কেন্দ্রীয় নিয়মকে উড়িয়ে সীমান্তের জেলায় দেদার বিক্রি হচ্ছে ভারতীয় সেনার পোশাক। বিষয়টি নিয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। কারণ এই সেনার পোশাকেই কাশ্মীরের পহেলগামে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটেছিল। ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তেও যে এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটবে না, তার কোনও নিশ্চয়তা নেই বলে মনে করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
কৃষ্ণনগর পুলিশ লাইনের ঠিক উল্টোদিকেই এরকমই পাঁচ ছয়টি দোকান রয়েছে, যেখানে এই ধরনের পোশাক দেদার বিক্রি হচ্ছে। এই সব দোকানের সামনে ঝোলানো রয়েছে সেনার বিভিন্ন পোশাক। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে সেইসব দোকানের ছবি ভাইরালও হয়েছে। দৈনিক স্টেটসম্যানের পক্ষ থেকে এরকম একটি দোকানের মালিকের সঙ্গে কথা হয়। দোকানদারের নাম রতন সাহা। তিনি বলেন, আমাদের দোকানে শুধু রাজ্য পুলিশ এবং এনসিসি-র পোশাক পাওয়া যায়। সেনা বাহিনীর কোনও পোশাক পাওয়া যায় না। আমি শুধু এদেরকেই পোশাক বিক্রি করে থাকি। অন্য কেউ সাধারণ মানুষকে বিক্রি করে কিনা তা আমার জানা নেই। আমি নিজে কাপড় কাটিয়ে এই পোশাক বানিয়ে থাকি।’ দৈনিক স্টেটসম্যানের পক্ষ থেকে তাঁকে ফের প্রশ্ন করা হয়? ‘কীভাবে আপনারা বোঝেন, যাঁরা পোশাক কিনতে আসছেন, তাঁরা এনসিসি বা রাজ্য পুলিশের লোক?’
জবাবে রতন বলেন,’আমরা স্থানীয় চেনাজানা পুলিশের কাছেই পোশাক বিক্রি করে থাকি। আর স্কুলের যেসব ছেলেমেয়েরা এনসিসি-র প্রশিক্ষণ নেয়, তাদের কাছে পোশাক বিক্রি করি।’
এরপর ফের প্রশ্ন করা হয়, এই পোশাক যদি বাংলাদেশে পাচার হয়ে যায় এবং সেটা ব্যবহার করে সীমান্তে পহেলগামের মতো কোনও ঘটনা ঘটবে না, তার কী নিশ্চয়তা আছে? আপনাদের কাছে কি এই পোশাক বিক্রি করার জন্য সরকারের কোনও অনুমতিপত্র আছে?’ এই প্রশ্নের জবাবে রতন উপযুক্ত কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি।
প্রসঙ্গত সেনার পোশাক পরা নিষিদ্ধ আমজনতার! তারপরেও নিয়ম মানে না অনেকেই। এবার সেই সেনার পোশাকেই কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে হামলা চালিয়েছিল জঙ্গিরা। তারপর থেকেই নিষেধাজ্ঞা আরও কঠোর করা হয়েছে। কিন্তু সেই নিষেধাজ্ঞাকেও বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত জেলা নদিয়ায় দেদার বিক্রি হচ্ছে জলপাই রঙা ইউনিফর্ম। এই বিকিকিনি নিয়ে আতঙ্ক বাড়ছে। স্থানীয়দের আশঙ্কা, বাংলাদেশ সীমান্ত পেরিয়ে জেহাদিরা সেনার পোশাকে এলাকায় ছড়িয়ে পড়তে পারে। হামলাও চালাতে পারে। তাই তাদের দাবি, নজরদারি চালিয়ে বন্ধ করা হোক সেনার পোশাক বিক্রি।