ধাপার জঞ্জালের স্তূপে প্রায় প্রতিদিনই আগুন লাগার ঘটনা আটকাতে মাটির প্রলেপ দেওয়া যাবে না— এই কথা জানালেন কলকাতা পুরসভার জঞ্জাল অপসারণ বিভাগের মেয়র পারিষদ দেবব্রত মজুমদার। সম্প্রতি পুরসভার মাসিক অধিবেশনে ৪৮ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলার বিশ্বরূপ দের প্রশ্নের উত্তরে এ কথা জানান তিনি।
ধাপায় কোনও দুর্ঘটনা যাতে না-ঘটে, তার জন্য প্রতিদিনের জড়ো করা জঞ্জালের উপরে ছ’ইঞ্চির মাটির প্রলেপ দেওয়ার নিয়ম মানা হয় কি না, সে প্রশ্ন তুলেছিলেন বিশ্বরূপ। দেবব্রত জানান, শুরু থেকে এই নিয়ম মানা হয়নি। তাই এখন ধাপা যে পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে রয়েছে তাতে নতুন করে এই নিয়ম মানতে গেলে বিপদ হতে পারে। এই নিয়ম এখন মানা সম্ভব নয়।
পুরসভার তথ্য বলছে, ধাপায় এখন রোজ গড়ে পাঁচ হাজার টন জঞ্জাল জমা হয়। এর মধ্যে ৫০০ টন আসে সল্টলেক, নিউ টাউন, পানিহাটি এবং হাওড়া থেকে। সংশ্লিষ্ট বিভাগের আধিকারিকদের যুক্তি, এই বিপুল পরিমাণ জঞ্জালের উপরে নিয়ম করে মাটির প্রলেপ দেওয়া সম্ভব নয়। বিশ্বরূপ জানান, এই জঞ্জাল থেকে মিথেন গ্যাস তৈরি হয়। যা সহজদাহ্য। এর থেকে বিস্ফোরণ হতে পারে।
তাই এই বিষয়ে পুরসভা কতটা সতর্ক, তিনি জানতে চান। দেবব্রত জানান, নিয়ম করে ধাপার জঞ্জালে জল দেওয়া হয়। জঞ্জাল ভেজা থাকায় আগুন লাগা বা বিস্ফোরণের মতো বিপদের সম্ভাবনা কম। ধাপায় নিয়ম করে সয়েল টেস্ট হয় কি না, সেই তথ্যও জানতে চান বিশ্বরূপ। উত্তরে দেবব্রত বলেন, ‘নিয়ম করে সয়েল টেস্ট হয় না। তবে বায়ো মাইনিং করা হচ্ছে।’
পুরসভার জঞ্জাল অপসারণ বিভাগের আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, ধাপাকে আরও নিরাপদ করে তোলার জন্য সংলগ্ন এলাকায় একটি জমির খোঁজ করা হচ্ছে। সেই জমির ব্যবস্থা করতে পারলে ধাপা নিয়ে অনিশ্চয়তা অনেকটাই কাটবে। হাওড়ার বেলগাছিয়া ভাগাড়ের মতো ধাপার অবস্থা যাতে না-হয়, তার জন্য নিয়ম করে নজরদারি রয়েছে।
উৎসস্থলেই জঞ্জাল পৃথকীকরণ ব্যবস্থা পুরোদমে কার্যকর করা গেলে ধাপার বিপদ অনেকটা কমবে বলে মেয়র পারিষদ দাবি করেন। তিনি এই ব্যাপারে কলকাতার ১৪৪ জন কাউন্সিলারের সাহায্য চান।