‘দাদার কীতি’র ১০০তম অভিনয় দিয়ে শুরু ‘নৈহাটি ব্রাত্যজন’-এর নাট্যোৎসব
বর্তমান | ২৬ এপ্রিল ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: লাইট, ক্যামেরা, অ্যাকশান— রুপোলি পর্দার চেনা ছক। ছবির শ্যুটিং হয় বরফের চাদরে ঢাকা অঞ্চলে বা সমুদ্রের বালুকাবেলায়। তারপর সুদক্ষ হাতে ‘এডিটিং’ করে তা পরিবেশন করা হয় বড় পর্দায়। কিন্তু নাটকে অভিনয় সম্পূর্ণ আলাদা! এখানে জীবনের গল্প বলতে গিয়ে চোখে গ্লিসারিন দিয়ে কাঁদতে হয় না! স্টেজে অভিনয়ের সময় চরিত্রের সঙ্গে অভিনেতার এমন এক একাত্মতা গড়ে ওঠে যে সবটাই যেন হয়ে ওঠে বাস্তব! অভিনয়ের দক্ষতায় শিল্পী ও দর্শকদের মধ্যে গড়ে ওঠে সরাসরি সংযোগ। মঞ্চসজ্জা ও আলোক প্রক্ষেপণের দক্ষতায় ফুটে ওঠে ‘প্লট’। এহেন নাটককে বাঁচিয়ে রাখার তাগিদে কলকাতায় নাটকের মহোৎসব নিয়ে হাজির হয়েছে ‘নৈহাটি ব্রাত্যজন’।
সংস্থার ১০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে শুক্রবার থেকে কলকাতার অ্যাকাডেমি অব ফাইন আটর্সে শুরু হয়েছে নাট্যোৎসব। চলবে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত। ‘নাটকের মঞ্চে স্বপ্নের উড়ান’— এই বার্তাকে সামনে রেখে আগামী দিনে আরও এগিয়ে যাওয়ার শপথ নিয়েছে ‘নৈহাটি ব্রাত্যজন’। উৎসবের সূচনা হয়েছে ‘দাদার কীর্তি’ নাটকের ১০০তম অভিনয়ের মধ্য দিয়ে। ছ’দিনে মোট ১১টি নাটক মঞ্চস্থ হবে। এই নাট্যোৎসবের মূল আয়োজক বারাকপুরের সাংসদ তথা বিশিষ্ট নাট্যব্যক্তিত্ব পার্থ ভৌমিকের আহ্বান, ‘নাটকের পরতে পরতে ফুটে উঠবে জীবনের গল্প। তাই সবাই আসুন।’
মঞ্চস্থ হতে চলা নাটকের তালিকায় আছে বসন্ত বিলাপ, আনন্দ, ফেরারি ফৌজ, টিনের তলোয়ার। আগামী কয়েকদিন অ্যাকাডেমি চত্বর জমজমাট থাকবে এই নাট্যোৎসবকে ঘিরে। এদিন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পার্থবাবুর পাশাপাশি হাজির ছিলেন মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন, সুজিত বসু, রথীন ঘোষ। ছিলেন শুভাশিস মুখোপাধ্যায়, সুরঙ্গনা দাশগুপ্ত, উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ। আয়োজকদের তরফে নাট্য নির্দেশক অরিত্র বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিনেত্রী দেবযানী সিংহ বলেন, ‘নাটকের পরিসর আরও বড় হোক, সেটাই আমাদের লক্ষ্য। নাটকের একটা পরম্পরা ও ধারাবাহিক ইতিহাস আছে। সেটা আমরা বাঁচিয়ে রাখতে চাই। আর চাই তরুণ প্রজন্ম আরও এই শিল্পের আঙিনায় নিজেদের শামিল করুক।’ অভিনেতা দেবশঙ্কর হালদার ও নির্দেশক দেবাশিস রায় বলেন, ‘এমন উদ্যোগ নাটককে মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করি।’