• ডায়ালিসিসের সময় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে মৃত্যু রোগীর
    বর্তমান | ২৬ এপ্রিল ২০২৫
  • সংবাদদাতা, শিলিগুড়ি: ডায়ালালিসিস করানোর পাশাপাশি ডাক্তারের ভূমিকায় টেকনিশিয়ান। শুক্রবার উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ডায়ালিসিস শুরুর সঙ্গে সঙ্গে এক রোগীর মৃত্যুতে এমন অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেফ্রোলজি বিভাগের চূড়ান্ত অব্যবস্থার অভিযোগও উঠেছে। 

    বিন্দুকুমারী মল্লিক(৩৫) নামে মৃতার পরিবারের অভিযোগ, ডায়ালিসিস  করানোর সময় বিভাগে কোনও চিকিত্সক ছিলেন না। ডায়ালিসিস শুরুর সঙ্গে সঙ্গে রোগী আশঙ্কাজনক হয়ে পড়লে আত্মীয়রা ডাক্তারের খোঁজ করেন। তখন এক টেকনিশিয়ান বলেন, তিনিই ডাক্তার। তাঁকে সব কিছু বলতে।  

    বিন্দুকুমারী মল্লিক এই হাসপাতালের অস্থায়ী সাফাই কর্মী। তাঁর এভাবে মৃত্যুতে পরিবারের লোকজন ক্ষুব্ধ হয়ে হাসপাতাল সুপার অফিসে গিয়ে বিক্ষোভ দেখান। সুপারকে গোটা ঘটনা জানিয়ে টেকনিশিয়ানের ভূমিকা নিয়ে অভিযোগ করেন। মৃতার আত্মীয় রবিকান্ত মল্লিক বলেন, আমার বউদির এদিন ডায়ালিসিস ছিল। তাঁর কোনও শারীরিক কষ্ট ছিল না এদিন। স্বাভাবিকভাবে সব কাজ করছিলেন। কিন্তু ডায়ালিসিস শুরুর কিছুক্ষণের মধ্যেই বউদি মারা যান। তার শরীরে কষ্ট শুরু হওয়ায় ডাক্তারের খোঁজ করলে টেকনিশিয়ান এসে আমাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে বলেন, আমি ডাক্তার, যা বলার আমাকে বলুন। ডাক্তার থাকলে হয়তো এই দুর্ঘটনা ঘটতো না। এই গাফিলতির কারণে আমার বউদির মৃত্যু হয়েছে। এদিকে অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সুপার সংশ্লিষ্ট টেকনিশিয়ানকে চিহ্নিত করে খুঁজে আনার নির্দেশ দেন। পরে সেই টেকনিশিয়ান সুপারের সামনে হাজির হন। 

    নেফ্রোলজি বিভাগ নিয়ে অভিযোগ অনেকদিনের। অভিযোগ, এখানে পর্যাপ্ত চিকিৎসক থাকা সত্ত্বেও ইন্ডোর পরিষেবা চালু হয়নি। আউটডোর সপ্তাহে মাত্র তিনদিন চলে। ডায়ালিসিসের সময় রোগী সঙ্কটজনক হলেও ডাক্তার না পাওয়ার অভিযোগ উঠেছে এবার। 

    যদিও অভিযোগ মানতে নারাজ হাসপাতাল সুপার ডাঃ সঞ্জয় মল্লিক। তিনি বলেন, অনেক ক্ষেত্রে ডায়ালিসিস নিতে আসা রোগীকে আপাতদৃষ্টিতে  সুস্থ স্বাভাবিক বলে মনে হয়। বিন্দুকুমারী মল্লিকের ১২টি ডায়ালিসিস হয়ে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে রোগীরা সবসময় ঝুঁকিতে থাকেন। ডায়ালিসিস চলা কিডনি রোগীদের এধরনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটে থাকে।

     টেকনিশিয়ানের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ প্রসঙ্গে সুপার বলেন, টেকনেশিয়ান জানিয়েছেন, মৃতার পরিবারের লোকরা তাঁর কাছে ডাক্তারের খোঁজ করেছিল। তিনি তাদের বলেছিলেন, তাঁকে সব কিছু জানাতে। তিনি ডাক্তারকে বিষয়টি জানাবেন। ডাক্তার কিছুক্ষণের মধ্যেই পৌঁছে যাবে। সেইমতো একজন নেফ্রোলজিস্ট সেখানে পৌঁছেছিলেন। আমাদের ডায়ালিসিস ইউনিটে কনসালটেন্সি ডাক্তার সবসময় থাকেন। এদিনও একজন ছিলেন। তিনি ওপিডিতে রোগী দেখছিলেন। তবু গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।

    যদিও মৃতার পরিবার সুপারের এই বক্তব্য মানতে নারাজ। তাদের অভিযোগ, সুপার একজন ডাক্তার হয়ে ডাক্তারের ত্রুটিকে আড়াল করছেন।
  • Link to this news (বর্তমান)