এই সময়, বেলডাঙা: কাজের সন্ধানে ওডিশায় গিয়ে চরম হেনস্থা ও নিগ্রহের মুখে পড়লেন মুর্শিদাবাদের বেলডাঙার কয়েক হাজার পরিযায়ী শ্রমিক। কাজ ফেলে বাড়ি চলে এসেছেন তাঁরা। গত ১৫ এপ্রিল রাজমিস্ত্রি হিসেবেসম্বলপুরে যান তাঁরা। কিন্তু কাজে যোগ দেওয়ার পরেই স্থানীয় ক’জন বাসিন্দা তাঁদের বেধড়ক মারধর করেন বলে অভিযোগ। প্রতি বছরই বেলডাঙা-১ ব্লকের বিভিন্ন পঞ্চায়েত এলাকার কয়েক হাজার পরিযায়ী শ্রমিক ওডিশায় রাজমিস্ত্রির কাজে যান।
এত দিন সমস্যা না হলেও ওডিশায় ক্ষমতা বদলের পরে গোল বাধছে বলে এঁদের অভিযোগ। বেলডাঙার ঝুনকা গ্রামের চাঁদ মহম্মদ বলেন, ‘গত ২০ এপ্রিল কাজের সময়েই নানচাকু, পিস্তল, চেন, রড, লাঠি হাতে ক’জন হাজির হয়ে আমাদের আধার কার্ড দেখতে চায়। কার্ড দিলে সেটা না দেখেই ছিঁড়ে ফেলে। এর পরে থানায় নিয়ে যাওয়ার কথা বলে মারতে মারতে রাস্তা দিয়ে লম্বা লাইন করিয়ে হাঁটিয়ে নিয়ে যায় আমাদের। সঙ্গে ‘জয় শ্রীরাম’ বলতে বাধ্য করা হয়। প্রাণভয়ে দু’হাত তুলে ‘জয় শ্রীরাম’ বলি।’
তাঁর অভিযোগ, এমন মারধর করা হয়েছে যে জয়নাল আবেদিন নামে এক শ্রমিক হাসপাতালে ভর্তি। গোটা ঘটনায় এই শ্রমিকরা এতটাই আতঙ্কিত যে পুলিশে অভিযোগ পর্যন্ত জানাতে পারেননি। মাড্ডা, বেনাদহ, ঝুনকা, বেগুনবাড়ি গ্রামে ফিরে আসা শ্রমিকদের চোখে-মুখে এখনও আতঙ্ক। শরীরে মারধরের দাগ। এঁদের সকলেই গত ২৩ এপ্রিল হাওড়াগামী ট্রেন ধরে শনিবার বাড়ি ফিরেছেন।
সেই দলে আছেন ইউসুফ আলি, শফিকুল ইসলামরা। তাঁদের কথায়, ‘এত দিন কাজে যাচ্ছি, কখনো কিছু হয়নি। কিন্তু ওডিশায় সরকার বদলের পরে শুরু হয়েছে গোলমাল। মুর্শিদাবাদ আর মুসলিম বুঝলেই শুরু করছে অত্যাচার। প্রাণ হাতে বাড়ি ফিরেছি।’ বেলডাঙার বিধায়ক মহম্মদ হাসানুজ্জামান বলেন, ‘ঘটনাটি খুব দুঃখজনক। ওডিশার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানাব।’