চারদিন পার। এখনও কোনও খোঁজ নেই ভারতীয় সেনা জওয়ান পূর্ণম কুমার সাউয়ের। বুধবার বিকেলে ডিউটির মাঝে ‘ভুল করে’ সীমান্ত পেরিয়ে তিনি পাকিস্তানে ঢুকে পড়েছিলেন। তার পর থেকে এখনও পাকিস্তানি সেনার কাছে বন্দি পূর্ণম। ছেলের কোনও খোঁজ না পাওয়ায় উৎকণ্ঠায় দিন কাটচ্ছে তাঁর পরিবারের। ভারতীয় সেনার বাড়িতে এসে তাঁকে ফিরিয়ে আনার আশ্বাস দিচ্ছেন সকলে। কিন্তু যতক্ষণ না ছেলেকে সামনে থেকে সুস্থ অবস্থায় দেখছেন কিছুতেই শান্ত হতে পারছেন না পূর্ণমের বাবা ভোলানাথ সাউ-সহ তাঁর পরিবার। রবিবার সন্ধ্যে গড়াতেই পূর্ণমের বাড়িতে এসে উপস্থিত হন বিজেপি নেতা অর্জুন সিং। সেখানে এসে পূর্ণমের বাবার সঙ্গে ফোনে কথা বলিয়ে দেন শুভেন্দু অধিকারীর।
ভারতীয় বিএসএফ জওয়ানের রিষড়ার বাড়িতে রবিবার সন্ধ্যায় যান বিজেপি নেতা অর্জুন সিং। সেখানে গিয়ে পূর্ণমকে দ্রুত বাড়িতে ফিরিয়ে আনার আশ্বাস দেন তিনি। সেই সঙ্গে বিএসএফ জওয়ানের বাবার সঙ্গে কথা বলিয়ে দেন শুভেন্দু অধিকারীর। তবে দুই বিজেপি নেতার সঙ্গে কথা বলার পরও যেন ছেলের চিন্তায় ঘুম আসছে না ভোলানাথ সাউয়ের। কাঁদতে কাঁদতে তিনি শনিবার ফোনে ডিজিকে জানিয়েছিলেন, ছেলের এই খবর শোনার পর থেকেই পূর্ণমের মা ও বৌ মাঝে মধ্যেই জ্ঞান হারাচ্ছেন। রবিবার বিজেপি নেতার সঙ্গে কথা বলার পর কী বললেন পূর্ণমের বাবা? ভোলানাথ সাউ বলেন, ‘আমাকে অর্জুন সিং বলেছেন, তাঁরা সব রকম ভাবে চেষ্টা করছেন আমার ছেলেকে তাড়াতাড়ি ফিরিয়ে আনার। আমি চাই, শুভেন্দু অধিকারী আমার বাড়িতে আসুক। তাতে আমার একটু মনোবল বাড়বে। তবে বাড়িতে যেই আসুক না কেন, আমি চাই আমার ছেলে যাতে ফিরে আসে।’
রবিবার অর্জুন সিংয়ের ফোন থেকে শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে কথা বলেন ভোলানাথ সাউ। পূর্ণমের বাড়ি থেকে বেরিয়ে অর্জুন সিং বলেন, ‘আমরা প্রথম দিন থেকে খবর নিচ্ছি। বিএসএফ জওয়ানের বাড়িতে এসে দেখি ওনারা আমার গ্রামের লোক। ভারত সরকার, প্রধানমন্ত্রী এই বিষয়টাকে খুব গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন। আমরা যোগাযোগ রাখছি। অভিনন্দন বর্তমানকে যেমন ফিরিয়ে আনা হয়েছিল, তেমনই পূর্নমকেও ফিরিয়ে আনা হবে।’
প্রসঙ্গত, শনিবার সন্ধ্যায় পূর্ণমের বাবা ভোলানাথ সাউয়ের বাড়িতে এসেছিলেন শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে এসে তাঁর সঙ্গে BSF-এর ডিজির কথা বলিয়ে দিয়েছিলেন কল্যাণ। এর পর রবিবার সকালে পূর্ণমের বাড়িতে আসে BSF-এর একটি টিম। এ দিকে সোমবারই পাঠানকোটের উদ্দেশে রওনা দিচ্ছেন পূর্ণমের পরিবার। তবে যতক্ষণ না ঘরের ছেলে ঘরে ফিরছে, ততক্ষণ যেন কিছুতেই শান্তি পাচ্ছে না তাঁর পরিবার।