এই সময়: কলকাতায় ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রাতের তাপমাত্রা ২৮.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে সাড়ে চার ডিগ্রি সেলসিয়াসেরও বেশি কমে রবিবার ভোরে ২৩.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে গিয়ে ঠেকল। শনিবার রাতের কালবৈশাখী ঝড় এবং সঙ্গের বৃষ্টির সৌজন্যেই এই পরিস্থিতি।
ক্রমশ উত্তপ্ত হতে থাকা রাজ্যের পশ্চিম প্রান্ত ও বঙ্গোপসাগর থেকে ঢুকে আসা জলীয় বাষ্প শনিবার রাত থেকেই দক্ষিণবঙ্গে কালবৈশাখীর পরিস্থিতি যে তৈরি করতে চলেছে, এমন পূর্বাভাস আগেই দিয়েছিল হাওয়া অফিস।
সেই পূর্বাভাস মিলে গেল অক্ষরে অক্ষরে। শনিবার রাতে কলকাতা পেয়ে গেল মরশুমের প্রথম কালবৈশাখী। আর তার পর রবিবার দুপুরে হাওয়া অফিস জানিয়ে দিল, শুক্রবার পর্যন্ত— এক রকম সপ্তাহ জুড়েই দক্ষিণবঙ্গের প্রতিটি জেলায় বজ্রবিদ্যুৎ–সহ বৃষ্টির সম্ভাবনা খুব বেশি।
আবহাওয়া বিজ্ঞানের মতে, কোনও জায়গায় বাতাসের গতি যদি ৪৫ কিলোমিটার বা তার বেশি থাকে এবং টানা অন্তত এক মিনিট যদি সেই গতি বজায় থাকে, তা হলে তাকে কালবৈশাখী বলা যায়।
হাওয়া অফিস জানিয়েছে, শনিবার রাতে আলিপুরে বাতাসের গতি প্রতি ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৬২ কিলোমিটার পর্যন্ত উঠেছিল। এক মিনিটের বেশি সময় স্থায়ী হয়েছিল ওই গতি। তার জন্যই তাকে কালবৈশাখীর তকমা দেওয়া হয়েছে। আলিপুরের পাশাপাশি দমদমে বাতাসের সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় ৪৬ কিলোমিটার উঠে গিয়েছিল বলে সেখানেও কালবৈশাখী ঘোষণা করা হয়েছে।
দক্ষিণবঙ্গের অন্য জেলাগুলোতেও শনিবার ঘণ্টায় ৩০–৪০ কিলোমিটার গতিতে দমকা বাতাস এবং বজ্রবিদ্যুৎ–সহ বৃষ্টির দেখা মিলেছিল। তার প্রভাবেই ম্যাজিকের মতোই গায়েব হয়ে যায় তাপপ্রবাহের অসহ্য অনুভূতি। হাওয়া অফিস জানাচ্ছে, আজ, সোমবার পূর্ব বর্ধমান ও পশ্চিম মেদিনীপুরের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষিপ্ত ভাবে ৭–১১ সেন্টিমিটার পর্যন্ত ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
এই দুই জেলায় তাই আজ জারি করা হয়েছে কমলা সতর্কতা। তা ছাড়া, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, পশ্চিম বর্ধমান, ঝাড়গ্রাম ও হুগলিতেও বজ্রবিদ্যুৎ–সহ বৃষ্টির কমলা সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
আজ, সোমবার উত্তরবঙ্গেরও দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ারের মতো জেলাগুলোয় বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। এই তিন জেলায় বিক্ষিপ্ত ভাবে ৭০ থেকে ১১০ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টির সম্ভাবনা শুনিয়ে রেখেছেন আবহবিদরা। বজ্রবিদ্যুৎ–সহ বৃষ্টির জেরে আগামী তিন–চার দিন তাপমাত্রা ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত কমতে পারে বলে মনে করছে হাওয়া অফিস। তারা জানিয়েছে, সপ্তাহের বাকি দিনগুলো উত্তর ও দক্ষিণ— দুই বঙ্গেই বিক্ষিপ্ত ভাবে ঝড়–বৃষ্টির পরিবেশ বজায় থাকবে।