয়েছে, বাবলা খুনের ঘটনায় গ্রেপ্তারির সংখ্যাও বেড়েছে। গত চার মাসে বিভিন্ন সময়ে এই ঘটনায় মোট আটজনকে পুলিস গ্রেপ্তার করে। যার মধ্যে অন্যতম নাম তৃণমূল কংগ্রেসের তৎকালীন ইংলিশবাজার শহর সভাপতি নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারি ওরফে নন্দু এবং মালদহের এক সময়কার কুখ্যাত দুষ্কৃতী হিসেবে পরিচিত স্বপন শর্মা।
খুনের দু’দিন পর ৪ জানুয়ারি রাতেই পুলিস এই ঘটনায় জড়িত চক্রী কৃষ্ণ রজক ও বাবলু যাদবের ছবি প্রকাশ করে। একইসঙ্গে তাদের খোঁজ দিতে পারলে দুই লক্ষ টাকার পুরস্কারও ঘোষণা করা হয়েছিল। এরপর গত চারমাস ধরে পুলিস বাবলু এবং রোহনকে হন্নে হয়ে খুঁজে বেরিয়েছে। অবশেষে কৃষ্ণ জালে পড়ায় খুনের মামলায় নতুন তথ্য উঠে আসবে বলে তদন্তকারীরা মনে করছেন।
কৃষ্ণ ধরা পড়লেও এখনও বেপাত্তা আরেক কুখ্যাত অপরাধী বাবলু। তদন্ত যেদিকে এগচ্ছে, তাতে সে খুব শীঘ্রই ধরা পড়বে বলে আশাবাদী তদন্তকারী আধিকারিকরা।
চার মাস পর স্বামীর খুনে জড়িত আরও একজনের গ্রেপ্তারি প্রসঙ্গে চৈতালি সরকার এদিন বলেন, খুনিদের একজন ধরা পড়েছে এটা অবশ্যই একটা ভালো খবর। তাকে জেরা করে পুলিস জানতে পারবে খুনের পিছনে কে কে মদত দিচ্ছিল বা আর কারা এরসঙ্গে যুক্ত ছিল। নতুন তথ্য বেরিয়ে আসুক। কারা অন্তরালে আছে, তাদেরও খুঁজে বের করা হোক।
এদিকে এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই চার্জশিট জমা হয়েছে আদালতে। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, কৃষ্ণকে জিজ্ঞাসাবাদ করে খুনের কারণ সম্পর্কে স্পষ্ট এবং নির্দিষ্ট তথ্য পাওয়ার আশা করছেন তদন্তকারীরা। সেক্ষেত্রে দ্রুত আরও গ্রেপ্তারির সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।