• দুই দিন পর খাদানে তলিয়ে যাওয়া ২ ছাত্রের দেহ উদ্ধার
    বর্তমান | ২৭ এপ্রিল ২০২৫
  • সংবাদদাতা, মেদিনীপুর: দু’দিন পর শনিবার দুপুরে খড়্গপুর শহরে পরিত্যক্ত মোরাম খাদানের জলে তলিয়ে যাওয়া দুই ছাত্রের মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। মৃতদের নাম উমাশঙ্কর সিং চৌহান(১৬) ওরফে আকাশ ও সঞ্জীব রাও(২১)। আকাশের বাড়ি নিমপুরা হরিজনবস্তি ও সঞ্জীবের বাড়ি নিমপুরা বোরিং বস্তি এলাকায়। গত বৃহস্পতিবার আরামবাটি এলাকায় স্নান করতে নেমে পরিত্যক্ত মোরাম খাদানের জমা জলে তলিয়ে যায় তারা। 

    অভিযোগ, রাস্তা তৈরির সময় রেলের ঠিকাদার মোরাম তুলে নেওয়ায় বিশাল এলাকাজুড়ে প্রায় ৪০ ফুট গভীর গর্ত হয়ে রয়েছে। সেখানে জল জমে ঝিলের আকার নিয়েছে। সেই জলে স্নান করতে নেমেছিল দুই ছাত্র। বাকি দুই সঙ্গী পাড়ে দাঁড়িয়েছিল। সাঁতার না জানায় জলে নেমে দু’জন জলে তলিয়ে যায়। দুই সঙ্গীর চিৎকার করলেও কারও সাড়া মেলেনি। পরে তারা এলাকার বাসিন্দাদের দেয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন পরিবারের লোকজন। আসে পুলিসও। ওই দিন সন্ধ্যা থেকে দমকল বাহিনী, অসামরিক প্রতিরক্ষা দপ্তরের কর্মী ও ডুবুরি নামিয়ে তাদের উদ্ধারের চেষ্টা চালায়। শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনও খোঁজ মেলেনি। এদিন সকাল থেকে ফের চেষ্টা চালানো হয়। আরও একটি ডুবুরির দল আসে। এলাকার বাসিন্দারাও ভিড় জমান। পুরসভার চেয়ারপার্সন কল্যাণী ঘোষ বলেন, দুপুর দেড়টা নাগাদ তাদের দেহ উদ্ধার হয়। পুলিস মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে পাঠায়। 

    এদিন মৃতদেহ উদ্ধারের পর পরিবারের লোকজন কান্নায় ভেঙে পড়েন। সকালে রেলের একটি গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভও দেখান স্থানীয় বাসিন্দারা। আকাশের বাবা দীপক চৌহানও মোরাম খাদান নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, আমার ছেলে স্নান করতে গিয়েছিল ঠিকই। কিন্তু ওখানে যারা এভাবে গর্ত করে রাখল তারাও দায় এড়াতে পারে না। একমাত্র ছেলেকে হারালাম। বাম নেতা অনিল দাস বলেন, কারা ওখানে অবৈধভাবে মোরাম তুলে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে, তার তদন্ত হওয়া দরকার। তাদের জন্যই দুই তরতাজা ছেলের প্রাণ চলে গেল। ওই এলাকা ঘিরে রাখা উচিত ছিল।
  • Link to this news (বর্তমান)