এই সময়, সিউড়ি: দলীয় কার্যালয়ের দখলদারিকে কেন্দ্র করে ব্যাপক গোলমাল বাধল অনুব্রত (কেষ্ট) মণ্ডল ও কাজল শেখের অনুগামীদের মধ্যে। শনিবার এই অশান্তিকে কেন্দ্র করে কার্যত রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় সিউড়ি ২ নম্বর ব্লকের পুরন্দরপুর এলাকা। চলে ইট বৃষ্টি ও ভাঙচুর। দু’পক্ষেরই বেশ ক’জনের মাথা ফেটেছে বলে খবর৷
ক’দিন ধরেই তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রতর গোষ্ঠীর সঙ্গে জেলা পরিষদের সভাধিপতি ফয়জুল হক ওরফে কাজল শেখের গোষ্ঠীর মধ্যে গোলমাল চলছে সিউড়ি ২ নম্বর ব্লকে৷ জেলা পরিষদের পূর্ত-কর্মাধ্যক্ষ নুরুল ইসলাম ‘কাজল অনুগামী’ বলে পরিচিত। তিনি সিউড়ি ২ ব্লকে দলের সভাপতিও। অন্যদিকে, ব্লকের কার্যকরী সহ–সভাপতি অশ্বিনী মণ্ডলকে ‘অনুব্রত অনুগামী’ হিসেবে সকলে চেনেন। ওই ব্লক এবং অঞ্চলের দলীয় কার্যালয় কার দখলে থাকবে, তা নিয়েই কোন্দল৷ এ প্রসঙ্গে নাম না করে অনুব্রতকে নিশানা করেছিলেন নুরুল৷ অভিযোগ, তারপরেই পুরন্দরপুরে ব্লক সভাপতির দলীয় কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেন ‘অনুব্রত অনুগামীরা’৷
এই দখলদারির তরজাই শনিবার সংঘর্ষের চেহারা নেয়। চলে ইট বৃষ্টি, বাঁশ-লাঠি নিয়ে দাপাদাপি৷ দলীয় কার্যালয় ভাঙচুরও করা হয়৷
জানা গিয়েছে, নুরুল এ দিন তাঁর দলবল নিয়ে কার্যালয়ে যেতে গেলে বাধার মুখে পড়েন। অন্য গোষ্ঠীর লোকজন পাল্টা স্লোগান দিতে থাকে, নেতাকে লক্ষ্য করে ইট ছোড়া হয়। বিক্ষোভকারীদের বেশিরভাগেরই মুখ কাপড় দিয়ে ঢাকা ছিল। পরিস্থিতি নিমেষে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। আতঙ্কে বন্ধ হয়ে যায় পুরন্দরপুর বাজার। সিউড়ি থানার আইসি সঞ্চয়ন বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছয়৷ হাজির হয় কমব্যাট ফোর্সও৷ লাঠিচার্জ করে দু’গোষ্ঠীর লোকজনকে ছত্রভঙ্গ করে পুলিশ৷ ঘটনার পরে এলাকায় টহলদারি চলছে। দু’পক্ষের বেশ ক’জনকে আটক করা হয়েছে৷ পুলিশ সূত্রে খবর, একজনের কাছে আগ্নেয়াস্ত্র পর্যন্ত মিলেছে।
কী বলছেন বিবদমান দুই গোষ্ঠীর নেতারা? নুরুলের বক্তব্য, ‘আমাদের মধ্যে কোনও মতানৈক্য, বিভাজন ছিল না৷ সবটাই তৈরি করা হয়েছে। আজ সব ভাঙচুর করা হলো, লুটপাটও চলেছে । এটা মেনে নিতে পারছি না৷’ উল্টোদিকে অশ্বিনী বলেন, ‘আমরা দলীয় কার্যালয়ে বসে আলোচনা করছিলাম। তখনই নুরুলের নেতৃত্বে অসামাজিক কারকর্মে জড়িত লোকজন হঠাৎ চড়াও হয়৷ ইট–পাটকেল ছুড়তে শুরু করে৷ আগেও এমনটা হয়েছে।’