• মাঝরাতে চলন্ত মালগাড়ির তেলের ট্যাঙ্কারে আগুন!
    বর্তমান | ২৭ এপ্রিল ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: মাঝরাতে চলন্ত মালগাড়িতে তেলের ট্যাঙ্কারে আগুন! গেটম্যানের তৎপরতায় ভয়াবহ দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা। শুক্রবার রাত দেড়টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে জলপাইগুড়ি রোড ও রানিনগর স্টেশনের মাঝে। এ ঘটনায় রেলের কর্মীদের পাশাপাশি এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে প্রবল আতঙ্ক ছড়ায়। 

    স্থানীয় ১৩ নম্বর গেটের রক্ষী উত্তম বর্মন প্রথম ট্যাঙ্কারে আগুনের ফুলকি দেখতে পান। সঙ্গে সঙ্গে তিনি মালগাড়ির গার্ডকে লাল সঙ্কেত দেখান। গেটম্যানের সঙ্কেত পেয়ে দাঁড়িয়ে যায় পণ্যবাহী ট্রেনটি। খবর যায় জলপাইগুড়ি রোড স্টেশন মাস্টারের পাশাপাশি রেলের কন্ট্রোল রুমে। আগুনের ফুলকি দেখা যাওয়া ট্যাঙ্কারটিকে ওয়াগন থেকে দ্রুত বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হয়। খবর পেয়ে জলপাইগুড়ি রোড স্টেশন থেকে ঘটনাস্থলে পৌঁছন আরপিএফ কর্মীরা। সঙ্গে থাকা ফায়ার এক্সটিংগুইশার দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন তাঁরা। কিন্তু তাতে তেলের ট্যাঙ্কারের আগুন নেভানো সম্ভব হচ্ছিল না। এরইমধ্যে চলে আসে দমকল বাহিনী। তবে দুর্গম এলাকায় ট্রেনটি দাঁড়িয়ে যাওয়ায় তাদের ঘটনাস্থলে পৌঁছতে যথেষ্ট বেগ পেতে হয়। শেষমেশ দমকল বাহিনীর চেষ্টায় ট্যাঙ্কারের আগুন নেভে। 

    এরপর ওই ট্যাঙ্কারটিকে ফের ওয়াগনের সঙ্গে জুড়ে জলপাইগুড়ি রোড স্টেশনে আনা হয়। সেখানে ট্যাঙ্কারটিতে কোথাও লিক রয়েছে কি না তা ভালোভাবে পরীক্ষা করে দেখেন দমকলকর্মীরা। কিন্তু তেমন কিছু না মেলায় দমকলের ছাড়পত্র পেয়ে ওয়াগনটি অসমের দিকে রওনা হয়ে যায়। তবে তেল ভর্তি ট্যাঙ্কারটির ঢাকনা খুলে সেখানে আগুন ধরে যায় বলে দমকল সূত্রে খবর। 

    উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কপিঞ্জলকিশোর শর্মা বলেন, শুক্রবার রাত ১টা ২০ মিনিট নাগাদ ওয়াগনটি রানিনগর পার করার পরই তেলভর্তি একটি ট্যাঙ্কারে আগুনের ফুলকি দেখা যায়। সঙ্গে সঙ্গে ট্যাঙ্কারটিকে ওয়াগন থেকে বিচ্ছিন্ন করে আগুন নেভানোর কাজ শুরু হয়। রাত ৩টে ১৫ মিনিট নাগাদ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যায়। ওই ঘটনায় অবশ্য কেউ হতাহত হননি। কীভাবে ট্যাঙ্কারটিতে আগুন লাগল, তার তদন্ত শুরু করেছে রেল। 

    জলপাইগুড়ি রোড স্টেশনে কর্তব্যরত আরপিএফের আধিকারিক বিপ্লব দত্ত বলেন, খবর পাওয়ার পরই আমরা অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছই। আমাদের কাছে থাকা ফায়ার এক্সটিংগুইশার দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করি। কিন্তু তা দিয়ে আগুন নেভানো সম্ভব হচ্ছিল না। এরই মধ্যে দমকল বাহিনী চলে আসে। তারাও আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে। বেশ কিছুক্ষণ পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। তাঁর দাবি, চলন্ত মালগাড়িতে কীভাবে ওই তেলের ট্যাঙ্কারে আগুন লাগল বোঝা যাচ্ছে না। 

    জলপাইগুড়ি দমকলকেন্দ্রের ইনচার্জ রামেশ্বর পান্ডে বলেন, আমরা গিয়ে দেখি, ট্যাঙ্কারের ঢাকনা খোলা। সেখান থেকে আগুনের ফুলকি দেখা যাচ্ছে। অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে আমরা ওই আগুন নিভিয়েছি। দ্রুত ওই আগুন নেভানো সম্ভব না হলে বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারত বলে মনে করছেন দমকল কর্মীরা।  নিজস্ব চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)