• চারদিন ধরে পাকিস্তানে ‘আটকে’ হুগলির জওয়ান! স্বামীর খবর নিতে পাঠানকোট যাচ্ছেন অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী
    প্রতিদিন | ২৬ এপ্রিল ২০২৫
  • সুমন করাতি, হুগলি: পহেলগাঁও হামলার পরিপ্রেক্ষিতে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে ‘যুদ্ধ যুদ্ধ’ আবহের মাঝেই গত বুধবার ‘ভুল করে’ সীমান্ত পেরিয়ে পাক সেনার হাতে ‘বন্দি’ বাংলার বিএসএফ জওয়ান। দীর্ঘ প্রায় চারদিন ধরে তাঁর কোনও খোঁজ নেই। কোথায় আছেন, কী অবস্থায় আছেন, আদৌ সুস্থ আছেন কি না, তাঁর উপর অত্যাচার চলছে কি না ? বিন্দুবিসর্গও জানতে পারেননি কেউ। সেনাবাহিনীর তরফে শুধু পরিবারকে আশ্বাস দেওয়া হচ্ছে, কেন্দ্র নীতি মেনে সবরকম প্রক্রিয়া চালাচ্ছে জওয়ানের মুক্তির জন্য। কিন্তু এসব মৌখিক কথায় আর ভরসা রাখতে নারাজ বিএসএফ জওয়ানের পূর্ণমকুমার সাউয়ের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী রজনী সাউ। তাই হুগলির বাড়ি থেকে ৫ জনকে সঙ্গে নিয়ে রবিবার পাঠানকোট রওনা দিচ্ছেন স্ত্রী। সেখান থেকে তথ্য না পেলে দিল্লি গিয়ে কেন্দ্রের কাছে স্বামীর খবরাখবর জানতে চাইবেন রজনীদেবী।

    শনিবার দুপুরে নিজের বাড়িতে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে স্ত্রী রজনী সাউ জানান, ‘‘প্রায় ৪ দিন ধরে কোনও খবর নেই। একটা লোক কী অবস্থায় আছে? খাওয়াদাওয়া করছে কি না, ওঁর উপর কোনও অত্যাচার হচ্ছে কি না, কিছুই জানা যাচ্ছে না। ভারতীয় সেনার তরফে অবশ্য আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হয়েছে। তবে শুধু জানানো হচ্ছে, প্রতিনিয়ত ফ্ল্যাগ মিটিং করে তাঁকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা হচ্ছে।” এসব শুনে আর ধৈর্য ধরে রাখতে পারছেন না রজনীদেবী। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা ৫-৬ মিলে রবিবার পাঠানকোট যাব। ওখানেই ওঁর পোস্টিং ছিল। তাই প্রথমে সেখানে যাব। ওখানে গিয়ে কোনও লাভ হবে কি না জানি না। তাও সামনে থেকে বিষয়টি বুঝতে পারব। ওখানে যদি কিছু না হয়, তাহলে তারপর দিল্লিতে যাব। প্রধানমন্ত্রী মোদি, কেন্দ্রের কাছে ওঁর খবর জানতে চাইব। আবেদন করব, আমার স্বামীকে ফিরিয়ে আনার জন্য।’’

    রজনী দেবী বর্তমানে অন্তঃসত্ত্বা। তবে এই মুহূর্তে নিজের শরীরের কথা ভাবার সময় নেই। রজনীর কথায়, ‘‘আগে তো আমার স্বামীকে ফিরিয়ে আনি। তারপর নিজের কথা ভাবব।’’ পূর্ণমকুমারের মা দেবন্তি দেবী বলছেন, ‘‘ছেলে সুস্থভাবে ফিরে আসুক, এটাই চাইছি এখন। ছেলের কথা জানতে পারছি না, খোঁজখবর পাচ্ছি না, কথা বলতে পারছি না। অনেকটা সময় হয়ে গেল। তাই চিন্তা হচ্ছে।’’ যদিও এদিন সকালেই শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, বিএসএফের ডিজির সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে। পূর্ণমকুমার সুস্থ রয়েছেন, তাঁকে দ্রুত ফেরানোর সমস্ত প্রক্রিয়া চলছে সেনার তরফে। চিন্তার কিছু নেই। তারপরও ভরসা পাচ্ছে না পরিবার।
  • Link to this news (প্রতিদিন)