এই সময়: জেলায় জেলায় ‘যোগ্য’ শিক্ষকদের তালিকায় নাম না–থাকা বা তাঁদের জয়েনিং এবং স্যালারি পোর্টালে নাম তোলা নিয়ে সমস্যার সমাধানে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয় পরিদর্শকদেরই (ডিআই–মাধ্যমিক) উদ্যোগী হতে হবে বলে স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি) ও স্কুলশিক্ষা দপ্তরের কর্তাদের আলোচনায় ঠিক হয়েছে। স্কুলশিক্ষা কমিশনার শুক্রবার এই মর্মে নির্দেশিকা জারি করেছেন। এসএসসি এর আগে শীর্ষ আদালতের নির্দেশ মেনে ‘টেন্টেড নন’ এমন ১৫,৪০৩ জন যোগ্য শিক্ষক–শিক্ষিকার নামের তালিকা তৈরি করে স্কুলশিক্ষা কমিশনারের মাধ্যমেই ডিআই–দের পাঠিয়েছিল। অভিযোগ, তাতে কয়েকশো যোগ্য শিক্ষক–শিক্ষিকার নাম নেই। আবার কোনও কোনও স্কুলে এমন কয়েক জনের নাম গিয়েছে, যাঁরা সংশ্লিষ্ট স্কুলে কোনও দিন শিক্ষকতাই করেননি!
তালিকায় যোগ্য শিক্ষকদের একাংশের নাম না থাকার ক্ষেত্রে এক–এক রকম সমস্যা রয়েছে বলেই খবর। যেমন, ২০১৬ সালের নিয়োগ প্যানেল প্রকাশের পর ২০১৮ ও ২০১৯ সালে অনেকেই সংশ্লিষ্ট স্কুলে যোগ দেননি। আবার অনেকে ইতিমধ্যে একাধিক বার বদলি নিয়েছেন। আন্দোলনকারী যোগ্য শিক্ষক–শিক্ষিকা অধিকার মঞ্চের কনভেনর মেহবুব মণ্ডল বলেন, ‘আমরা যোগ্যদের তালিকা প্রকাশের দাবি জানিয়েছিলাম। সেই তালিকা ডিআই অফিসগুলিতে গিয়েছে। কিন্তু যে দায়িত্বের সঙ্গে এই তালিকা তৈরি করা উচিত ছিল, তা হয়নি।’
তাঁর বক্তব্য, শিক্ষকদের নিয়োগ ও সার্ভিস রেকর্ড রাখে কিন্তু মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। এসএসসি–কে তালিকা তৈরি করতে বলা হয়েছে, কারণ তারা নিয়োগের সুপারিশ করে। সেখানে বেশ কিছু ভুল রয়েছে। কারণ, কমিশনের সুপারিশের পরেও হয়তো কেউ চাকরি করেননি, তাঁর নামও স্কুলে চলে এসেছে। অযোগ্য হিসেবে চিহ্নিত, তাঁর নামও এসেছে। আবার যাঁদের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ নেই, তাঁদের নাম বাদ গিয়েছে। অনেকে আবার নির্দিষ্ট স্কুলে শূন্যপদ না থাকায় স্কুল পরিবর্তনে বাধ্য হয়েছিলেন। তাঁদের নামও বাদ গিয়েছে। ফলে সমস্যা হয়েছে।
পরিস্থিতি ঠিক কী রকম?
হাওড়ার উলুবেড়িয়া মহকুমার খাজুরি হাইস্কুলে ভৌত বিজ্ঞানে মইদুল ইসলাম মল্লিক নামে এক জন শিক্ষকের নাম পাঠানো হয়েছে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক জানিয়েছেন, ওই নামে স্কুলে কোনও শিক্ষকই ছিলেন না। মালদার ঠাকুর অনুকূলচন্দ্র বালিকা বিদ্যামন্দিরের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের এক শিক্ষিকার ক্ষেত্রেও একই রকম রিপোর্ট এসেছে ডিআই অফিসে। জলপাইগুড়ির দেবনগর সতীশ লাহিড়ী হাইস্কুলে রাকিব মণ্ডল নামে ইতিহাসের (স্নাতক) এক শিক্ষকের নাম এসেছে। অথচ ওই স্কুলে এই নামে কোনও শিক্ষক কোনও দিনই ছিলেন না!
এই রকম সব ‘ভুল’ সংশোধনের সময় বেঁধে মেহবুব বলেন, ‘সোমবারের মধ্যে এ সব ঠিক না হলে আমরা বিকাশ ভবন ঘেরাওয়ের ডাক দেব।’ বিকাশ ভবনের খবর, ওই কয়েকশো শিক্ষক–শিক্ষিকার ক্ষেত্রে যে সমস্যা রয়েছে, সেটা ২৩–২৪ জন ডিআই–কেই আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করতে বলা হয়েছে। তবে দেরির কারণে কারও কারও এ মাসের বেতন পেতে সমস্যা হতে পারে।