সংবাদদাতা, মানকর: এপ্রিল মাস থেকেই তীব্র দাবদাহ শুরু হয়েছে। পানাগড়ের তাপমাত্রা ছাড়িয়েছে ৪২ ডিগ্রি। বেলা পাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে তাপমাত্রা বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে কাঁকসার দেউল বা আউশগ্রামের জঙ্গলে হরিণ ও ময়ূরকে রক্ষা করতে বনদপ্তর বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে। ওআরএস খাওয়ানো হচ্ছে হরিণদের। নজর রাখা হচ্ছে যাতে প্রাণীদের পানীয় জলের সমস্যা না হয়। সাব মার্সিবল পাম্প চালিয়ে পুকুরে জল ভর্তির ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
বন বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েক বছর আগে আউশগ্রাম সংলগ্ন পশ্চিম বর্ধমানের কাঁকসা জঙ্গলমহলের দেউল এলাকায় পরীক্ষামূলক ভাবে কয়েকটি ময়ূর ছাড়া হয়েছিল। উপযুক্ত পরিবেশ পেয়ে ক্রমে ময়ূরের বংশবিস্তার ঘটেছে। তারা এখন আশেপাশের জঙ্গলেও ছড়িয়ে পড়েছে। আউশগ্রামের আদুরিয়া, হেদোগরিয়ায় ময়ূরের সংখ্যা এখন অনেকটাই বৃদ্ধি পেয়েছে। এই গরমে ময়ূরদের যাতে অসুবিধা না হয় সেজন্য ওআরএস দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। জলের সঙ্গে ওআরএস মেশানো হচ্ছে।
কাঁকসার গৌরাঙ্গপুর মৌজায়ার দেউলে ১৯৯২ সালে হরিণ ও ময়ূরের জন্য সংরক্ষণ কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়। বর্ধমান ডিভিশনের দুর্গাপুর রেঞ্জের শিবপুর বিটের অন্তর্গত এই এলাকায় ১০০টিরও বেশি হরিণ রয়েছে। বনদপ্তরের কর্মী দীপ দত্ত বলেন, ব্যাপক গরম পড়েছে। তাতে হরিণ ও ময়ূরদের যাতে অসুবিধা না হয় সেজন্য ওআরএস দেওয়া হচ্ছে। এই বছর এখনও পর্যন্ত সে ভাবে বৃষ্টি হয়নি। গাছের নতুন পাতা সেভাবে হয়নি। জঙ্গলও ঘন হতে শুরু করেনি। এই অবস্থায় হরিণের অন্যতম প্রধান খাদ্য ঘাসের ঘাটতি যাতে না হয় সেদিকে বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে। গাজর, তরমুজ সহ নানা টাটকা আনাজ দেওয়া হচ্ছে হরিণগুলিকে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, প্রতি বছর গরম পড়লেই ময়ূর ও হরিণদের প্রতি বিশেষ নজর দেওয়া হয়। গরমে যাতে প্রাণীদের অসুবিধা না হয় সেজন্য জলে ওআরএস মেশানো হয়। তাছাড়া প্রাণীদের শরীরে জলশূন্যতা রুখতে টাটকা শাকসব্জির সঙ্গে ভেজানো ছোলা, আখের গুড় ও বিটনুনও খাওয়ানো হয়। স্থানীয় বাসিন্দা শুভেন্দু দাস বলেন, জঙ্গলে শুধু ময়ূর নয় হেঁরোল, খরগোশ, বনবিড়াল, প্যাঙ্গোলিন প্রভৃতি প্রাণীও দেখা যায়। এই গরমে প্রাণীদের জন্য পর্যাপ্ত পানীয় জল থাকা জরুরি। দুর্গাপুরের রেঞ্জার সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, প্রচণ্ড দাবদাহ চলছে। হরিণদের সুস্থ রাখতে ওআরএসের জল দেওয়া হচ্ছে। দেউলে সংরক্ষণ কেন্দ্রে পুকুরে জল কমে যাচ্ছে কি না সেদিকে নজর রাখা হচ্ছে। জল কমে গেলে সাব মার্সিবল পাম্প চালিয়ে জল ভর্তি করা হচ্ছে।-নিজস্ব চিত্র