• গভীর রাতে কাড়বে রুটিরুজি! উচ্ছেদ আতঙ্কে কাঁটা হকাররা, শ্রীরামপুর স্টেশনে পালটা তৈরি রেলও
    প্রতিদিন | ২৭ এপ্রিল ২০২৫
  • সুব্রত বিশ্বাস: এক তরফের হাতিয়ার হাই কোর্টের নির্দেশ, অন‌্য তরফের রুটিরুজির লড়াই। শনিবার সারাদিনই এনিয়ে সরগরম রইল শ্রীরামপুর স্টেশন চত্বর। স্টেশন চত্বর থেকে গভীর রাতেই হকারদের সরিয়ে দেওয়ার কাজ শুরু হওয়ার কথা। উচ্ছেদের প্রতিবাদে এদিন সকাল থেকেই মিটিং মিছিল করে তৃণমূল কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠন।

    শ্রীরামপুর স্টেশনের উন্নয়নে বেআইনি দখলদার উচ্ছেদ জরুরি বলে জানিয়েছে রেল। দখল উচ্ছেদেক পরিকল্পনা নিয়ে নোটিস দিয়েছিল রেল। এরপর হাই কোর্টে আবেদন করলেও হকাররা সমর্থন পাননি।শনিবার রাত বারোটার পর উচ্ছেদের পরিকল্পনা নেয় রেল। শনিবার সকাল থেকে হাই কোর্টের নির্দেশ নিয়ে রেল অভিযানের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। ডিভিশনের সব আরপিএফ পোস্টের থেকে আনা হয় শতাধিক বাহিনী। ইঞ্জিনিয়ারিং কর্মী ও কমার্শিয়াল কর্মীরা সকাল থেকেই স্টেশনের দপ্তরে হাজির হন।

    স্টেশন চত্বরে তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের উচ্ছেদ বিরোধী সভায় জড়ো হন কয়েকশো হকার ও তাঁদের পরিবার। প্রতিবাদ সভায় দোলা সেন ছাড়াও ছিলেন বিধায়ক অরিন্দম গুঁইন, জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সহ সভাপতি অন্বয় চট্টোপাধ‌্যায়, শহর সভাপতি সন্তোষ সিং-সহ অন‌্যান‌্য নেতৃবৃন্দ। অন্বয় দাবি করেছেন, পঞ্চাশ বছরের বেশি ধরে স্টেশন ও চত্বরে চায়ের দোকান, মাছের দোকান ও অন‌্যান‌্য সামগ্রী বিক্রি করে সংসার চালান হকাররা। তাঁদের স্টেশনের পাশেই রেলের জায়গায় পুনর্বাসন দেওয়া হোক। অন্যথায় প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে। দলের শ্রমিক সংগঠনের সভানেত্রী দোলা সেন বলেন, “আমরা উন্নয়নের স্বার্থে আছি। তবে পুনর্বাসন ছাড়া হকার উচ্ছেদ করা চলবে না। প্রয়োজনে আমরা সবরকম প্রতিবাদ গড়ে তুলব।”

    বেলা যত গড়িয়েছে, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে দু’পক্ষের রক্তচাপও। দিনভর স্টেশন থেকে সরেননি কোনও হকার-প্রতিবাদী। রাতের অপেক্ষায় প্রহর গুণতে থাকেন তারা। দেড় হাজার মানুষের খাবার তৈরি হয় স্টেশনের নিচেই। রেলকর্মীরাও একইভাবে অনড় থেকেছে তাঁদের পরিকল্পনা নিয়ে। বিকেল থেকেই স্টেশনে জড়ো হয়েছে আরপিএফ, আইওডব্লু, বাণিজ‌্য বিভাগের কর্মীরা। আনা হয় জেসিবি মেশিনও। ট্রেন চলাচল একেবারে স্তব্ধ হয়ে গেলেই শুরু হবে উচ্ছেদ কর্মসূচি। উপস্থিত থাকবেন ম‌্যাজিস্ট্রেটও। পূর্ব রেলের আরপিএফের আইজি পরমশিব জানান, “পরিস্থিতি বিচার করেই উচ্ছেদে হাত দেওয়া হয়। বাধা পেলেও পিছিয়ে আসার কোনও কারণ নেই। আজ বা কাল, উচ্ছেদ হবেই যাত্রী ও উন্নয়নের স্বার্থে।”
  • Link to this news (প্রতিদিন)