• মোহিতনগরে পাশাপাশি দুই স্কুলে দুষ্কৃতীদের হানা
    বর্তমান | ২৮ এপ্রিল ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: কম্পিউটার, ল্যাপটপ সহ দামী জিনিসপত্র সব যেমন ছিল, তেমনই রয়েছে। অথচ আলমারি ভেঙে তছনছ করা হয়েছে যাবতীয় নথিপত্র। তাও আবার একটি-দু’টি নয়, পাশাপাশি দু’টি স্কুল মিলিয়ে ভাঙা হয়েছে ২২টি আলমারি! জলপাইগুড়ির মোহিতনগর কলোনি তারাপ্রসাদ বয়েজ হাইস্কুল এবং গার্লস হাইস্কুলে একইরাতে দুষ্কৃতী হানার ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। যেভাবে একের পর এক আলমারি ভেঙে কাগজপত্র বের করে মেঝেয় ফেলে ছড়ানো ছিটানো হয়েছে, তাতে কোনও গুরুত্বপূর্ণ নথি লোপাটের চেষ্টার উদ্দেশ্যে ওই দুষ্কৃতী হানা হতে পারে বলে সন্দেহ স্কুল কর্তৃপক্ষের। 

    রবিবার সকালে বিষয়টি নজরে আসতেই শোরগোল পড়ে যায় এলাকায়। খবর পেয়ে দ্রুত চলে আসেন দু’টি স্কুলেরই প্রধান শিক্ষক ও প্রধান শিক্ষিকা সহ সহ শিক্ষক এবং বিদ্যালয় পরিচালন সমিতির প্রতিনিধিরা। আসে পুলিস। স্থানীয় অরবিন্দ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান রাজেশ মণ্ডলও স্কুলে এসে দুষ্কৃতী হানার চিহ্ন দেখে তাজ্জব হয়ে যান। পুলিস প্রশাসনের কাছে ঘটনার উপযুক্ত তদন্ত দাবি করেন তিনি। 

    জলপাইগুড়ির কোতোয়ালি থানার আইসি সঞ্জয় দত্ত বলেন, পুলিস ঘটনার তদন্ত চালাচ্ছে। কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। একটি স্কুল থেকে কিছু টাকা চুরি গিয়েছে। আর কিছু খোয়া গিয়েছে কি না খতিয়ে দেখছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। 

    শনিবার রাতে মোহিতনগরের যে দু’টি স্কুলে দুষ্কৃতী হানার ঘটনা ঘটেছে, এর মধ্যে বয়েজ হাইস্কুলে সিসি ক্যামেরা রয়েছে। যদিও দুষ্কৃতীরা একটি ক্যামেরা ভেঙে দেয়। অন্য ক্যামেরায় কয়েক সেকেন্ডের ফুটেজ মিলেছে। তাতে দু’জনকে স্কুলে ঢুকতে দেখা গিয়েছে বলে স্কুল সূত্রে খবর। বয়েজ স্কুলে একজন নৈশপ্রহরী থাকেন। কিন্তু এত বড় ঘটনা ঘটে গেলেও তিনি কিছু টের পেলেন না কেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। পুলিস তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। বয়েজ স্কুলে দুষ্কৃতীরা পিছনের জানালার গ্রিল ভেঙে ঢুকলেও পাশের গার্লস স্কুলে সামনের লোহার গেট কেটে ঢুকেছে। ওই স্কুলের অফিস রুম ও প্রধান শিক্ষিকার রুমে ১২টি আলমারি ভেঙে যাবতীয় কাগজপত্র তছনছ করে বেরিয়ে যাওয়ার সময় দুষ্কৃতীরা আবার প্রতিটি ঘরের দরজা বন্ধ করে দিয়ে যায়, যাতে বাইরে থেকে কিছু বোঝা না যায়। গার্লস স্কুলের মেন গেট তালা ঝোলানো অবস্থায় এমনভাবে বন্ধ ছিল, দূর থেকে দেখে বোঝার উপায় নেই যে, ওই গেট কেটে দুষ্কৃতীরা ভিতরে ঢুকেছে! 

    মোহিতনগর কলোনি তারাপ্রসাদ বয়েজ হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক মৃত্যুঞ্জয় দে সরকার বলেন, অফিস রুম ও আমার ঘর মিলিয়ে দশটি আলমারি ভেঙে সব নথিপত্র তছনছ করা হয়েছে। কম্পিউটার, মাইক্রোস্কোব সব রয়েছে। শুধু আলমারি ভেঙে নথিপত্র হাতড়ানো হয়েছে। এর থেকেই আমাদের আশঙ্কা, কোনও নথি লোপাট করতেই হয়তো হানা দিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। 

    মোহিতনগর কলোনি তারাপ্রসাদ গার্লস হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষিকা কোয়েলি রায় বর্মন বলেন, বয়েজ স্কুলে চুরির খবর পেয়ে নিজের স্কুল দেখতে আসি। তখনই আমার স্কুলেও দুষ্কৃতী হানার বিষয়টি নজরে আসে। বয়েজ স্কুলের মতোই একইভাবে আমাদের স্কুলেও ১২টি আলমারি ভেঙে সব নথি তছনছ করা হয়েছে। কিছু টাকা ছিল, সেটা পাওয়া যাচ্ছে না।  তারাপ্রসাদ গার্লস  স্কুলের আলমারি তছনছ করেছে দুষ্কৃতীরা। - নিজস্ব চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)