এই সময়, বর্ধমান: সে লিউকিমিয়ায় আক্রান্ত। ইলেভেনের ফিজ়িক্যাল এডুকেশন পরীক্ষার দিন কেমো নিতে হাসপাতালে গিয়েছিল সে। যে কারণে সে দিনের নির্ধারিত পরীক্ষাও দিতে পারেনি। স্কুলের কাছে পরে পরীক্ষায় বসার আবেদন জানালেও বর্ধমান শহরের মহারানি অধিরানি বালিকা বিদ্যালয় তাতে সাড়া দিচ্ছে না বলে অভিযোগ।
স্কুলের তরফে জানানো হয়েছে, উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের নিয়ম অনুযায়ীই পরীক্ষার দিন স্থির হয়েছিল। সে দিন ওই ছাত্রী উপস্থিত না-থাকায় নতুন করে পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। যদিও কাউন্সিল জানিয়েছে, মানবিকতার খাতিরে স্কুল ওই ছাত্রীর পরীক্ষা নিতেই পারে।
প্রধান শিক্ষিকা অপরাজিতা সরকারের কাছে বারবার আবেদন জানানোর পরেও অপমানিত হয়ে ফিরতে হয়েছে বলে অভিযোগ ছাত্রীর পরিবারের। দিন কয়েক আগে এলাকার কাউন্সিলার সাহাবুদ্দিন খান প্রধান শিক্ষিকার সঙ্গে দেখা করে একই অনুরোধ জানান। কিন্তু লাভ হয়নি। নিম্নবিত্ত পরিবারের ওই ছাত্রীর বাবা শেখ আজিজ় টোটো–চালক। কষ্ট করে মেয়ের চিকিৎসার খরচ বহন করছেন। তারপরেও স্কুলের তরফে সহযোগিতা না পাওয়ায় মেয়েটি পড়াশোনা ছেড়ে দিতে পারে বলে তার পরিবার সূত্রে খবর।
সংসদের যুগ্ম আহ্বায়ক অতনু নায়েক বলেন, ‘বিষয়টি জানতে পেরে প্রধান শিক্ষিকাকে ফোন করেছিলাম। ওঁকে অনুরোধ করেছি পরীক্ষা নেওয়ার জন্য। সমস্যা হলে আমি দায়িত্ব নেব। কিন্তু উনি কোনও কথা শুনতেই রাজি নন।’ সংসদের ডেপুটি ডিরেক্টর রাজীব বিশ্বাসের মন্তব্য, ‘কাউন্সিলের তরফে নির্দিষ্ট তারিখের মধ্যে পরীক্ষা শেষের কথা বলা হয়েছিল। এখন বিষয়টি স্কুলেরই হাতে। স্কুল চাইলেই সমস্যার সমাধান করতে পারে।’
কী বলছেন প্রধান শিক্ষিকা অপরাজিতা সরকার?
তাঁর বক্তব্য, ‘আমরাও চাই, ওই ছাত্রী পরীক্ষা দিক। পরীক্ষার দিন ওকে ফোন করেছিলাম, কিন্তু সে আসেনি। বাধ্য হয়েই ওকে অনুপস্থিত দেখাতে হয়েছে। এখন পোর্টালে ওর নাম তুলতে গেলেই ফেল দেখাচ্ছে। কাউন্সিলে গিয়েছিলাম। তারা ওর নাম পোর্টালে তোলার ব্যাপারে কোনও নির্দেশ দিচ্ছে না। সেখানেই সমস্যা হচ্ছে।’