• রেললাইনে চারচাকা বিকল, মালগাড়ির ধাক্কায় চুরমার, রক্ষা পেলেন আরোহীরা
    বর্তমান | ২৬ এপ্রিল ২০২৫
  • সংবাদদাতা, রামপুরহাট: রেললাইনে উঠে পড়া চারচাকা গাড়িতে ধাক্কা মারল দ্রুত গতিতে ছুটে আসা মালগাড়ি। মুরারইয়ের এই ঘটনায় অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছেন গাড়িটির চালক সহ আরোহীরা। তবে ভেঙে চুরমার হয়ে গিয়েছে গাড়িটি। ঘটনার পরই শুক্রবার লাইন পারাপারের রাস্তা বন্ধ করতে আরপিএফকে নিয়ে এলাকায় আসেন রেলের আধিকারিকরা। লাইন পারাপারের একমাত্র রাস্তা বন্ধের প্রতিবাদে সরব হন গ্রামবাসীরা। তাই নিয়ে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে এলাকায় ছুটে আসেন তৃণমূল নেতারা ও মুরারই থানার পুলিস। অবশেষে সাংসদ শতাব্দী রায়ের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। 

    বর্ধমান সাহেবগঞ্জ লুপ লাইনে মুরারই থানার বাঁশলৈ রাজগ্রাম স্টেশনের মাঝে মাকুয়া গ্রামের কাছে গেটবিহীন রেললাইনের উপর দিয়ে যানবাহন থেকে পথচারীদের যাতায়াত দীর্ঘদিনের। বিকল্প রাস্তা না থাকায় মাকুয়া, মুর্শিদপাড়া, বরুঙ্গা, জগন্নাথপুর, চক্রপাড়া, শ্রীরামপুর, আবদুল্লাপুর সহ ৩০টির উপর গ্রামের বাসিন্দাদের নিত্যদিন রেললাইন পেরিয়ে মুরারই স্টেশন, হাসপাতাল, স্কুল কলেজ সহ সমস্ত সরকারি কার্যালয়ে আসতে হয়। এছাড়া লাগোয়া ঝাড়খণ্ডের বহু গ্রামের মানুষের এটাই একমাত্র পথ। এখানে গেট না থাকলেও রয়েছে প্রহরী। ট্রেন আসলে লাল পতাকা উড়িয়ে লাইন পারাপার না করার জন্য সাবধান করেন তিনি। এর আগে বেশ কয়েকবার সেই রাস্তা বন্ধ করার উদ্যোগ নেয় রেল। কিন্তু এলাকাবাসীর বিক্ষোভের জেরে পিছু হটতে হয় তাঁদের।

    এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে একটি চারচাকা গাড়ি লাইন পার হওয়ার সময় বিগড়ে যায়। প্রহরী বিপিন কুমার জানান, চালককে নিষেধ করলেও তিনি শোনেননি। এদিকে দ্রুত গতিতে মালগাড়ি আসছে। যখন মালগাড়িটি কাছকাছি চলে এসেছে তখন গাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যান চারজন। মালগাড়ির ধাক্কায় ভেঙে চুরমার হয়ে যায় গাড়িটি। আরপিএফ গাড়ির নম্বর খতিয়ে মালিকের খোঁজ শুরু করেছে। 

    এদিকে শুক্রবার দুপুরে লাইন পারাপারের সেই রাস্তা বন্ধ করতে এলাকায় আসেন রেল কর্তারা। এই সময় গ্রামবাসীদের প্রবল ক্ষোভের মুখে পড়তে হয় তাঁদের। গ্রামবাসীরা বলেন, জীবনের ঝুঁকি জেনেও ত্রিশটির উপর গ্রামের মানুষ এই রেললাইন পেরিয়ে যাতায়াত করেন। অথচ রেল বিকল্প ব্যবস্থা না করে বারবার এই রাস্তা বন্ধ করতে আসছেন। তাঁদের দাবি, বিকল্প হিসাবে আন্ডারপাস অথবা ওভারব্রিজ নির্মাণ করতে হবে। ঘটনাস্থলে হাজির এলাকার বাসিন্দা তৃণমূলের মুরারই ১ ব্লক সভাপতি বিনয় ঘোষ বলেন, ২০১৮ সালের ১২ জানুয়ারি রামপুরহাট স্টেশনে রেলের তৎকালীন জেনারেল ম্যানেজার হরীন্দ্র রাওয়ের সঙ্গে দেখা করলে মাকুয়ায় আন্ডারপাস অনুমোদন হয়েছে বলে তিনি জানান। কিন্তু আজও সেই কাজ শুরু হল না। অথচ এখানকার মানুষের চলাচলের একমাত্র রাস্তা বন্ধ করতে চাইছে রেল। 

    সমস্যার কথা মোবাইলের মাধ্যমে সাংসদ শতাব্দী রায়কে জানান ব্লক সভাপতি। সেই মতো হাওড়া ডিআরএমের সঙ্গে কথা বলেন সাংসদ। শতাব্দী বলেন, ডিআরএম কথা দিয়েছেন পুরো রাস্তা বন্ধ করা হবে না। শুধুমাত্র একটি চারচাকা গাড়ি চলাচলের রাস্তা রেখে বাকিটা ঘিরে দেওয়া হবে। কারণ, লাইন পারাপরের রাস্তাটি চওড়া হওয়ায় একসঙ্গে একাধিক গাড়ি দ্রুতগতিতে চলাচল করছিল। আন্ডারপাসের বিষয়টিও ডিআরএমকে বলা হয়েছে। 

    সেই মতো রেলকর্তারা ১০ ফুট ফাঁকা রেখে বাকিটা ঘিরে দেয় এবং রেল লাইন পারাপারের দুধারে হাম্প বসিয়ে দেয়। বিনয়বাবু বলেন, ১০ ফুটের রাস্তায় চারচাকা গাড়ি, ট্রাক্টর সবই চলাচল করতে পারবে।  
  • Link to this news (বর্তমান)