আগামী ৩০ এপ্রিল দিঘায় নবনির্মিত ‘জগন্নাথ ধাম সংস্কৃতি চর্চা কেন্দ্র’-এর উদ্বোধন হবে। অক্ষয় তৃতীয়ায় জগন্নাথ মন্দিরে বিগ্রহের প্রাণপ্রতিষ্ঠা করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার আগে, ২৯ এপ্রিল হবে বিশেষ হোম-যজ্ঞ। সেই আয়োজনেও কার্যত সামনে আসছে ভাগাভাগির ছবি। মন্দিরের ভিতরে যজ্ঞ করবে ইসকন আর মন্দিরের বাইরে যজ্ঞ আয়োজনের যাবতীয় ভার পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের প্রতিনিধিদের।
বিশেষ যজ্ঞের দেরি থাকলেও প্রাথমিক হোম শুরুও হয়েছে। মন্দিরের ভিতরে কুণ্ড বানিয়ে শুক্রবার যজ্ঞ শুরু করেছেন ইসকনের পাঁচ পুরোহিত। বিকেলে মন্দিরের চারপাশে কীর্তন, গুরুপ্রণাম হয়েছে। কীর্তনে ইসকনের সহ-সভাপতি রাধারমণ দাস এবং পুরীর দয়িতাপতি একসঙ্গে ছিলেন। আর বৃহস্পতিবার সকাল থেকে পুরীর মন্দিরের প্রধান রাজেশ দয়িতাপতির উদ্যোগে পৃথক হোম-যজ্ঞের আয়োজন হয়েছে মন্দিরের বাইরে। অরুণস্তম্ভের পূর্ব দিকে তৈরি হয়েছে খড়ের ছাউনি। সেখানেই রয়েছে হোমকুণ্ড।
মন্দিরের সূচনাক্ষণে এমন পৃথক হোম-যজ্ঞের আয়োজনে বিস্মিত পুরোহিতদের একাংশ। বস্তুত, নতুন এই মন্দির পরিচালনার দায়িত্ব নিয়ে অনেক দিন ধরেই টানাপড়েন চলছে। এখানে পুজোর দাবি তুলেছিল তৃণমূল সমর্থিত ‘সনাতন ব্রাহ্মণ ট্রাস্ট’। তবে নবান্নের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দেন, মন্দিরের দায়িত্বে থাকবে ইসকন। এতে জেলার পুরোহিতদের একাংশ ক্ষুব্ধ। এরই মধ্যে জগন্নাথ দেবের অভিষেকের আগে ইসকন এবং পুরীর দয়িতাপতির উদ্যোগে পৃথক যজ্ঞের আয়োজনে প্রশ্ন উঠেছে।
ইসকনের সহ-সভাপতি রাধারমণ দাস মানছেন, “মন্দিরের ভিতরে দেবতা থাকবেন। এই হোম-যজ্ঞ আগামী ক’দিন চলবে। তবে মন্দিরের বাইরে পুরীর প্রধান রাজেশ দয়িতাপতির উদ্যোগে যজ্ঞ হচ্ছে।” আলাদা কেন? রাধারমণের জবাব, “মন্দিরে পাথরের বিগ্রহ এবং কাঠের মূর্তি থাকবে। আমরা পাথরের বিগ্রহের আর পুরীর দয়িতাপতি কাঠের মূর্তিতে প্রাণ প্রতিষ্ঠায় যজ্ঞ করছেন।” রাজেশ দয়িতাপতি বলেন, “আমরা আমাদের নিয়মে হোম-যজ্ঞ করছি। ওঁরা (ইসকন) ওঁদের মতো করছেন।”
তবে এই পৃথক হোম-যজ্ঞে সমস্যা দেখছেন না মন্দিরের ট্রাস্ট কমিটির সদস্য তথা জগন্নাথের মাসির বাড়ির (দিঘার সাবেক জগন্নাথ মন্দির) প্রধান পুরোহিত পূর্ণচন্দ্র নন্দ। তাঁর বক্তব্য, “অধিকন্তু ন দোষায়। ঈশ্বরের আরাধনাতেই সব আয়োজন।”