নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: শিলিগুড়ি শহরে অফিস। রয়েছে বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় কেন্দ্র বা ফরেক্সের বৈধ লাইসেন্স। এই ব্যবসার আড়ালেই তিনি হাওলার কারবার চালাতেন বলে অভিযোগ। তবে শনিবার মাটিগাড়ার তুম্বাজোতের বাড়ি ও হিলকার্ট রোডের দু’টি অফিসে কেন্দ্রীয় রাজস্ব গোয়েন্দা বিভাগের (ডিআরআই) আধিকারিকরা হানা দিতেই চক্ষু চড়কগাছ প্রতিবেশী থেকে অফিস কর্মীদের।
লেনদেনে ব্যাপক অসঙ্গতি মেলায় রাতেই গ্রেপ্তার করা হয় ব্যবসায়ী শ্যামবাবু প্রসাদকে। রবিবার ধৃতকে শিলিগুড়ি মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক তাঁর জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।
ডিআরআই সূত্রে জানা গিয়েছে, বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময়ের আড়ালে হাওলাচক্র চালানোর অভিযোগে শ্যামবাবুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দপ্তরের আধিকারিকরা জানতে পারেন, শ্যামবাবু প্রসাদ তাঁর পারমিটের তুলনায় অনেক বেশি পরিমাণে বৈদেশিক মুদ্রা নিজের কাছে জমা করে রেখেছেন, যা সম্পূর্ণ অবৈধ। সেই খবরের ভিত্তিতেই তাঁর বাড়ি এবং অফিসে শনিবার একযোগে অভিযান চালান কেন্দ্রীয় রাজস্ব গোয়েন্দা বিভাগের আধিকারিকরা। ওই ব্যবসায়ীর বাড়ি থেকে তিন লক্ষ ভারতীয় টাকা এবং বিভিন্ন দেশের ১০৪৩টি মুদ্রা উদ্ধার হয়। পাশাপাশি দু’টি অফিস থেকে ভারতীয় ৩৭ লক্ষ ৬ হাজার ২০০ টাকা এবং ৬০৫টি বৈদেশিক মুদ্রা পাওয়া যায় বলে ডিআরআই সূত্রে দাবি। উদ্ধার হয়েছে থাইল্যান্ড, ব্রিটেন, হংকং, সিঙ্গাপুর, সৌদি আরব, কাতার, অস্ট্রেলিয়া, মালয়েশিয়া, কানাডা, বাংলাদেশ, কুয়েত প্রভৃতি দেশের মুদ্রা। বৈদেশিক মুদ্রা ও ভারতীয় টাকা মিলিয়ে মোট ১ কোটি ১৪ লক্ষ ৫৩ হাজার ২৬২ টাকা উদ্ধার করতে সক্ষম হয় ডিআরআই।
ব্যবসায়ীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ডিআরআইয়ের আধিকারিকরা জানতে পারেন বৈদেশিক মুদ্রাগুলি নেপাল হয়ে তাঁর কাছে হাওলার মাধ্যমে পৌঁছায় বলে অভিযোগ।
ডিআরআইয়ের আধিকারিকরা এই চক্রের সঙ্গে জড়িত থাকা বেশকিছু নাম জেনেছেন। তাদের খোঁজ শুরু হয়েছে।
ডিআরআইয়ের আইনজীবী রতন বণিক বলেন, ধৃতকে গ্রেপ্তার করে এদিন আদালতে পেশ করলে বিচারক তাঁর তিন দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে কেন্দ্রীয় রাজস্ব গোয়েন্দা বিভাগ। বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময়ের আড়ালে ধৃত ব্যক্তি হাওলার কারবার যুক্ত এই তথ্য হাতে পেয়েই ডিআরআইয়ের গোয়েন্দারা তাঁকে গ্রেপ্তার করেন। আদালতে ধৃত শ্যামবাবু প্রসাদ। - নিজস্ব চিত্র।