নিজস্ব প্রতিনিধি, বহরমপুর: গরমে নাজেহাল অবস্থা মুর্শিদাবাদবাসীর। তাপের দাপটে রবিবার বেলা বাড়তেই রাস্তাঘাট সব শুনশান হয়ে যায়। বাজারেও ভিড় কমতে থাকে। দুপুরে আকাশ মেঘলা হওয়ায় গুমোট গরমে অস্বস্তি আরও বাড়ে। তপ্ত হওয়ায় শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে কষ্ট হয় পথচারীদের। বাতাসে আপেক্ষিক আর্দ্রতা অত্যন্ত বেশি থাকায় গলদঘর্ম অবস্থা সকলের। শনিবার পার্শ্ববর্তী বেশ কয়েকটি জেলায় কালবৈশাখীর দাপটে ঝড়বৃষ্টি হলেও মুর্শিদাবাদে ঝড়বৃষ্টি হয়নি। গত এক সপ্তাহ ধরে তীব্র দাবদাহ অবস্থার কোনও পরিবর্তন হয়নি। এক নাগাড়ে গরম বেড়ে যাওয়ায় সমস্যায় পড়েছেন সাধারণ মানুষ।
রাস্তায় কর্তব্যরত পুলিসকর্মীরা, বারবার চোখে মুখে জল ছিটিয়েও স্বস্তি পাচ্ছিলেন না। এদিন বহরমপুর শহরের তাপমাত্রা পৌঁছে যায় ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।
তবে বাতাসে আপেক্ষিক আর্দ্রতার পরিমাণ বেশি থাকায় চরম ভোগান্তি হয় চলতি মানুষের। মাঠে কাজ করতে গিয়েও চাষিদের অবস্থা শোচনীয়। দোকান বাজারেও লোকজন কম ছিল।
বহরমপুরের এক ব্যবসায়ী অভিজিৎ চক্রবর্তী বলেন, গরমের জন্য দোকানে বিক্রি একেবারে কমে গিয়েছে। দুপুরের দিকে গোটা বাজার খাঁ খাঁ করছে। সন্ধ্যার পর সামান্য কিছু ক্রেতা বাজারে আসছে।
তবে এত গরমে অধিকাংশ মানুষই অস্বস্তিতে আছে। টানা এক সপ্তাহ ধরে কোনও বৃষ্টি না হওয়ায় সমস্যা আরও বেড়েছে। বহরমপুরের বাসিন্দা তপন মুখোপাধ্যায় বলেন, এখন গরম কালে সকালের দিকে বাজারে যাচ্ছি। তবে এদিন দশটায় বাজার থেকে ফেরার সময় নাজেহাল অবস্থা আমাদের।
এদিন রোদ একটু কম হলেও ঘামে ভিজে গিয়েছে পুরো শরীর। রঘুনাথগঞ্জের বাসিন্দা ইশরাফিল শেখ বলেন, বাড়িতে জিনিসপত্র ডেলিভারির কাজ করি। সকাল থেকেই বাইরে বাইকে করে রোদে রোদে ঘুরতে হয়। বেলা বারোটা থেকে দুপুর তিনটে পর্যন্ত রোদের তাপে কাজ বন্ধ রাখতে হচ্ছে। তার বদলে রাত পর্যন্ত ডেলিভারি দিতে হচ্ছে। গত কয়েকদিন বৃষ্টি না হওয়ায় গরম লাগাতারভাবে বাড়ছে। তাতে সমস্যা বেড়েছে।
সাগরপাড়ার পাটচাষি মদন শেখ বলেন, সকালেই জমির কাজ সেরে নিচ্ছি। তবে এদিন পাট জমিতে ঘাস নিড়ানোর কাজ সারতেই সাড়ে এগারোটা বেজে যায়। ওইসময় খুব অসুস্থ বোধ করছিলাম। জল খেয়ে গাছতলায় বসে কিছুক্ষণ জিরিয়ে তারপর বাড়ি ফিরেছি।
বহরমপুরে মোহনা বাসস্ট্যান্ডে বাসের মধ্যে বসে থাকা এক যাত্রী বলেন, এগারোটা বাজতেই রাস্তাঘাট সমস্ত ফাঁকা হয়ে গিয়েছে। বহরমপুর থেকে বাসে ফরাক্কায় যেতে হবে। গোটা জাতীয় সড়কে কোনও গাছ নেই, ছায়া নেই।
যাওয়ার আগেই বাসে বসে পুরো শরীর ভিজে যাচ্ছে। এই আবহাওয়ায় কিছুতেই সুস্থ থাকা যাচ্ছে না। ছাতা সঙ্গে নিয়েছি। কিন্তু এই তীব্র গরমে বাসে যাতায়াত করতে নাজেহাল অবস্থা আমাদের।