সঞ্জয় দে ■ দুর্গাপুর
পুরসভার গাড়ি মেরামতের আড়ালে পুকুর চুরির অভিযোগ উঠল এক ঠিকাদার সংস্থার বিরুদ্ধে। অভিযোগ, কোনও গাড়ির যন্ত্রাংশ মেরামত করতে খরচ ১ হাজার টাকা হলে ওই ঠিকাদার সংস্থা ১০ হাজার টাকা বিল করে পুরসভায় জমা দিচ্ছে। ফেব্রুয়ারি মাসে একটি গাড়ির যন্ত্রাংশ মেরামতের খরচ কয়েকগুণ বাড়িয়ে বিল জমা দেয় ঠিকাদার সংস্থা। সম্প্রতি সেই ঘটনা নজরে আসায় চমকে ওঠেন পুরসভার আধিকারিকরা। গাড়ির যন্ত্রাংশের দাম ও মেরামতের খরচ সম্বন্ধে তেমন কোনও ধারণা নেই পুর কর্তৃপক্ষের। অভিযোগ, সেই সুযোগে গত দু’বছর ঠিকাদার সংস্থা কার্যত লুট চালিয়েছে পুরসভায়।
পুরসভার বর্তমান বোর্ডের সহকারী প্রশাসক অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘আবর্জনা তোলার গাড়ির একটা যন্ত্রাংশ মেরামত করতে ১৫০০ টাকা লাগে। সেখানে ওই সংস্থা ১৬ হাজার টাকা বিল জমা দিয়েছে। গত দু’বছর ধরে ওই ঠিকাদার সংস্থা পুরসভার গাড়ি মেরামতের কাজ করছে। আমার ধারণা, ওই ঠিকাদার সংস্থা কয়েক লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। সমস্ত ফাইল চেয়ে পাঠিয়েছি। সোমবার তা খতিয়ে দেখব।’
আবর্জনা সংগ্রহের জন্য দুর্গাপুর পুরসভায় একাধিক ছোট গাড়ি রয়েছে। তারমধ্যে একটি গাড়ির মডেল এসিই। অভিযোগ, ফেব্রুয়ারি মাসে একটি এসিই গাড়ির সেলফ (গাড়ির ইঞ্জিন চালু করার মোটর) মেরামতের জন্য ১৬ হাজার টাকা বিল করে ওই ঠিকাদার সংস্থা। সেখানে একটি নামী সংস্থার যন্ত্রাংশ ব্যবহার করা হয়েছে বলে লেখা হয়। তবে দুর্গাপুরের একটি গাড়ি সংস্থার ডিলার বলেন, ‘এসিই মডেল গাড়ির ভালো সেলফের দাম খুব বেশি হলে ৬৫০০ টাকা। মেরামতের খরচ খুব বেশি হলে পড়ে ১৫০০ টাকা।’
পুরসভার অটোমোবাইল দপ্তরের ইঞ্জিনিয়ার সুজল নন্দী বলেন, ‘বিষয়টি আমাদের জানা ছিল না। ঠিকাদার সংস্থার বিল খতিয়ে দেখা হবে।’ প্রসঙ্গত, এই ঠিকাদার সংস্থার বিরুদ্ধে আগেও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছিল। এই সংস্থার নিজস্ব কোনও গ্যারাজ নেই। ফরিদপুরের একটি গ্যারাজকে নিজের বলে দাবি করে পুরসভার টেন্ডারে অংশ নিয়েছিল ঠিকাদার সংস্থা। ঠিকাদার সংস্থার কর্ণধার প্রদীপ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘টেন্ডারে যে নিয়মাবলী আছে, তা মেনে বিল করা হয়েছে।’ কিন্তু যে যন্ত্রাংশের দাম খুব বেশি হলে ৬৫০০ টাকা, তা মেরামত করতে কেন ১৬,০০০ টাকার বিল করা হবে? সদুত্তর দিতে পারেননি প্রদীপ।