চকচকায় নার্সিংহোমে দাদাগিরির অভিযোগ তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে
বর্তমান | ২৬ এপ্রিল ২০২৫
সংবাদদাতা, দেওয়ানহাট: নার্সিংহোমে দলবল নিয়ে তাণ্ডব চালানোর অভিযোগ উঠল এক তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে। এমনকী তাঁর দলবলের বিরুদ্ধে ১ লক্ষ ৭৩ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেওয়ারও অভিযোগও জমা পড়েছে। অভিযুক্ত ওই নেতার নাম রাজু দে। তিনি কোচবিহার-২ পঞ্চায়েত সমিতির জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ পদে রয়েছেন। শুক্রবার ওই নার্সিংহোমের তরফে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে পুন্ডিবাড়ি থানায়। শাসক দলের নেতার বিরুদ্ধে এমন গুরুতর অভিযোগ ওঠায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে কোচবিহারের রাজনৈতিক মহলে। যদিও,অভিযোগ ভিত্তিহীন এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করেছেন ওই তৃণমূল নেতা।
কোচবিহারের ওই নার্সিংহোমের অন্যতম ডিরেক্টর শঙ্কর সিনহা পুলিসে দায়ের করা অভিযোগে বলেছেন,বৃহস্পতিবার রাতে কোচবিহার ২ নং ব্লকের চকচকায় ওই নার্সিংহোমে আগ্নেয়াস্ত্র সহ ঢোকেন ওই তৃণমূল নেতা রাজু দে ও তাঁর অনুগামীরা। হাসপাতালের নিরাপত্তারক্ষীরা তাঁদের বাধা দিলে মারধর করা হয়। একজন চিকিৎসাধীনও রয়েছেন। নার্সিংহোমে ভাঙচুর চালানোর পাশাপাশি ওষুধের কাউন্টার থেকে দলবল ১ লক্ষ ৭৩ হাজার ৩২০ টাকা জোর করে ছিনিয়ে নিয়েছে। শঙ্করবাবু পরে ফোনে জানান, আমি থানায় অভিযোগ দায়েরের পাশাপাশি পুলিস সুপারকেও গোটা বিষয়টি জানিয়েছি। এদিন বিকেলে ঘটনাটি নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করেন ওই নার্সিংহোমের ম্যানেজার (ডায়াগনস্টিক) পুষ্কর সরকার। তিনি বলেন, বিষয়টি খুবই লজ্জাজনক। সেইসঙ্গে ভয়েরও। ১০-১২ জনকে নিয়ে এসে ভাঙচুর ও মারধর করা হয়েছে। একজন নিরাপত্তাকর্মীও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আমরা পুলিসে অভিযোগ জানিয়েছি। প্রশাসনের কাছে অনুরোধ, বিষয়টি যাতে একটু গুরুত্ব দিয়ে দেখা হয়। এদিকে পুন্ডিবাড়ি থানা জানিয়েছে, গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এদিকে, অভিযুক্ত ওই তৃণমূল নেতার দাবি, কোনামালি গ্রামের একটি মেয়ে ওই নার্সিংহোমে ভর্তি হয়েছিল কয়েকদিন আগে। মাত্র কয়েকদিনে ওই মেয়েটির চিকিৎসার বিল করা হয়েছিল ১ লক্ষ ৬১ হাজার টাকা। বৃহস্পতিবার সকালে তাকে নার্সিংহোম থেকে ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়। তারপর ওই মেয়েটির পরিবার কোনওভাবে ১ লক্ষ ১০ হাজার টাকা বিল জমা দিয়ে জানিয়ে দেয় যে তাঁদের কাছে আর কোনও টাকা নেই। কিন্তু সকালে ছুটি দেওয়া হলেও টাকার জন্য রাত ৮টা পর্যন্ত ওই মেয়েটিকে ছাড়া হয়নি। বিষয়টি ওই পরিবারের কাছ থেকে জানতে পেরে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলতে সেখানে গিয়েছিলেন। হাসপাতালের লোকজনই তাঁদের ধাক্কাধাক্কি করে ও লাঠি, রড দিয়ে মারতে আসে।
রাজু দে’র দাবি, পুরোটাই উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। কারণ, আমি কোচবিহার ২ পঞ্চায়েত সমিতির একজন কর্মাধ্যক্ষ। আমাকে কালিমালিপ্ত করার জন্য এমন মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে। হাসপাতাল জুড়েই সিসি ক্যামেরা রয়েছে। সেখানে বন্দুক নিয়ে ঢোকা বা টাকা লুট করার বিষয়টি সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখাক তারা।
কোচবিহার জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান গিরীন্দ্রনাথ বর্মন বলেন, অভিযোগ হয়েছে। পুলিস ঘটনার সত্যতা যাচাই করবে। তবে আমি বিশ্বাস করি না একজন দায়িত্বশীল নেতা এই ঘটনা ঘটাবেন।