এখনও জ্ঞান হারাচ্ছেন মণীশের স্ত্রী বাড়িতে এলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী
বর্তমান | ২৬ এপ্রিল ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, পুরুলিয়া: চোখের সামনে জঙ্গিদের গুলিতে স্বামীর মৃত্যু দেখার পর নিজেকে ঠিক রাখতে পারেননি মণীশের স্ত্রী জয়া। লুটিয়ে পড়েছিলেন মাটিতে। জ্ঞান হারিয়েছিলেন। হাসপাতালেও ভর্তি করতে হয়েছিল তাঁকে। বৃহস্পতিবার তাঁকে যখন রাঁচি এয়ারপোর্টে নিয়ে আসা হয়, তখনও নিয়ে যেতে হয়েছিল হাসপাতালে। শুক্রবারও স্বাভাবিক হয়ে উঠতে পারেননি জয়া। পরিবারের দাবি, মাঝে মধ্যেই ডুকরে কেঁদে উঠছেন। জ্ঞান হারাচ্ছেন। কখনও ছেলেমেয়েকে বুকে টেনে নিচ্ছেন। মণীশের ১৩ বছরের ছেলে ও সাত বছরের মেয়েরর মানসিক অবস্থা ভালো নয়। কেউই ভুলতে পারছে না বিভীষিকাময় সেদিনের কথা। জলপাই রঙা উর্দি পরিহিত পুলিস দেখলেই ভয়ে চিৎকার করে উঠছে সায়ন এবং তার ছোট বোন।
শুক্রবার সকালে ঝাড়খণ্ডের কৃষিমন্ত্রী নেহা তির্কি দলীয় এক বিধায়ককে সঙ্গে নিয়ে মণীশরঞ্জনের বাড়িতে আসেন। পরিবারকে সমবেদনা জানিয়ে যান। বেলায় মণীশের বাড়িতে আসেন কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী তথা রাঁচীর সাংসদ সঞ্জয় শেঠ। মন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন পুরুলিয়া জেলা বিজেপির সভাপতি শঙ্কর মাহাত এবং দলের স্থানীয় নেতৃত্ব। নিহতের পরিজনদের সঙ্গে কথা বলেন মন্ত্রী। মন্ত্রীর সঙ্গে কথাবার্তার ফাঁকে জয়শঙ্কর মিশ্র মন্ত্রীর কাছে মণীশের স্ত্রীর চাকরির জন্য আর্জি জানান। তিনি বলেন, দুই নাবালক ছেলেমেয়েকে বড় করে তোলাটা একটা বড় কাজ। তাছাড়া সংসারের হাল ধরে রাখতে একটা চাকরি ভীষণই প্রয়োজন। জয়া উচ্চশিক্ষিতা। আপনি একটু দেখুন।’ মণীশের স্ত্রীর জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের অধীন কোনও স্কুলে যদি চাকরির ব্যবস্থা করা যায়, সেই আর্জিও জানানো হয় পরিবারের তরফে। ঘাড় নেড়ে মন্ত্রী আশ্বস্ত করলেও সংবাদমাধ্যমের কাছে এনিয়ে মুখ খোলেননি তিনি। এদিন মণীশের ভাই রাহুলরঞ্জন খানিকটা ক্ষোভের সঙ্গেই মন্ত্রীকে বলেন, ‘অনেক হয়েছে। আর অপেক্ষা নয়। জঙ্গি নিধন এখন থেকে শুরু হোক।’ যদিও মন্ত্রীর আশ্বাস, কেন্দ্রীয় সরকার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন। অন্যদিকে, এদিন শুক্রবারও পুরুলিয়া জেলার একাধিক জায়গায় মণীশ সহ মৃত ভারতীয়দের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করতে মোমবাতি মিছিলের আয়োজন করা হয়। জঙ্গি হানায় নিহত মণীশ মিশ্রের বাড়ি ঝাড়খণ্ড ও কেন্দ্রীয় সরকারের মন্ত্রী। নিজস্ব চিত্র