পুলিশকে বিভ্রান্ত করতে ছক, খ্যাপানো হয় গ্রামবাসীদের! মালদহে পাহারাদার ‘খুনে’ গ্রেপ্তার ২
প্রতিদিন | ২৭ এপ্রিল ২০২৫
বাবুল শেখ, মালদহ: সেকেন্দারপুরে রাতে গ্রাম পাহারা দেওয়ার সময় যুবক ‘খুনে’র ঘটনায় দু’জনকে গ্রেপ্তার করল ইংলিশবাজার থানার পুলিশ। মঙ্গলবার রাতে দুষ্কৃতীদের ধারালো অস্ত্রের কোপে খুন হয়েছিলেন শিবু ওরফে নিমাই মণ্ডল। হামলায় আরও দু’জন জখম হন। সেই ঘটনার তদন্তে নেমেই পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে দু’জনকে। ভুলবশত ওই ব্যক্তিকে তারা ‘খুন’ করেছিল। সেই কথাই প্রাথমিকভাবে পুলিশের কাছে তারা স্বীকার করেছে। তেমনই দাবি তদন্তকারীদের।
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত দুই যুবকের নাম বিশ্বজিৎ রবিদাস ও উত্তম ঘোষ। তাদের বাড়ি সেকেন্দারপুর এলাকাতেই। মঙ্গলবার রাতে ‘খুনে’র ঘটনার পর থেকেই পুলিশ তথ্য খুঁজতে শুরু করেন। সেই সূত্র ধরেই গ্রেপ্তার করা হয় এই দু’জনকে। জেরায় খুনের কথা স্বীকার করেছে তারা, এমন দাবি পুলিশের। তবে ধৃতদের বক্তব্যে হতবাক হয়েছেন তদন্তকারীরা। জেরায় ধৃতরা নাকি দাবি করেছে, শিবুকে খুনের উদ্দেশ্য তাদের ছিল না। ভুলবশত ওই খুন হয়ে গিয়েছে। শিবুকে বাঁচানোর জন্য গিয়েছিলেন সূর্য মণ্ডল ও আরও এক গ্রামবাসী। তাঁদের উপরেও একইভাবে হামলা চালানো হয়েছিল।
এদিন পুলিশ দাবি করেছে, খুনের ঘটনার পর অভিযুক্তরাই ঘটনার মোড় ঘোরাতে চেয়েছিল। তারাই গ্রামবাসীদের ভুল বোঝায়। পরের দিন সকালে গ্রামবাসীদের সঙ্গে নিয়ে পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখানো হয়। মালদহ জেলা পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, ধৃতরা ঘটনার তদন্তে বাধা ও ব্যাহত করার ষড়যন্ত্র করেছিল। বুধবার রাস্তা অবরোধের পাশাপাশি পুলিশের উপর পাথর ছোড়ার পরিকল্পনাও তাদের মস্তিস্কপ্রসূত। সেই কথা জানানো হয়েছে। কিন্তু কার উপর হামলার পরিকল্পনা ছিল? ওই এলাকায় রাতে কী করতে গিয়েছিল ওই দু’জন? সেই বিষয়ে কোনও আলোকপাত করেনি পুলিশ।
মঙ্গলবার রাতের ওই খুনের পর বুধবার ওই এলাকা প্রবল উত্তেজনা ছড়িয়েছিল। পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে ওই দিন সেকেন্দারপুরে মালদহ-মানিকচক রাজ্য সড়ক অবরোধ করেন গ্রামবাসীরা। অবরোধ তুলতে গিয়ে আক্রান্ত হয় পুলিশ। জনতা-পুলিশ খণ্ডযুদ্ধ হয়। অভিযোগ, পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ছোড়ে উত্তেজিত জনতা। পথচলতি গাড়ি ভাঙচুর করা হয় বলেও অভিযোগ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটাতে বাধ্য হয়। দীর্ঘ প্রায় আট ঘণ্টা ধরে অবরোধ চলে। বেশ কয়েকজনকে আটক করে পুলিশ পরে পরিস্থিতি সামাল দেয়। এই সব কিছুই ধৃতদের মস্তিস্কপ্রসূত বলে পুলিশের দাবি। এদিন ধৃতদের মালদহ আদালতে তোলা হয়। ধৃতদের পাঁচদিনের জন্য পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।