আজকাল ওয়েবডেস্ক: দিঘা মানেই কাছে-পিঠের অন্যতম ছুটির গন্তব্য। এতদিন সমুদ্র স্নান আর সন্ধ্যায় সমুদ্রের পাড়ে বসে ঢেউ দেখাই ছিল পর্যটকদের মূল আকর্ষণ। ফলে অধিকাংশ পর্যটক এক বা দু'দিনের মধ্যে ভ্রমণ শেষ করতেন। এখানে আছে প্রায় হাজারের কাছাকাছি হোটেল ও রিসর্ট। তবে এবার পরিস্থিতি বদলাতে চলেছে। দিঘার নতুন আকর্ষণ 'জগন্নাথধাম' উদ্বোধনের মুখে। ইতিমধ্যে এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে পর্যটন শিল্পে।
দিঘার বিভিন্ন হোটেল ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, মে মাসের শুরু থেকেই হোটেল বুকিং বেড়েছে। বহু পর্যটক এবার এক-দু’দিন নয়, তিন থেকে চার দিন দিঘায় থাকার পরিকল্পনা নিয়ে বুকিং করছেন। দেশের নানা প্রান্ত থেকেও বুকিং আসছে। এর ফলে হোটেল মালিকদের পাশাপাশি স্থানীয় বাজারের ব্যবসায়ীরাও খুশি। মাদুর, শাঁখ, জামাকাপড়, খাবারের দোকান, গিফট আইটেম, ছোট-বড় রেস্টুরেন্ট — সবার মুখেই এখন হাসি।
দিঘায় হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক টুকুন চক্রবর্তী জানিয়েছেন, 'জগন্নাথধাম চালু হলে দিঘার পর্যটন শিল্পে এক নতুন দিগন্ত খুলবে।'
হোটেল ম্যানেজার শক্তিপদ জানা বললেন, 'বুকিং ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। মে মাসে ভীষণ চাপ থাকবে বলে মনে হচ্ছে।' পর্যটক রঞ্জিত মজুমদার জানিয়েছেন, 'জগন্নাথধাম দর্শনের জন্য এবার দিঘায় অতিরিক্ত একদিন থাকব।' ফোটো ব্যবসায়ী অসীমকুমার চন্দ্র বলেন, 'আগে দিনে দিনে ব্যবসা হত, এখন সারা বছর চলবে বলে মনে হচ্ছে।' তুলনায় ছোট দোকানের মালিক মিলন সিং বলেন, 'পর্যটক বাড়লে আমাদেরও রোজগার বাড়বে।'
মেটিয়াবুরুজ থেকে আসা পর্যটক সমিরুদ্দিন খানদার এবং ঈস্নু আলা বিবি জানিয়েছেন, 'জগন্নাথধাম দেখতে আর সমুদ্র স্নান করতে এসেছি, খুব আনন্দ লাগছে।' শাঁখ ব্যবসায়ী প্রসেনজিৎ রায় এবং ব্যাগ-মাদুর ব্যবসায়ী পরিতোষ সামন্ত বলছেন, 'এখন থেকেই বিক্রি বাড়তে শুরু করেছে।'
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মন্দির উদ্বোধনের দিন অর্থাৎ ২৯ ও ৩০ এপ্রিল দিঘা শহরে গাড়ি প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকবে। বাইপাস দিয়ে যান চলাচল হবে। ওই দু’দিন পর্যটকরা বাইরে থেকেই মন্দির দর্শন করতে পারবেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। হোটেল ও দোকানগুলিকেও আলো দিয়ে সাজাতে বলা হয়েছে।
আজ হোটেল মালিক ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে প্রশাসনের একটি বৈঠক রয়েছে। সেখানেই পর্যটকদের সুবিধার্থে অতিরিক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।ইতিমধ্যে জগন্নাথধামে শুরু হয়েছে মন্ত্র পাঠ। ২৯ ও ৩০ এপ্রিল মহাযজ্ঞ এবং প্রাণ প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে জগন্নাথ ধামের উদ্বোধন হবে। দিঘা এখন আলোয় সেজে প্রস্তুত নতুন রূপে। পর্যটকদের স্বাগত জানানোর জন্য।