সল্টলেকে ২৫ লক্ষ চুরিতে অভিযুক্ত ৩ দুষ্কৃতী গ্রেপ্তার ট্যাংরায়, অধরা তিন
বর্তমান | ২৭ এপ্রিল ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: সল্টলেকের একটি অফিসে দুঃসাহসিক চুরির ঘটনা ঘটেছিল। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তার কিনারা করল বিধাননগর পুলিস। শনিবার কলকাতার ট্যাংরা থানা এলাকা থেকে তিন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ধৃতদের নাম, জুমরাতি মোল্লা, রহিম আলি ও রিঙ্কু শেখ। যদিও এই ঘটনায় জড়িত তিনজন এখনও ফেরার।
ধৃতদের জেরা করে চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে বিধাননগর কমিশনারেট। জানুয়ারি মাসে একটি চুরির ঘটনায় হাজতবাস হয় এই তিনজনের। ফেব্রুয়ারিতে তারা জামিন পায়। তারপর ফের চুরি শুরু করে। এসময় চার-চারটি চুরির ঘটনা ঘটিয়েছে তারা।
সল্টলেকের ঘটনাটির বিষয়ে জানা গিয়েছে, বুধবার রাত দেড়টা থেকে দু’টোর মধ্যে চুরি করতে ঢুকেছিল তারা। জিসি ব্লকে রাস্তার ধারে ১৮৪ নম্বর বাড়ি। দোতলা বাড়িটির নীচের তলায় একটি অফিস রয়েছে। সেটি ডিম বন্টনকেন্দ্র। অফিসে প্রচুর নগদ টাকা রাখা থাকে। সে খবর কোনওভাবে ছিল অভিযুক্তদের কাছে। দলটি দমদম, সল্টলেক সহ বিভিন্ন এলাকায় বাইকে করে ঘোরে। রেইকি চালায়। কোন বাড়ি রাতে ফাঁকা থাকে, কোথায় নগদ কিংবা সোনার গয়না থাকতে পারে সে সম্পর্কে খোঁজখবর নেয়। তারপর অপারেশনে নামে। বুধবার রাতে দু’টি বাইক চালিয়ে পাঁচজন আসে সল্টলেকের ওই অফিসে। সেখান থেকে টাকা হাতিয়ে পালানোর চেষ্টার সময় আওয়াজ হয়। শব্দ শুনে বেরিয়ে আসেন কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা। তাঁরা চোর চোর করে চিৎকার করেন। ওখানে তখন কর্তব্যরত ছিলেন দুই সিভিক ভলান্টিয়ার। তাঁরা ধাওয়া করেন পাঁচ দুষ্কৃতীকে। পালাতে পালাতে পিস্তল উঁচিয়ে সিভিকদের ভয় দেখায় অভিযুক্তরা। তারপর হাওয়া হয়ে যায়।
ডিম বণ্টন সংস্থাটি বিধাননগর দক্ষিণ থানায় অভিযোগ দায়ের করে। তদন্ত শুরু করে পুলিস। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে বাইকের নম্বর প্লেট চিহ্নিত হয়। তারপর শনিবার বাইপাস লাগোয়া ট্যাংরা থানা এলাকায় অভিযান চালায়। এবং ঘটনায় জড়িত সন্দেহে তিনজনকে পাকড়াও করে। তবে এখনও পর্যন্ত খোয়া যাওয়া নগদ উদ্ধার করতে পারেনি পুলিস। বিধাননগর কমিশনারেট জানিয়েছে, এই ঘটনায় যুক্ত তিন অভিযুক্ত এখনও ফেরার। তাদের মধ্যে দু’জন সেদিনের অপারেশনে ছিল। আর একজন এই অপারেশনের ছক কষেছিল কিন্তু ঘটনাস্থলে যায়নি। সবাই দ্রুত গ্রেপ্তার হবে।
ধৃতদের ব্যাকগ্রাউন্ড যাচাই করতে গিয়ে পুলিস দেখেছে, জানুয়ারি মাসেই সল্টলেক উত্তর থানা এলাকার একটি বাড়ি থেকে গয়না চুরি করেছিল এই তিন যুবক। পাঁচদিনের মাথায় তারা গ্রেপ্তারও হয়। এরপর আদালতে জামিন পায়। কিন্তু মোটেও সংযত হয়নি। উল্টে চুরির অভিযান আরও বাড়িয়ে দেয়। এরপর ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত দমদম, বিধাননগর দক্ষিণ, সোনারপুর এবং আবার বিধাননগর দক্ষিণ থানা এলাকায় দুঃসাহসিক চুরির ঘটনা ঘটায়। এদের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট থানাগুলিকে সতর্ক করা হয়েছে।