মুর্শিদাবাদে নৃশংস হত্যা, দাবি মতো পণের টাকা না মেলায় স্ত্রী-পুত্রকে খুন করল স্বামী ...
আজকাল | ২৬ এপ্রিল ২০২৫
শ্রেয়সী পাল: স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির অন্য সদস্যদের দাবি মত পণের টাকা আনতে না পারায় এক মহিলা এবং তাঁর পনেরো মাসের পুত্র সন্তানকে খুন করে গঙ্গা নদীর জলে ভাসিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল। ঘটনাটি ঘটেছে মুর্শিদাবাদের লালগোলা থানা এলাকায়। বৃহস্পতিবার দু'জনের দেহ গঙ্গা নদী থেকে উদ্ধার হলেও গতকাল মৃতদের পরিবারের তরফ থেকে কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি। শুক্রবার সন্ধ্যা নাগাদ মৃত মহিলার পরিবারের তরফ থেকে লালগোলা থানায় খুনের একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। লালগোলা থানার এক আধিকারিক জানিয়েছেন, লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে মৃত ওই মহিলার স্বামী আব্দুল রশিদকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি অভিযুক্তদের সন্ধানে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে মৃতদের নাম সাবিনা খাতুন (২১) এবং তাঁর শিশু সন্তান আরাফাত শেখকে (১৫ মাস) খুন করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় তিন বছর আগে লালগোলা থানার চন্ডিপুর রাজারামপুর এলাকার বাসিন্দা সাবিনা খাতুনের সঙ্গে নশিপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত হরিপুর সদর এলাকার বাসিন্দা জনৈক আব্দুল রশিদের বিয়ে হয়।
সাবিনা খাতুনের মা মাসতুরা বিবি বলেন, "আমার মেয়ে পুত্র সন্তানের জন্ম দেওয়ার পর থেকে তার উপর বিভিন্ন অছিলায় আমার জামাই আব্দুল রশিদ এবং তাঁর বাড়ির সদস্যরা অত্যাচার করত। গত কয়েকদিন ধরে আব্দুল আমার কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা দাবী করছিল। আমার আর্থিক অবস্থা ভালো না হওয়ায় মেয়েকে সেই টাকা দিতে পারিনি।" তাঁর আরও অভিযোগ, "গত ২৩ তারিখের রাত্রি দশটা নাগাদ আব্দুল রশিদ, তার মা আলিরা বিবি এবং বোন আসমিনা খাতুন, আমার মেয়ে সাবিনাকে প্রচন্ড মারধর করে ওর নাবালক ছেলের সঙ্গে বার করে দেয়। তাঁরা বলেছিল আমি যদি তাদের দাবি মত টাকা দিতে না পারি তাহলে সংসার করতে দেবে না।' স্থানীয় সূত্রের খবর এরপর থেকে সাবিনা এবং ছেলে আরাফাত শেখের কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা নাগাদ স্থানীয় গঙ্গা নদীর ঘাটে দু'জনের দেহ ভেসে উঠতে দেখেন এলাকার বাসিন্দারা। এরপর লালগোলা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেহ দু'টি কৃষ্ণপুর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা দু'জনকেই মৃত বলে ঘোষণা করেন।
মৃত ওই মহিলার মা দাবি করেন, "আমার সন্দেহ দাবি মতো পণের টাকা না দিতে পারায় আমার নাতি এবং মেয়েকে খুন করে জলে ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আমাদেরকে বলা হয়েছিল ওরা বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়েছে। আমার মেয়ের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন আছে।"
লালগোলা থানার এক আধিকারিক জানান, শুক্রবার সন্ধ্যা নাগাদ মৃতের পরিবারের তরফ থেকে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের রয়েছে। তার ভিত্তিতে ইতিমধ্যেই আব্দুল রশিদকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হতে দেহ দু'টি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।