• তৃণমূল নেতার বাড়িতে ফাটল বোমা, কেঁপে উঠল সাঁইথিয়া
    বর্তমান | ২৬ এপ্রিল ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, সিউড়ি: ভোরের আলো ফোটার আগেই শুক্রবার বোমা ফাটার শব্দে কেঁপে উঠেছিল সাঁইথিয়ার হাতোড়া পঞ্চায়েতের দক্ষিণ সিজা। বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় স্থানীয় শেখ ফিরোজের বাড়ির সীমানা পাঁচিলের একটা অংশ ভেঙে পড়েছে। তৃণমূল কংগ্রেস সমর্থিত ফিরোজের বাড়িতে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় রহস্য দানা বাঁধতে শুরু করেছে। পরিবারের সদস্যদের দাবি, ভোরবেলা কেউ বা কারা বোমা মেরে পালিয়ে গিয়েছে। এক্ষেত্রে তাঁদের আশঙ্কা, এই ঘটনার নেপথ্যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব থাকতে পারে। কিন্তু কে বা কারা এই ঘটনায় জড়িত, তা অবশ্য তাঁদের কাছে স্পষ্ট নয়। যদিও পুরুষশূন্য বাড়িটিকে কেন্দ্র করে পুলিসের মনে সন্দেহ দানা বাঁধতে শুরু করেছে। প্রাথমিকভাবে সাঁইথিয়া থানার পুলিসের অনুমান, বাড়িতে থাকা মজুত বোমা ফেটেছে। ঘটনায় পুলিসি তদন্তে আতস কাচের তলায় পরিবারের সদস্যরা। পুলিস সুপার আমনদীপ বলেন, ঘটনাস্থল থেকে বেশকিছু নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। সবকিছু খতিয়ে দেখে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে। 

    বোমা বিস্ফোরণের নেপথ্যে কি সত্যিই রাজনৈতিক কোনও কারণ থাকতে পারে? পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বাড়ির প্রত্যেক সদস্যই তৃণমূলের সমর্থক। যদিও তাঁদের সঙ্গে দলেরই একটা অংশের সঙ্গে বিবাদ বহুদিন ধরে চলে আসছে। সেক্ষেত্রে এই ঘটনায় ওই অংশের যোগ থাকলেও থাকতে পারে বলে তাঁরা আশঙ্কা করছেন। পরিবারের সদস্যদের দাবি, ভোরের আলো ফোটার আগেই শেখ ফিরোজের তিন ছেলে কাজে বেরিয়ে গিয়েছিলেন। সেসময় তাঁদের বউ ও বাচ্চারা বাড়িতে ছিল। এক্ষেত্রে প্রশ্ন উঠছে, তাহলে বোমা বিস্ফোরণের পর ভেঙে পড়া পাঁচিলের অংশ কে বা কারা সরাল? আর তড়িঘড়ি সেসব সরিয়ে ফেলা হল কেন? এমনকী বাড়িতে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনার পরও কেন পুরুষ সদস্যরা বাড়ি ফিরলেন না। এক্ষেত্রে পরিবারের দাবি, কাজের সুবাদে কেউ ফিরতে পারেননি। যদিও সূত্র মারফৎ জানা গিয়েছে, পরিবারের পুরুষ সদস্যরা পুলিসের নজর এড়াতে গা ঢাকা দিয়েছেন। তাহলে কি পুলিসের অনুমানই সত্যি?

    এদিনের ঘটনা প্রসঙ্গে ফিরোজের বউমা শেরিফা খাতুন বলেন, ঘটনার সময় গোটা বাড়িতে কোনও পুরুষ ছিল না। আমরা তিন জা চা করছিলাম। বাচ্চারা ঘুমিয়েছিল। তখনই বোমা বিস্ফোরণের শব্দ পাই। বাইরে বেরিয়ে দেখি ধোঁয়ায় ঢেকে গিয়েছে ওই জায়গা। তারপর নজরে আসে পাঁচিলের একটা অংশ ভেঙে পড়েছে। ওই পাঁচিল ভেঙে গেট তৈরির কাজ শুরু হয়েছিল। আমাদের আশঙ্কা কেউ গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে এমনটা ঘটিয়েছে। পরিবারের সদস্যদের দাবি, বছর ১৫ আগেও ওই বাড়ি লক্ষ্য করে বোমা ছোড়ার ঘটনা ঘটেছিল।  তবে, পরিবারের সদস্যরা যাই বলুন, তৃণমূল কংগ্রেসের ব্লক সভাপতি মহম্মদ সাবের আলি খান অবশ্য তা মানতে নারাজ। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের তত্ত্ব উড়িয়ে তিনি বলেন, এলাকায় কোনও গোষ্ঠী নেই। যারা এই তত্ত্ব তুলে ধরছেন, তাঁরা নিজেদের বাঁচাতে চাইছেন। পুলিসি তদন্তে সবটা স্পষ্ট হবে।
  • Link to this news (বর্তমান)