বসল রুপোর মূর্তি, এবার বছরভর বোল্লা মায়ের দর্শন পাবেন ভক্তরা
বর্তমান | ২৮ এপ্রিল ২০২৫
সংবাদদাতা, পতিরাম: বছরে মাত্র চারদিন বালুরঘাটের ঐতিহ্যবাহী বোল্লা রক্ষাকালী মায়ের রূপ দর্শন করতে পারতেন ভক্তরা। বাকি সময়টা বোল্লা কালীর মূর্তি ছাড়াই পুজার্চনা হতো। তাই ভক্তদের আক্ষেপ ছিল। এবার সারা বছর বোল্লা রক্ষাকালী মায়ের রূপ দর্শনের সুযোগ করে দিল পুজো কমিটি। তিন কেজি ওজনের রুপোর মুখাবয়ব তৈরি করে স্থাপন করা হল রবিবার। ভিড় উপচে পড়ল ভক্তদের। এদিন দিনভর পুজার্চনা, মিষ্টান্ন ভোগ, যজ্ঞ ও বহিরাগত শিল্পীর ভক্তিমূলক গানে মেতে উঠলেন ভক্তরা।
মন্দিরের প্রধান পুরোহিত অরূপ চক্রবর্তী (ভোলা) বলেন, ভক্তরা শুধুমাত্র চারদিন মায়ের রূপ দর্শন করতে পারতেন। তাই ভক্তদের ইচ্ছে ছিল, যদি মায়ের মূর্তি বসানো যায়। আমরা মন্দির কমিটির তরফে মায়ের রুপোর একটি অবয়ব তৈরি করেছিলাম। আজ প্রতিস্থাপন হয়েছে। এখন থেকে সারা বছর ওই অবয়ব থাকবে। মিষ্টান্ন ভোগ এবং যজ্ঞ হয়েছে। রাতে ভক্তিমূলক সঙ্গীতের অনুষ্ঠানও হয়েছে। এদিন সকাল থেকেই সাজো সাজো রব ছিল মন্দির চত্বরে। বেলা গড়াতেই ভিড় বাড়তে থাকে মন্দিরে।
মন্দির কমিটির ম্যানেজার মানস রঞ্জন চৌধুরীর কথায়, পরিকল্পনা অনেকদিন ধরেই ছিল। এক বছর আগে এই অবয়ব তৈরি হয়েছিল। তিন কেজি রুপো দিয়ে ওই অবয়ব তৈরি করানো হয়েছে। এবার ভক্তদের আর মন খারাপ হবে না।
মন্দির কমিটি সূত্র খবর, তিন কেজির অবয়বে সোনার কানের দুল, টিকলি, নাকের নথ পরানো হয়েছে। এছাড়াও বেনারসি শাড়ি পরানো হয়েছে। এদিন ওই মুখমণ্ডলে পুজো দিতে বহু ফুলের মালা পরানো হয়। মায়ের নতুন রূপ দেখতে সকাল থেকেই বহু ভক্ত ভিড় করেন।
বালুরঘাট থেকে আসা ভক্ত গোবিন্দ সূত্রধর বলেন, সারাবছর মন্দিরে প্রতিমা ছাড়াই পুজো দিতাম। খুব সুন্দর অবয়ব তৈরি হয়েছে। দেখলেই প্রাণ জুড়িয়ে যাচ্ছে। খুব ভালো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
প্রত্যেক বছর রাস পূর্ণিমার পরের শুক্রবার বোল্লা রক্ষাকালীর পুজো হয়। চারদিন বিশাল মেলা অনুষ্ঠিত হয়। যা, উত্তরবঙ্গের দ্বিতীয় বৃহত্তম মেলা হিসেবেই পরিচিত। ওই মেলায় দেশের নানা প্রান্ত থেকে ভক্তরা আসেন মায়ের রূপ দর্শন করতে। এমনকী বাংলাদেশি ভক্তদেরও আনাগোনা বাড়ে ওই সময়। মেলার সময়কাল ছাড়াও সারা বছর বহুভক্ত পুজো দিতে আসতেন। তাঁরা মায়ের রূপ দর্শন করতে পারতেন না। এবার প্রত্যেকেই সারাবছর মায়ের দর্শন করতে পারবেন। বোল্লা মায়ের মন্দির। - নিজস্ব চিত্র।