বেড়াতে গেলে পরিচয় গোপন করুন, পহেলগাঁও কাণ্ডের পর কেন্দ্রীয় এজেন্সির কর্মীদের বার্তা গোয়েন্দা দপ্তরের
প্রতিদিন | ২৬ এপ্রিল ২০২৫
অর্ণব আইচ: পহেলগাঁওয়ে জঙ্গিদের টার্গেট শুধু নিরীহ পর্যটকরা ছিলেন না, ছিলেন সরকারি নিরাপত্তা এজেন্সির কর্মী ও আধিকারিকরাও। রীতিমতো ঘোষণা করে এমনই দাবি করেছে লস্কর-ই-তৈবার শাখা জঙ্গি সংগঠন। এর পরই কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা এজেন্সির আধিকারিক ও কর্মীদের সরকারি নির্দেশ, তাঁরা বাইরে বেড়াতে গেলে যেন নিজেদের পরিচয় বা পেশা কাউকে না জানান। বিশেষ করে কাশ্মীর বা উত্তর-পূর্ব ভারতে গেলে কোনওমতেই যেন এই তথ্য জানানো না হয়। তাতে বিপদ বাড়তে পারে তাঁদের।
ইতিমধ্যেই কলকাতা-সহ রাজ্যের কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা সংস্থাগুলোতে এসেছে এই নির্দেশ। তাই এই রাজ্য ও কলকাতায় কর্মরত কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা এবং তদন্তকারী এজেন্সির আধিকারিকরাও সতর্ক হয়েছেন। গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ের বৈসরনে জঙ্গিরা টার্গেট করেছিল দেশের নিরাপত্তার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের। গোয়েন্দাদের মতে, তারা দীর্ঘদিন ধরে এই ব্যাপারে তথ্য সংগ্রহ করে। এমনকী গোয়েন্দাদের কাছে খবর, পহেলগাঁওয়ে জঙ্গিদের টার্গেটে ছিলেন তিন বিচারকও। তাঁদের মধ্যে অন্তত একজন অন্ধ্রপ্রদেশের। তিন বিচারকের পরিবার একসঙ্গে বৈসরনে গেলেও তাঁরা কিছুক্ষণের জন্য গাড়ি থেকে নেমে জায়গাটি দেখে অন্য জায়গায় চলে যান। তাই তাঁদের উপর জঙ্গিরা হামলা চালাতে পারেনি।
এর মধ্যেই পাক জঙ্গি সংগঠন লস্করের ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’-এর পক্ষে ‘কাশ্মীর রেজিস্ট্যান্স’ হুমকি দিয়ে দাবি করে যে, পহেলগাঁওয়ের জঙ্গি হানার ঘটনা দিল্লি ও দিল্লির সমর্থকদের জন্য ‘ঘুম থেকে তোলার অ্যালার্ম’। জঙ্গিদের দাবি, পর্যটক ছাড়াও নিরাপত্তার সঙ্গে যুক্ত একাধিক কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা, নৌসেনা, অন্য সরকারি আধিকারিকদের টার্গেট করা হয়েছিল। এই কেন্দ্রীয় এজেন্সির লোকেদের দিল্লি পর্যটনের আড়ালে কাশ্মীর উপত্যকার অবস্থা জেনে রিপোর্ট করার জন্য পাঠায়, এমনই দাবি তোলে জঙ্গিরা।
এ ছাড়াও জঙ্গিরা তাদের অন্যান্য দাবিও সামনে নিয়ে আসে। গোয়েন্দাদের সূত্র জানিয়েছে, পহেলগাঁওয়ে জঙ্গিদের গুলিতে যাঁদের মৃত্যু হয়েছে, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা-সহ বিভিন্ন কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থার একাধিক আধিকারিক। তাঁদের মধ্যে এই রাজ্যের বাসিন্দা দু’জন। ঘটনার দিন বিভিন্ন কেন্দ্রীয় সংস্থার আরও আধিকারিক যে বৈসরনে বেড়াতে গিয়েছিলেন, সেই তথ্য গোয়েন্দাদের কাছে এসেছে। যে পর্যটকরা বেড়াতে যান, তাঁদের অনেক তথ্যই পর্যটন সংস্থা মারফত অথবা সরাসরি জম্মু ও কাশ্মীর সরকারকে আগাম জানাতে হয়। সেক্ষেত্রে অনেকেই নিজেদের পেশা ও পরিচয় গোপন রাখেন না। এমন সব তথ্য যে অনেকদিন ধরেই জঙ্গিরা সংগ্রহ করেছে, সেই ব্যাপারে গোয়েন্দারা নিশ্চিত।