সংস্থার ২ কোটি আত্মসাৎ করে মা ও বান্ধবীর অ্যাকাউন্টে, ধৃত কর্মচারী
বর্তমান | ২৮ এপ্রিল ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: এক বছর ধরে ধাপে ধাপে কোম্পানির টাকা আত্মসাৎ করেছিল ওই অফিসেরই এক অ্যাকাউন্ট্যান্ট। সেই টাকা ট্রান্সফার করেছিল মা আর বান্ধবীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। সেই দু’টি অ্যাকাউন্ট থেকে শেয়ার মার্কেটে চলেছে দেদার ট্রেডিং। সব মিলিয়ে প্রায় ২ কোটি ১৩ লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠল শেক্সপিয়ার সরণি থানা এলাকার একটি অফিসে। কোম্পানির লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে ওই অ্যাকাউন্ট্যান্টকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিস। ধৃতের নাম অমিত কেডিয়া। রবিবার তাঁকে আদালতে পেশ করা হলে বিচারক পুলিস হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।
পুলিস সূত্রে খবর, প্রায় চার বছর ধরে ক্যামাক স্ট্রিটের একটি বহুজাতিক সংস্থায় অ্যাকাউন্ট্যান্ট হিসেবে কাজ করত ওই যুবক। ২০২৪-’২৫ অর্থবর্ষের শেষে কোম্পানির অডিটে ধরা পড়ে টাকা লোপাটের ঘটনা। গত এক বছরে কোম্পানির আয়ের প্রায় বিপুল অংশ গায়েব হয়েছে। সব মিলিয়ে তার পরিমাণ ২ কোটি ১৩ লক্ষ টাকা। কোম্পানির ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিমাসে একটু একটু করে তোলা হয়েছে ওই টাকা। কিন্তু, সেই টাকা সংস্থার কোনও কাজে লাগেনি। স্বাভাবিকভাবে কোম্পানির অ্যাকাউন্ট্যান্ট অমিত কেডিয়া প্রশ্নের মুখে পড়েন ঊর্ধ্বতন কর্তাদের। জেরায় অভিযুক্ত টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করে নিয়েছে।
এই বিপুল পরিমাণ টাকা সে কোথায় রেখেছে? বহুজাতিক সংস্থার অভ্যন্তরীণ তদন্ত বলছে, কোম্পানির অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তোলার ক্ষেত্রে কাজে লাগানো হয়েছে অমিতের সই ও ফিঙ্গারপ্রিন্ট। সেই টাকা ঢুকেছে দু’টি অ্যাকাউন্টে। কার অ্যাকাউন্ট সেগুলি? কর্তাদের প্রশ্নে অমিত জানায়, এই দু’টি অ্যাকাউন্ট হল তার মা ও বান্ধবীর। ওই টাকা বিনিয়োগ হয়েছে শেয়ার মার্কেটে। গায়েব হওয়া টাকা ফেরত চায় কোম্পানি। কিন্তু, অমিত সেই টাকা ফেরত দিতে না পারায় শেক্সপিয়র সরণি থানার দ্বারস্থ হয় সংস্থা। লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু করে পুলিস। তদন্তে নেমে শনিবার সকালে পার্ক স্ট্রিট এলাকা থেকে অভিযুক্তকে পাকড়াও করে পুলিস। লালবাজার সূত্রে খবর, গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কীভাবে এবং কবে থেকে টাকা তুলেছেন ওই যুবক, সবটাই তদন্তসাপেক্ষ।