• তীব্র তাপপ্রবাহ থেকে মুক্তি মেলার সম্ভাবনা শনিবারই
    বর্তমান | ২৬ এপ্রিল ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া ও আরামবাগ: গরম পড়তেই জেলাজুড়ে শুরু হয়েছে তীব্র তাপপ্রবাহ। গত কয়েকদিন ধরে তীব্র গরমে রীতিমতো হাঁসফাঁস অবস্থা জঙ্গলমহলের বাসিন্দাদের। বেলা ১২টার মধ্যেই কার্যত শুনশান হয়ে যাচ্ছে রাস্তাঘাট। সরকারি অফিস কাছারিতেও এদিন তুলনায় কম লোক যাতায়াত করে। বাইক আরোহীদের কথায়, গরমে রাস্তায় বাইক চালালে মনে হচ্ছে কোনও হিট চেম্বারের ভিতর দিয়ে যাচ্ছি। তবে আজই এই যন্ত্রণা থেকে মুক্তি মিলতে পারে বলে জানাচ্ছে আবহাওয়া দপ্তর। 

    গত কয়েকদিন ধরেই পুরুলিয়া জেলার তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি। শুক্রবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২১.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসে আপেক্ষিক আদ্রতার পরিমাণ ছিল ৮৪ শতাংশ।  এদিন, বাঁকুড়ার সর্বোচ্চ তাপামাত্রা ছিল ৪১.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দুই জেলাতেই তাপপ্রবাহের সতর্কতা জারি হয়েছে। দুই জেলায় এই গরমে কোথাও যাতে জলের সঙ্কট না হয়, তা দেখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে রাজ্যের তরফে। বাঁকুড়া শহরের বাসিন্দা মিতা পাল বলেন, গরমে বাড়ির মধ্যেও টেকা দায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। একতলা দালান বাড়ির মধ্যে থাকা ও গনগনে উনানের পাশে দাঁড়ানো কার্যত সমার্থক হয়ে দাঁড়িয়েছে। একইরকম অনুভূতি আরামবাগেও। সেখানের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশেপাশে।  চিকিত্সকেরা জানাচ্ছেন, অত্যাধিক তাপে ক্লান্তি আসে, শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে। বমি বমি ভাব দেখা যায়। অত্যাধিক ঘামে শরীরে জলের জোগান একেবারে কমে যায়। শরীরের তাপমাত্রা অত্যাধিক বেড়ে গেলে হিট স্ট্রোক পর্যন্ত হতে পারে। এই পরিস্থিতিতে প্রত্যেককে সতর্ক থাকতে হবে। স্বাস্থ্য আধিকারিকদের পরামর্শ, রোদে বাইরে বেরলে ছাতা ব্যবহার করতে হবে। মাথা ও কাঁধ ভিজে গামছা দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে। তৃষ্ণা না পেলেও ঘন ঘন জলপান করতে হবে। ঢিলেঢালা সূতির পোশাক পরতে হবে। রোদে বেরিয়ে অসুস্থ বোধ করলে সঙ্গে সঙ্গে ছাওয়ায় দাঁড়িয়ে বিশ্রাম নিতে হবে। মাথায় মুখে ঘাড়ে ঠান্ডা জলের ঝাপটা দিতে হবে। গরমে শসা, তরমুজ জাতীয় ফলমূল, ওআরএস, ডাবের জল খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিত্সকরা। অতিরিক্ত চা পান ও মদ্যপান থেকে বিরত থাকাই ভালো বলে পরামর্শ চিকিত্সকদের। 

    তবে, তীব্র গরমে আজ থেকেই স্বস্তি মিলতে পরে বলে জানাচ্ছে আবহাওয়া দপ্তর। আজ শনিবার থেকে বাঁকুড়া ও পুরুলিয়া সহ দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় কালবৈশাখীর মতো পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। এই সময়ে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি এবং বজ্রপাত-শিলাবৃষ্টিও হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। সেইসঙ্গে দমকা ঝড়ের পূর্বাভাস। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ঝড়-বৃষ্টি চলবে দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে।  নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)